, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

বেলজিয়ামের নিরাপত্তায় যুক্তরাজ্যের সামরিক সহায়তা

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৯:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫
  • / ৪৮ বার পড়া হয়েছে

বেলজিয়ামের আকাশসীমায় সন্দেহভাজন রুশ ড্রোন অনুপ্রবেশের ঘটনার প্রেক্ষিতে দেশের নিরাপত্তা 강화 করতে যুক্তরাজ্য সহায়তা পাঠিয়েছে। রোববার ব্রিটেনের সেনাপ্রধান স্যার রিচার্ড নাইটন এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, গত সপ্তাহে বেলজিয়ান সেনাবাহিনী সাহায্য চেয়ে অনুরোধ করেছিল। তারই ফলশ্রুতিতে যুক্তরাজ্য থেকে সরঞ্জাম ও সেনা সদস্য পাঠানো শুরু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে ব্রাসেলসের জাভেনটেম বিমানবন্দরের কাছাকাছি এলাকায় ড্রোন দেখা গেলে বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। একই সময়ে আশপাশের আরও কয়েকটি স্থানে, এমনকি একটি সামরিক ঘাঁটিতেও ড্রোনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। নাইটন বলেন, এই ড্রোনগুলো রাশিয়া থেকে পাঠানো কিনা তা নিশ্চিত নয়, তবে মস্কোর নির্দেশে পরিচালিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জন হিলি বলেন, ‘যখন হাইব্রিড হুমকি বাড়ছে, তখন আমাদের মূল শক্তি হলো ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং একসঙ্গে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ও আকাশসীমা রক্ষা করা।’ বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, রয়্যাল এয়ার ফোর্সের ২ নম্বর ফোর্স প্রোটেকশন উইং এই অভিযানে অংশ নিতে পারে। ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয় করে যুক্তরাজ্য বেলজিয়ামকে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে। এর আগে জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও ড্রোনবিরোধী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বেলজিয়ামকে সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে। ড্রোনের এই ঘটনায় ব্রাসেলসের এয়ারলাইন্সের প্রায় তিন হাজার যাত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সংস্থাটি জানিয়েছে যে ফ্লাইট বাতিল ও রুট পরিবর্তনের কারণে তাদের বড় আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। যদিও জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বরিস পিস্তোরিয়াস এবং বেলজিয়ান নিরাপত্তা সংস্থা রাশিয়ার সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, তবে বেলজিয়ামের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী থিও ফ্রাঙ্কেন জানিয়েছেন, এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমরা ভাবছিলাম, সামরিক ঘাঁটির উপর উড়ে যাওয়া ড্রোনগুলো আমাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। কিন্তু এখন এটা ইউরোপের বহু দেশের সাধারণ অবকাঠামোর জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছে।’ স্যার রিচার্ড নাইটন বলেন, ‘বর্তমানে ইউরোপের সবচেয়ে বড় হুমকি হলো রাশিয়া। ইউক্রেনে তাদের অবৈধ আক্রমণ যুদ্ধের নির্মমতা স্পষ্ট করে তুলেছে।’ তিনি আরও জানান, যুক্তরাজ্যে রাশিয়ার নাশকতা ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে এবং এই ধরনের হাইব্রিড যুদ্ধ মোকাবিলায় দেশকে আরও শক্তিশালী হতে হবে। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা খাতের ছায়ামন্ত্রী জেমস কার্টলিজ এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘বর্তমানে হুমকির মাত্রা বাড়ছে, তাই ন্যাটোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা জরুরি।’ তবে তিনি সরকারের প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়েও সমালোচনা করেছেন। যুক্তরাজ্য ঘোষণা করেছে, ২০২৭ সালের এপ্রিল থেকে প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির ২.৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে এবং পরবর্তী সময়ে তা ৩ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে—বিশেষ করে সুইডেন, নরওয়ে ও ডেনমার্কে—সম্প্রতি কয়েকটি ড্রোন অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে বিমান চলাচলে বড় ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। যদিও রাশিয়া এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অস্বীকার করেছে। পিস্তোরিয়াস জানিয়েছেন, এসব ঘটনার পেছনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত—রাশিয়া থেকে জব্দ করা সম্পদ ইউক্রেনের সহায়তায় ব্যবহার করার চিন্তা—ও কারণ হতে পারে। অন্যদিকে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান ও আক্রমণাত্মক ড্রোন পূর্ব ইউরোপের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। এরই প্রেক্ষিতে ন্যাটো পূর্ব সীমান্তে প্রতিরক্ষা জোরদার করতে যুক্তরাজ্য সম্প্রতি পোল্যান্ডে আরএএফ টাইফুন যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে। সূত্র— বিবিসি


প্রিন্ট

নিউজটি শেয়ার করুন

বেলজিয়ামের নিরাপত্তায় যুক্তরাজ্যের সামরিক সহায়তা

আপডেট সময় ০৯:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫

বেলজিয়ামের আকাশসীমায় সন্দেহভাজন রুশ ড্রোন অনুপ্রবেশের ঘটনার প্রেক্ষিতে দেশের নিরাপত্তা 강화 করতে যুক্তরাজ্য সহায়তা পাঠিয়েছে। রোববার ব্রিটেনের সেনাপ্রধান স্যার রিচার্ড নাইটন এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, গত সপ্তাহে বেলজিয়ান সেনাবাহিনী সাহায্য চেয়ে অনুরোধ করেছিল। তারই ফলশ্রুতিতে যুক্তরাজ্য থেকে সরঞ্জাম ও সেনা সদস্য পাঠানো শুরু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে ব্রাসেলসের জাভেনটেম বিমানবন্দরের কাছাকাছি এলাকায় ড্রোন দেখা গেলে বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। একই সময়ে আশপাশের আরও কয়েকটি স্থানে, এমনকি একটি সামরিক ঘাঁটিতেও ড্রোনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। নাইটন বলেন, এই ড্রোনগুলো রাশিয়া থেকে পাঠানো কিনা তা নিশ্চিত নয়, তবে মস্কোর নির্দেশে পরিচালিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জন হিলি বলেন, ‘যখন হাইব্রিড হুমকি বাড়ছে, তখন আমাদের মূল শক্তি হলো ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং একসঙ্গে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ও আকাশসীমা রক্ষা করা।’ বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, রয়্যাল এয়ার ফোর্সের ২ নম্বর ফোর্স প্রোটেকশন উইং এই অভিযানে অংশ নিতে পারে। ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয় করে যুক্তরাজ্য বেলজিয়ামকে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে। এর আগে জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও ড্রোনবিরোধী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বেলজিয়ামকে সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে। ড্রোনের এই ঘটনায় ব্রাসেলসের এয়ারলাইন্সের প্রায় তিন হাজার যাত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সংস্থাটি জানিয়েছে যে ফ্লাইট বাতিল ও রুট পরিবর্তনের কারণে তাদের বড় আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। যদিও জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বরিস পিস্তোরিয়াস এবং বেলজিয়ান নিরাপত্তা সংস্থা রাশিয়ার সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, তবে বেলজিয়ামের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী থিও ফ্রাঙ্কেন জানিয়েছেন, এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমরা ভাবছিলাম, সামরিক ঘাঁটির উপর উড়ে যাওয়া ড্রোনগুলো আমাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। কিন্তু এখন এটা ইউরোপের বহু দেশের সাধারণ অবকাঠামোর জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছে।’ স্যার রিচার্ড নাইটন বলেন, ‘বর্তমানে ইউরোপের সবচেয়ে বড় হুমকি হলো রাশিয়া। ইউক্রেনে তাদের অবৈধ আক্রমণ যুদ্ধের নির্মমতা স্পষ্ট করে তুলেছে।’ তিনি আরও জানান, যুক্তরাজ্যে রাশিয়ার নাশকতা ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে এবং এই ধরনের হাইব্রিড যুদ্ধ মোকাবিলায় দেশকে আরও শক্তিশালী হতে হবে। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা খাতের ছায়ামন্ত্রী জেমস কার্টলিজ এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘বর্তমানে হুমকির মাত্রা বাড়ছে, তাই ন্যাটোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা জরুরি।’ তবে তিনি সরকারের প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়েও সমালোচনা করেছেন। যুক্তরাজ্য ঘোষণা করেছে, ২০২৭ সালের এপ্রিল থেকে প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির ২.৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে এবং পরবর্তী সময়ে তা ৩ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে—বিশেষ করে সুইডেন, নরওয়ে ও ডেনমার্কে—সম্প্রতি কয়েকটি ড্রোন অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে বিমান চলাচলে বড় ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। যদিও রাশিয়া এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অস্বীকার করেছে। পিস্তোরিয়াস জানিয়েছেন, এসব ঘটনার পেছনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত—রাশিয়া থেকে জব্দ করা সম্পদ ইউক্রেনের সহায়তায় ব্যবহার করার চিন্তা—ও কারণ হতে পারে। অন্যদিকে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান ও আক্রমণাত্মক ড্রোন পূর্ব ইউরোপের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। এরই প্রেক্ষিতে ন্যাটো পূর্ব সীমান্তে প্রতিরক্ষা জোরদার করতে যুক্তরাজ্য সম্প্রতি পোল্যান্ডে আরএএফ টাইফুন যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে। সূত্র— বিবিসি


প্রিন্ট