, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

হৃদরোগে আক্রান্ত সন্তানকে বাঁচাতে সহায়তা চান জোসনা বেগম

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৮:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
  • / ২৬ বার পড়া হয়েছে

চোখে দৃষ্টি নেই, তবু মাতৃ হৃদয়ে সন্তানের জীবন রক্ষার অদম্য আকাঙ্ক্ষা। শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দী গ্রামের পশ্চিম আটপাড়ার অন্ধ নারী জোসনা বেগম বর্তমানে মানবতার এক অনন্য উদাহরণ। অন্ধত্ব ও দারিদ্র্যতার ভারে নুয়ে পড়লেও সন্তানকে বাঁচানোর জন্য তিনি কখনো হাল ছাড়েননি। দুই বছর আগে ভয়ংকর ব্রেনস্ট্রোকে তার দুই চোখের দৃষ্টি হারান জোসনা। এরপর থেকে তার জীবনে অন্ধকারের গভীরতা আরও বৃদ্ধি পায়। সেই অন্ধকার আরও ঘন হয় যখন মাত্র ছয় দিনের শিশু সন্তান আব্দুল্লাহকে হাসপাতাল থেকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। কিছু দেখার ক্ষমতা না থাকলেও তিনি কেবল সন্তানের কান্নার শব্দ শুনেছিলেন। পরে অপহরণকারীরা শিশুটিকে ঘুমের ইনজেকশন দেয় যাতে সে চুপ থাকে। বাবার সম্পত্তি বিক্রিসহ মানুষের সাহায্যে জোসনা সন্তানকে অপহরণকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করেন। তবে অতিরিক্ত ঘুমের ইনজেকশনের ফলে ছোট শিশু আব্দুল্লাহর হৃদযন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়ে। বর্তমানে সে গুরুতর হৃদরোগে আক্রান্ত। সন্তানের চিকিৎসার জন্য ভিক্ষা করে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা সংগ্রহ করেন জোসনা। এর ফলে শিশুটি কিছুটা সুস্থ হয়। কিন্তু বিপদ এখনও কাটেনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য আরও চার লাখ টাকা প্রয়োজন, যা সংগ্রহ করা তার পক্ষে কষ্টসাধ্য। ২০২৩ সালে স্বামী চাঁন মিয়া দুই সন্তান রেখে নিজ জীবনের ঠিকানায় চলে যান। এরপর থেকে নিঃস্ব, অন্ধ ও অসহায় জোসনা দুই সন্তানসহ শরীয়তপুরের বিভিন্ন স্থানে দিনরাত কাটাচ্ছেন। নিজের বাবার বাড়িতেও ঠাঁই হয়নি তার। বর্তমানে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে তার সন্তান আব্দুল্লাহ। চিকিৎসকরা বলেছেন, উন্নত চিকিৎসা না পেলে শিশুটির অবস্থা আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। সন্তানকে বাঁচানোর জন্য নিজের শেষ সম্পদও বিক্রি করে দিয়েছেন জোসনা। এখন তিনি সরকারের সহায়তা ও সমাজের মানবিক মানুষের দিকে তাকিয়ে আছেন। স্থানীয়রা জানান, জোসনা ও তার অসুস্থ সন্তানের পাশে দাঁড়ানো এখন সময়ের দাবি। জোসনার দুর্দশার খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি যাচাই করে আর্থিক ও চিকিৎসা সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে।


প্রিন্ট

নিউজটি শেয়ার করুন

হৃদরোগে আক্রান্ত সন্তানকে বাঁচাতে সহায়তা চান জোসনা বেগম

আপডেট সময় ০৮:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫

চোখে দৃষ্টি নেই, তবু মাতৃ হৃদয়ে সন্তানের জীবন রক্ষার অদম্য আকাঙ্ক্ষা। শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দী গ্রামের পশ্চিম আটপাড়ার অন্ধ নারী জোসনা বেগম বর্তমানে মানবতার এক অনন্য উদাহরণ। অন্ধত্ব ও দারিদ্র্যতার ভারে নুয়ে পড়লেও সন্তানকে বাঁচানোর জন্য তিনি কখনো হাল ছাড়েননি। দুই বছর আগে ভয়ংকর ব্রেনস্ট্রোকে তার দুই চোখের দৃষ্টি হারান জোসনা। এরপর থেকে তার জীবনে অন্ধকারের গভীরতা আরও বৃদ্ধি পায়। সেই অন্ধকার আরও ঘন হয় যখন মাত্র ছয় দিনের শিশু সন্তান আব্দুল্লাহকে হাসপাতাল থেকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। কিছু দেখার ক্ষমতা না থাকলেও তিনি কেবল সন্তানের কান্নার শব্দ শুনেছিলেন। পরে অপহরণকারীরা শিশুটিকে ঘুমের ইনজেকশন দেয় যাতে সে চুপ থাকে। বাবার সম্পত্তি বিক্রিসহ মানুষের সাহায্যে জোসনা সন্তানকে অপহরণকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করেন। তবে অতিরিক্ত ঘুমের ইনজেকশনের ফলে ছোট শিশু আব্দুল্লাহর হৃদযন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়ে। বর্তমানে সে গুরুতর হৃদরোগে আক্রান্ত। সন্তানের চিকিৎসার জন্য ভিক্ষা করে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা সংগ্রহ করেন জোসনা। এর ফলে শিশুটি কিছুটা সুস্থ হয়। কিন্তু বিপদ এখনও কাটেনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য আরও চার লাখ টাকা প্রয়োজন, যা সংগ্রহ করা তার পক্ষে কষ্টসাধ্য। ২০২৩ সালে স্বামী চাঁন মিয়া দুই সন্তান রেখে নিজ জীবনের ঠিকানায় চলে যান। এরপর থেকে নিঃস্ব, অন্ধ ও অসহায় জোসনা দুই সন্তানসহ শরীয়তপুরের বিভিন্ন স্থানে দিনরাত কাটাচ্ছেন। নিজের বাবার বাড়িতেও ঠাঁই হয়নি তার। বর্তমানে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে তার সন্তান আব্দুল্লাহ। চিকিৎসকরা বলেছেন, উন্নত চিকিৎসা না পেলে শিশুটির অবস্থা আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। সন্তানকে বাঁচানোর জন্য নিজের শেষ সম্পদও বিক্রি করে দিয়েছেন জোসনা। এখন তিনি সরকারের সহায়তা ও সমাজের মানবিক মানুষের দিকে তাকিয়ে আছেন। স্থানীয়রা জানান, জোসনা ও তার অসুস্থ সন্তানের পাশে দাঁড়ানো এখন সময়ের দাবি। জোসনার দুর্দশার খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি যাচাই করে আর্থিক ও চিকিৎসা সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে।


প্রিন্ট