প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্য নিয়ে আগামী দশ বছরের জন্য ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একটি প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। এ চুক্তি সম্পাদিত হয় মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথ এবং ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের মধ্যে বৈঠকের পর। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হেগসেথ এক্স-এ বলেন, ‘এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে সমন্বয়, তথ্য বিনিময় এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বাড়াবে, পাশাপাশি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও প্রতিরোধ ক্ষমতাকে জোরদার করবে।’ ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, ‘এটি আমাদের ক্রমবর্ধমান কৌশলগত ঐক্য এবং অংশীদারিত্বের নতুন যুগের সূচনা করবে। প্রতিরক্ষা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মূল ভিত্তি। স্বাধীন, ন্যায়সঙ্গত ও নিয়মভিত্তিক ইন্দো-প্যাসিফিক এলাকা নিশ্চিত করতে আমাদের অংশীদারিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো তখন যখন দুই দেশ বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য আলোচনা চালাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারতীয় পণ্যের উপর মোট ৫০% শুল্ক আরোপের কারণে দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক কিছুটা উত্তেজনার মধ্যে রয়েছে। পর্যবেক্ষক সংস্থা ইউরেশিয়া গ্রুপের প্রমিত পাল চৌধুরী বলেন, ‘চুক্তিটি মূলত জুলাই-আগস্টে চূড়ান্ত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত নিরসনের জন্য ট্রাম্পের বক্তব্যের কারণে বিলম্ব হয়। তিনি বলেন, নতুন চুক্তির ফলে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে যোগাযোগ সহজ হয়েছে, ভারতের জন্য প্রযুক্তি পাওয়া সহজ হয়েছে এবং প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর পথ সুগম হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্কিন সফরে প্রতিরক্ষা আলোচনা ছিল মূল বিষয়। তখন ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ভারত মার্কিন থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম কিনবে, যা ভবিষ্যতে ভারতকে এফ-৩৫ স্টিলথ যুদ্ধবিমান দেওয়ার পথও খুলে দিতে পারে। ভারতের অন্যতম বড় অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ রাশিয়া। তবে সরবরাহ কমে আসছে, কারণ ভারত অন্য দেশের দিকে ঝুঁকছে এবং দেশের ভেতরেই অস্ত্র উৎপাদনের ক্ষমতা বাড়াতে চাইছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভারত যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল, জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার সম্ভাবনা বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে। দুই দেশ এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা করছে, যা নভেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার লক্ষ্য রয়েছে।