, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

পিইডিপি-৪ প্রকল্পে টাঙ্গাইলে অনিয়ম ও অগ্রীম বিল কেলেঙ্কারি

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৫:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
  • / ২৪ বার পড়া হয়েছে

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পিইডিপি-৪ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের নামে ব্যাপক দুর্নীতি ও অপ্রয়োজনীয় বিলের দাবী উঠেছে। শিক্ষা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সময়মতো এবং মানসম্পন্নভাবে সম্পন্ন না হলেও কিছু ঠিকাদার এলজিইডির কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে অগ্রিম অর্থের দাবি করে থাকেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। জানা গেছে, উপজেলার পাঁচটি বিদ্যালয়ে বাউন্ডারি দেয়াল, আটটিতে প্রধান শিক্ষকের কক্ষ এবং পাঁচটিতে অতিরিক্ত শ্রেণীকক্ষ নির্মাণের কাজ শুরু হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা সম্পূর্ণ হয়নি। এর পাশাপাশি, কাজের অগ্রগতি মাত্র ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ হলেও বিলের পরিমাণ ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত তুলে ধরা হয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, লাউহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনো বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ শুরু হয়নি, তবে তথ্যপত্রে দেখানো হয়েছে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ। মীর কুমুল্লীতে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দেয়াল ভেঙে পড়েছে। জাঙ্গালিয়ায় মাত্র ৩০ শতাংশ কাজ শেষ করেই ঠিকাদার নিজ দায়িত্বে চলে গেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, কাজের মান নিন্মমানের এবং কোথাও কোথাও দেয়াল নির্মাণের পরই ধসে পড়ছে, যার ফলে শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণ কাজ অর্ধসমাপ্ত থাকায় নিয়মিত পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। মীর কুমুল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিপ্লব কুমার কর্মকার বলেন, বাউন্ডারির দেয়াল শেষ হওয়ার আগেই ধসে পড়েছে, গেটও তৈরি করছে না। শিশুদের মধ্যে ভয় তৈরি হচ্ছে এবং স্কুলের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জাঙ্গালিয়ার প্রধান শিক্ষক শওকত আকবর বলেন, প্রধান শিক্ষকের কক্ষ নির্মাণে অনিয়ম হয়েছে, বারবার জানানো সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। লাউহাটির প্রধান শিক্ষক সেলিনা বেগম জানান, জমি জটিলতার কারণে কাজ শুরু হয়নি, ইউএনওকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বাউন্ডারি না থাকায় বিদ্যালয়টি ঝুঁকিতে রয়েছে। মেসার্স হৃদয় এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. রহিজ বলেন, বিভিন্ন কারণে কাজের দেরি হচ্ছে, মাটি বরাদ্দ না থাকায় দেয়াল ভেঙে পড়ছে। তবে ডিসেম্বরের মধ্যে সব কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। দেলদুয়ার উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী রুহুল আমীন বলেন, কাজের ভিত্তিতে বিল দেওয়া হয়েছে, কোন কাজ কত শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে তা তথ্য অফিসে পাওয়া যাবে। উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আহমেদ তানজীর উল্লাহ সিদ্দিকী জানান, আমার সময় অগ্রীম বিল দেওয়া হয়নি; পূর্বের কর্মকর্তা অবসরে যাওয়ার আগে সব বিল প্রদান করেছেন। কাজ বন্ধ থাকায় ঠিকাদারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। টাঙ্গাইল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, বিগত সরকারের সময় ঠিকাদাররা প্রভাব খাটিয়ে অগ্রীম বিল উত্তোলন করেছে, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সুজন সুশাসনের জন্য নাগরিক, টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক তরুণ ইউসুফ বলেন, এ ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।


প্রিন্ট

নিউজটি শেয়ার করুন

পিইডিপি-৪ প্রকল্পে টাঙ্গাইলে অনিয়ম ও অগ্রীম বিল কেলেঙ্কারি

আপডেট সময় ০৫:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পিইডিপি-৪ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের নামে ব্যাপক দুর্নীতি ও অপ্রয়োজনীয় বিলের দাবী উঠেছে। শিক্ষা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সময়মতো এবং মানসম্পন্নভাবে সম্পন্ন না হলেও কিছু ঠিকাদার এলজিইডির কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে অগ্রিম অর্থের দাবি করে থাকেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। জানা গেছে, উপজেলার পাঁচটি বিদ্যালয়ে বাউন্ডারি দেয়াল, আটটিতে প্রধান শিক্ষকের কক্ষ এবং পাঁচটিতে অতিরিক্ত শ্রেণীকক্ষ নির্মাণের কাজ শুরু হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা সম্পূর্ণ হয়নি। এর পাশাপাশি, কাজের অগ্রগতি মাত্র ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ হলেও বিলের পরিমাণ ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত তুলে ধরা হয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, লাউহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনো বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ শুরু হয়নি, তবে তথ্যপত্রে দেখানো হয়েছে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ। মীর কুমুল্লীতে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দেয়াল ভেঙে পড়েছে। জাঙ্গালিয়ায় মাত্র ৩০ শতাংশ কাজ শেষ করেই ঠিকাদার নিজ দায়িত্বে চলে গেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, কাজের মান নিন্মমানের এবং কোথাও কোথাও দেয়াল নির্মাণের পরই ধসে পড়ছে, যার ফলে শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণ কাজ অর্ধসমাপ্ত থাকায় নিয়মিত পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। মীর কুমুল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিপ্লব কুমার কর্মকার বলেন, বাউন্ডারির দেয়াল শেষ হওয়ার আগেই ধসে পড়েছে, গেটও তৈরি করছে না। শিশুদের মধ্যে ভয় তৈরি হচ্ছে এবং স্কুলের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জাঙ্গালিয়ার প্রধান শিক্ষক শওকত আকবর বলেন, প্রধান শিক্ষকের কক্ষ নির্মাণে অনিয়ম হয়েছে, বারবার জানানো সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। লাউহাটির প্রধান শিক্ষক সেলিনা বেগম জানান, জমি জটিলতার কারণে কাজ শুরু হয়নি, ইউএনওকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বাউন্ডারি না থাকায় বিদ্যালয়টি ঝুঁকিতে রয়েছে। মেসার্স হৃদয় এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. রহিজ বলেন, বিভিন্ন কারণে কাজের দেরি হচ্ছে, মাটি বরাদ্দ না থাকায় দেয়াল ভেঙে পড়ছে। তবে ডিসেম্বরের মধ্যে সব কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। দেলদুয়ার উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী রুহুল আমীন বলেন, কাজের ভিত্তিতে বিল দেওয়া হয়েছে, কোন কাজ কত শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে তা তথ্য অফিসে পাওয়া যাবে। উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আহমেদ তানজীর উল্লাহ সিদ্দিকী জানান, আমার সময় অগ্রীম বিল দেওয়া হয়নি; পূর্বের কর্মকর্তা অবসরে যাওয়ার আগে সব বিল প্রদান করেছেন। কাজ বন্ধ থাকায় ঠিকাদারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। টাঙ্গাইল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, বিগত সরকারের সময় ঠিকাদাররা প্রভাব খাটিয়ে অগ্রীম বিল উত্তোলন করেছে, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সুজন সুশাসনের জন্য নাগরিক, টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক তরুণ ইউসুফ বলেন, এ ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।


প্রিন্ট