, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

খাদ্যপণ্যের ওপর শুল্ক কমালেন ট্রাম্প

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
  • / ২৩ বার পড়া হয়েছে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে উদ্বেগ বেড়ে যাওয়ায় কফি, গরুর মাংস, কলা, কমলার রসসহ ২০০টির বেশি খাদ্যপণ্যের উপর আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহার করেছেন। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে কার্যকর হওয়া এই শুল্ক ছাড়কে ট্রাম্পের আগের অবস্থান থেকে বড় ধরনের নীতিগত পরিবর্তন হিসেবে ধরা হচ্ছে। এ বছর যে আমদানি শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল, সেগুলো মূল্যস্ফীতি বাড়াচ্ছে—এমন অভিযোগ অনেকদিন ধরেই অস্বীকার করছিলেন ট্রাম্প। তবে শুক্রবার এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, কিছু ক্ষেত্রে শুল্ক ‘দাম বাড়াতে পারে’। তার দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে এখন ‘প্রায় কোনো মূল্যস্ফীতি নেই’। সম্প্রতি ভার্জিনিয়া, নিউ জার্সি ও নিউইয়র্কের স্থানীয় নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের পরপর জয়ের ফলে খাদ্যদামের বিষয়টি আলোচনায় আসে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, আগামী বছর নিম্ন ও মধ্য-আয়ের নাগরিকদের জন্য ২ হাজার ডলারের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে, যা শুল্কের রাজস্ব থেকেই আসবে। এছাড়া আর্জেন্টিনা, ইকুয়েডর, গুয়াতেমালা ও এল সালভাদরের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তির অংশ হিসেবে এই দেশগুলোর কিছু খাদ্য ও আমদানি পণ্যের শুল্কও বাতিল করা হচ্ছে। শুক্রবার প্রকাশিত তালিকায় রয়েছে এমন সব পণ্য, যেগুলো মার্কিন পরিবারগুলো নিয়মিত কেনে এবং যেগুলোর দাম গত এক বছরে দু’অঙ্কের হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন কমলা, অ্যাসাই বেরি, কোকো, খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত রাসায়নিক, সার, এমনকি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত ওয়েফারও। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এই সব পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বা প্রক্রিয়াজাত না হওয়ায় এবং বেশ কয়েকটি বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হওয়ায় এগুলোকে শুল্কমুক্ত করা হয়েছে। গরুর মাংসের দাম যুক্তরাষ্ট্রে গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। স্টেকের দাম বেড়েছে ১৭ শতাংশ, যা তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশের গবাদিপশুর সংকটের ফলে দীর্ঘদিন ধরে গরুর মাংসের দাম বাড়ছে। কলার দাম বেড়েছে ৭ শতাংশ, টমেটোর ১ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গৃহস্থালির খাদ্যদামের গড় বৃদ্ধি ছিল ২.৭ শতাংশ। শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্তকে অনেক শিল্পসংগঠন স্বাগত জানিয়েছে। ফুড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, কফির দাম কমলে ভোক্তারা উপকৃত হবেন। তবে ইউরোপ ও যুক্তরাজ্য থেকে আসা মদপানীয়ের শুল্কছাড়ের বাইরে থাকায় আতিথেয়তা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। আরও শুল্ক পরিবর্তন হবে কি না, এ প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি প্রয়োজন হবে না। আমরা শুধু সামান্য শুল্ক কমিয়েছি।’ সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেছেন, খাদ্যদ্রব্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য তার নীতি দায়ী নয়, বরং আগের প্রশাসনের সিদ্ধান্তগুলোই এর জন্য দায়ী। তবে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, আমদানি শুল্কের প্রভাবেই খাদ্যের দাম বেড়েছে এবং আগামী বছর এই খাত আরও ব্যয়বহুল হতে পারে। মার্কিন কংগ্রেসের ওয়েজ অ্যান্ড মিনস কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট রিচার্ড নিল বলেছেন, ‘সরকার নিজেই আগুন লাগিয়েছে, এখন সেটাই নিভানোর চেষ্টা করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শুল্ক আরোপের পর থেকেই মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং উৎপাদন খাত টানা কয়েক মাস সংকুচিত হচ্ছে।’ সূত্র: রয়টার্স


প্রিন্ট

নিউজটি শেয়ার করুন

খাদ্যপণ্যের ওপর শুল্ক কমালেন ট্রাম্প

আপডেট সময় ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে উদ্বেগ বেড়ে যাওয়ায় কফি, গরুর মাংস, কলা, কমলার রসসহ ২০০টির বেশি খাদ্যপণ্যের উপর আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহার করেছেন। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে কার্যকর হওয়া এই শুল্ক ছাড়কে ট্রাম্পের আগের অবস্থান থেকে বড় ধরনের নীতিগত পরিবর্তন হিসেবে ধরা হচ্ছে। এ বছর যে আমদানি শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল, সেগুলো মূল্যস্ফীতি বাড়াচ্ছে—এমন অভিযোগ অনেকদিন ধরেই অস্বীকার করছিলেন ট্রাম্প। তবে শুক্রবার এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, কিছু ক্ষেত্রে শুল্ক ‘দাম বাড়াতে পারে’। তার দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে এখন ‘প্রায় কোনো মূল্যস্ফীতি নেই’। সম্প্রতি ভার্জিনিয়া, নিউ জার্সি ও নিউইয়র্কের স্থানীয় নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের পরপর জয়ের ফলে খাদ্যদামের বিষয়টি আলোচনায় আসে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, আগামী বছর নিম্ন ও মধ্য-আয়ের নাগরিকদের জন্য ২ হাজার ডলারের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে, যা শুল্কের রাজস্ব থেকেই আসবে। এছাড়া আর্জেন্টিনা, ইকুয়েডর, গুয়াতেমালা ও এল সালভাদরের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তির অংশ হিসেবে এই দেশগুলোর কিছু খাদ্য ও আমদানি পণ্যের শুল্কও বাতিল করা হচ্ছে। শুক্রবার প্রকাশিত তালিকায় রয়েছে এমন সব পণ্য, যেগুলো মার্কিন পরিবারগুলো নিয়মিত কেনে এবং যেগুলোর দাম গত এক বছরে দু’অঙ্কের হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন কমলা, অ্যাসাই বেরি, কোকো, খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত রাসায়নিক, সার, এমনকি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত ওয়েফারও। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এই সব পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বা প্রক্রিয়াজাত না হওয়ায় এবং বেশ কয়েকটি বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হওয়ায় এগুলোকে শুল্কমুক্ত করা হয়েছে। গরুর মাংসের দাম যুক্তরাষ্ট্রে গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। স্টেকের দাম বেড়েছে ১৭ শতাংশ, যা তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশের গবাদিপশুর সংকটের ফলে দীর্ঘদিন ধরে গরুর মাংসের দাম বাড়ছে। কলার দাম বেড়েছে ৭ শতাংশ, টমেটোর ১ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গৃহস্থালির খাদ্যদামের গড় বৃদ্ধি ছিল ২.৭ শতাংশ। শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্তকে অনেক শিল্পসংগঠন স্বাগত জানিয়েছে। ফুড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, কফির দাম কমলে ভোক্তারা উপকৃত হবেন। তবে ইউরোপ ও যুক্তরাজ্য থেকে আসা মদপানীয়ের শুল্কছাড়ের বাইরে থাকায় আতিথেয়তা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। আরও শুল্ক পরিবর্তন হবে কি না, এ প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি প্রয়োজন হবে না। আমরা শুধু সামান্য শুল্ক কমিয়েছি।’ সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেছেন, খাদ্যদ্রব্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য তার নীতি দায়ী নয়, বরং আগের প্রশাসনের সিদ্ধান্তগুলোই এর জন্য দায়ী। তবে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, আমদানি শুল্কের প্রভাবেই খাদ্যের দাম বেড়েছে এবং আগামী বছর এই খাত আরও ব্যয়বহুল হতে পারে। মার্কিন কংগ্রেসের ওয়েজ অ্যান্ড মিনস কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট রিচার্ড নিল বলেছেন, ‘সরকার নিজেই আগুন লাগিয়েছে, এখন সেটাই নিভানোর চেষ্টা করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শুল্ক আরোপের পর থেকেই মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং উৎপাদন খাত টানা কয়েক মাস সংকুচিত হচ্ছে।’ সূত্র: রয়টার্স


প্রিন্ট