, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

খোলা ম্যানহোলে পড়া নারীকে ৩ দিন পর জীবিত উদ্ধার

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১৫ বার পড়া হয়েছে

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ম্যানহোলে পড়ে যাওয়া এক নারীকেই তিন দিনের ব্যবধানে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। শনিবার রাত প্রায় ১১:৪৫ মিনিটে নগরীর কাশর, গলগণ্ডা ও জেলাখানা রোড এলাকায় তাকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত নারী (৩৮) মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনি ময়মনসিংহ নগরের গল্ডা এলাকার বাসিন্দা। এর আগে, বুধবার সকালে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু এরপর তিনি ফিরে আসেননি। এর জন্য তার পরিবারের লোকজন ও আত্মীয়স্বজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কোথাও খুঁজে না পেয়ে বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। স্থানীয় বাসিন্দা ও উদ্ধারকারী রিকশাচালক মো. রোমান মিয়া জানান, ঢাকনাসহ যে ম্যানহোলে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে, তার থেকে আনুমানিক ৫০ ফুট দূরে অন্য একটি ম্যানহোলে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকনা ছিল না। ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারী হয়তো ২-৩ দিন আগে ওই খোলা ম্যানহোলে পড়ে যান। পরে ড্রেনের ভিতর দিয়ে অন্য এক ম্যানহোলে ঢুকেন তিনি। সম্ভবত পড়ার পর থেকেই বাঁচার আকুতি জানাতে থাকেন। কিন্তু এলাকাটি ময়মনসিংহ-টঙ্গাইল মহাসড়কের খুব কাছাকাছি হওয়ায় সারাক্ষণই যানবাহনের শব্দে তার কণ্ঠস্বর শোনা যায়নি। এছাড়া ম্যানহোলের পাশে দোকান-পাট ও একটি ওয়ার্কশপ থাকায় শব্দের কারণে তার cries of life শুনতে পারেনি কেউ। রাত প্রায় ১১:৪৫ মিনিটে এলাকা নিস্তব্ধ থাকায় তখন তার বাঁচার আকুতি কানে আসে। এরপর তাকে উদ্ধার করা হয়। তিনি আরও বলেন, রাতের সময় ওই নারীকে প্রথমে চেনা যায়নি। তিনি কোনো কথা বলতে পারেননি। তার শরীর ফ্যাকাশে ছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ মাসুদ ও তার স্ত্রী তাকে তাদের বাসায় নিয়ে যান। মোহাম্মদ মাসুদ বলেন, বাসায় নিয়ে গিয়ে তার স্ত্রী প্রথমে গরম পানি দিয়ে গোসল করান ও গরম পোশাক পরান। তারপর তাকে কিছু খেতে বললে তিনি খাননি। মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়ার কারণে নিজের পরিচয়ও বলতে পারেননি। কিছুক্ষণ পর অন্য একজন তাকে চিনতে পারেন। এরপর ওই নারীকেই ময়মনসিংহ নগরীর জেলখানা রোডে তার বাবার কাছে নিয়ে আসা হয়। ভুক্তভোগী নারীর বাবা জানান, তার কন্যা উচ্চশিক্ষিত। তবে ২০১৩ সালে এক দুর্ঘটনার পর থেকে মানসিকভাবে কিছুটা অস্থির হয়ে পড়ে। এরপর থেকে প্রায় সারাদিন বাইরে থাকেন। তবে রাতে বাড়িতে ফিরে আসেন। গত বুধবার না ফেরায় বৃহস্পতিবার থানায় জিডি করেন। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের সচিব ও প্রকৌশলীকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তারা রিসিভ করেননি। ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, ফেসবুকে দেখেছি যে, ম্যানহোলে পড়ে যাওয়া এক নারীকেই তিন দিনের মধ্যে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। তিনি আরও বলেন, ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি হয়, এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে সিটি করপোরেশনের আরও বেশি দায়িত্বশীল হওয়া উচিত বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।


প্রিন্ট
ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

খোলা ম্যানহোলে পড়া নারীকে ৩ দিন পর জীবিত উদ্ধার

আপডেট সময় ০৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ম্যানহোলে পড়ে যাওয়া এক নারীকেই তিন দিনের ব্যবধানে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। শনিবার রাত প্রায় ১১:৪৫ মিনিটে নগরীর কাশর, গলগণ্ডা ও জেলাখানা রোড এলাকায় তাকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত নারী (৩৮) মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনি ময়মনসিংহ নগরের গল্ডা এলাকার বাসিন্দা। এর আগে, বুধবার সকালে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু এরপর তিনি ফিরে আসেননি। এর জন্য তার পরিবারের লোকজন ও আত্মীয়স্বজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কোথাও খুঁজে না পেয়ে বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। স্থানীয় বাসিন্দা ও উদ্ধারকারী রিকশাচালক মো. রোমান মিয়া জানান, ঢাকনাসহ যে ম্যানহোলে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে, তার থেকে আনুমানিক ৫০ ফুট দূরে অন্য একটি ম্যানহোলে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকনা ছিল না। ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারী হয়তো ২-৩ দিন আগে ওই খোলা ম্যানহোলে পড়ে যান। পরে ড্রেনের ভিতর দিয়ে অন্য এক ম্যানহোলে ঢুকেন তিনি। সম্ভবত পড়ার পর থেকেই বাঁচার আকুতি জানাতে থাকেন। কিন্তু এলাকাটি ময়মনসিংহ-টঙ্গাইল মহাসড়কের খুব কাছাকাছি হওয়ায় সারাক্ষণই যানবাহনের শব্দে তার কণ্ঠস্বর শোনা যায়নি। এছাড়া ম্যানহোলের পাশে দোকান-পাট ও একটি ওয়ার্কশপ থাকায় শব্দের কারণে তার cries of life শুনতে পারেনি কেউ। রাত প্রায় ১১:৪৫ মিনিটে এলাকা নিস্তব্ধ থাকায় তখন তার বাঁচার আকুতি কানে আসে। এরপর তাকে উদ্ধার করা হয়। তিনি আরও বলেন, রাতের সময় ওই নারীকে প্রথমে চেনা যায়নি। তিনি কোনো কথা বলতে পারেননি। তার শরীর ফ্যাকাশে ছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ মাসুদ ও তার স্ত্রী তাকে তাদের বাসায় নিয়ে যান। মোহাম্মদ মাসুদ বলেন, বাসায় নিয়ে গিয়ে তার স্ত্রী প্রথমে গরম পানি দিয়ে গোসল করান ও গরম পোশাক পরান। তারপর তাকে কিছু খেতে বললে তিনি খাননি। মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়ার কারণে নিজের পরিচয়ও বলতে পারেননি। কিছুক্ষণ পর অন্য একজন তাকে চিনতে পারেন। এরপর ওই নারীকেই ময়মনসিংহ নগরীর জেলখানা রোডে তার বাবার কাছে নিয়ে আসা হয়। ভুক্তভোগী নারীর বাবা জানান, তার কন্যা উচ্চশিক্ষিত। তবে ২০১৩ সালে এক দুর্ঘটনার পর থেকে মানসিকভাবে কিছুটা অস্থির হয়ে পড়ে। এরপর থেকে প্রায় সারাদিন বাইরে থাকেন। তবে রাতে বাড়িতে ফিরে আসেন। গত বুধবার না ফেরায় বৃহস্পতিবার থানায় জিডি করেন। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের সচিব ও প্রকৌশলীকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তারা রিসিভ করেননি। ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, ফেসবুকে দেখেছি যে, ম্যানহোলে পড়ে যাওয়া এক নারীকেই তিন দিনের মধ্যে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। তিনি আরও বলেন, ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি হয়, এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে সিটি করপোরেশনের আরও বেশি দায়িত্বশীল হওয়া উচিত বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।


প্রিন্ট