, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

আন্তর্জাতিক প্রটোকল মেনেই শহীদদের মরদেহ তোলা হবে: সিআইডি প্রধান

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ১১ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত অজ্ঞাত পরিচয় শহীদদের লাশ উত্তোলন, সনাক্তকরণ ও পুনঃদাফনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ। রোববার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের পাশে কবরস্থানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শাহাদাৎপ্রাপ্ত অজ্ঞাতনামা শহীদদের লাশ উত্তোলন ও সনাক্তকরণের বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। মো. ছিবগাত উল্লাহ বলেন, যারা বুকের রক্ত ঝরে দেশের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, যেমন আনাসের মতো সাহসী শহীদরা, তাদের প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা। এই কবরস্থানে শুয়ে থাকা নাম-পরিচয়হীন লাশগুলো তখন শনাক্ত করেনি কেউ। এখন আমাদের দায়িত্ব, তাদের পরিচয় জানা। আজ সেই গুরুত্বপূর্ণ কাজের সূচনা হলো। তিনি জানান, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা (ওএইচসিএইচআর) এর মাধ্যমে আর্জেন্টিনা থেকে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ লুইস ফন্ডিব্রাইডার ঢাকায় এসে পুরো প্রক্রিয়া পরিচালনা করবেন। তিনি গত ৪০ বছরে ৬৫টি দেশে একই ধরনের অপারেশন পরিচালনা করেছেন।

তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক প্রোটোকল ও মিনেসোটা প্রোটোকল অনুসরণ করে মরদেহ উত্তোলন, পোস্টমর্টেম, ডিএনএ নমুনা সংগ্রহসহ প্রতিটি ধাপ সম্পন্ন হবে। সিটি করপোরেশন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ, ডিএমপি, বিভাগীয় কমিশনারসহ সব স্টেকহোল্ডারকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সিআইডির প্রধান বলেন, প্রাথমিকভাবে ১১৪টি কবর চিহ্নিত হয়েছে, তবে সংখ্যা পরিবর্তিত হতে পারে। মরদেহ উত্তোলনের পরে পোস্টমর্টেম, বোন স্যাম্পল ও টিস্যু সংগ্রহ, ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করা হবে। পরিচয় নিশ্চিত হলে ধর্মীয় সম্মান বজায় রেখে আবার দাফন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরিচয় শনাক্তের পরে যদি কেউ লাশ গ্রহণ করতে চান, তা গ্রহণ করতে পারবেন। আবেদনের জন্য কেউ যদি যোগাযোগ করে, তাহলে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে দেওয়া হবে। তিনি জানান, কোন কবরের মধ্যে কে আছে, তা আমাদের জানা নেই। তাই সময় নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তবে আমরা দৃঢ় বিশ্বাস, এই প্রক্রিয়ায় সব শহীদদের পরিচয় খুঁজে বের করা সম্ভব হবে। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুসারে মরদেহের ছবি বা সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করা যাবে না। এটি মানবাধিকার ও সম্মানের বিষয়। আগের মতোই আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। শহীদদের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক বাবা-মা ও ভাই-বোন বছর ধরে তাদের প্রিয়জনের পরিচয় জানার জন্য অপেক্ষা করছেন। আমরা এই বেদনা থেকে দেশকে মুক্ত করতে কাজ করছি। শেষে তিনি সব সংশ্লিষ্ট সংস্থা, চিকিৎসক, সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, ডিএমপি ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এসময় ইউনাইটেড নেশনস হাইকমিশনার ফর হিউম্যান রাইটস (ইউএনএইচআর) আর্জেন্টিনার ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ লুইস ফন্ডিব্রাইডার বলেন, আমি তিন মাস ধরে সিআইডির সঙ্গে কাজ করছি। এই আন্তর্জাতিক মানের কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন হবে। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি, সব কাজ আন্তর্জাতিক ফরেনসিক মানদণ্ড অনুযায়ী হবে। স্থানীয় সংস্থা (সিআইডি) কে রুলস অনুসরণ করে সহায়তা দেওয়া হবে।


প্রিন্ট
ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক প্রটোকল মেনেই শহীদদের মরদেহ তোলা হবে: সিআইডি প্রধান

আপডেট সময় ১১:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত অজ্ঞাত পরিচয় শহীদদের লাশ উত্তোলন, সনাক্তকরণ ও পুনঃদাফনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ। রোববার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের পাশে কবরস্থানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শাহাদাৎপ্রাপ্ত অজ্ঞাতনামা শহীদদের লাশ উত্তোলন ও সনাক্তকরণের বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। মো. ছিবগাত উল্লাহ বলেন, যারা বুকের রক্ত ঝরে দেশের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, যেমন আনাসের মতো সাহসী শহীদরা, তাদের প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা। এই কবরস্থানে শুয়ে থাকা নাম-পরিচয়হীন লাশগুলো তখন শনাক্ত করেনি কেউ। এখন আমাদের দায়িত্ব, তাদের পরিচয় জানা। আজ সেই গুরুত্বপূর্ণ কাজের সূচনা হলো। তিনি জানান, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা (ওএইচসিএইচআর) এর মাধ্যমে আর্জেন্টিনা থেকে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ লুইস ফন্ডিব্রাইডার ঢাকায় এসে পুরো প্রক্রিয়া পরিচালনা করবেন। তিনি গত ৪০ বছরে ৬৫টি দেশে একই ধরনের অপারেশন পরিচালনা করেছেন।

তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক প্রোটোকল ও মিনেসোটা প্রোটোকল অনুসরণ করে মরদেহ উত্তোলন, পোস্টমর্টেম, ডিএনএ নমুনা সংগ্রহসহ প্রতিটি ধাপ সম্পন্ন হবে। সিটি করপোরেশন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ, ডিএমপি, বিভাগীয় কমিশনারসহ সব স্টেকহোল্ডারকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সিআইডির প্রধান বলেন, প্রাথমিকভাবে ১১৪টি কবর চিহ্নিত হয়েছে, তবে সংখ্যা পরিবর্তিত হতে পারে। মরদেহ উত্তোলনের পরে পোস্টমর্টেম, বোন স্যাম্পল ও টিস্যু সংগ্রহ, ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করা হবে। পরিচয় নিশ্চিত হলে ধর্মীয় সম্মান বজায় রেখে আবার দাফন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরিচয় শনাক্তের পরে যদি কেউ লাশ গ্রহণ করতে চান, তা গ্রহণ করতে পারবেন। আবেদনের জন্য কেউ যদি যোগাযোগ করে, তাহলে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে দেওয়া হবে। তিনি জানান, কোন কবরের মধ্যে কে আছে, তা আমাদের জানা নেই। তাই সময় নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তবে আমরা দৃঢ় বিশ্বাস, এই প্রক্রিয়ায় সব শহীদদের পরিচয় খুঁজে বের করা সম্ভব হবে। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুসারে মরদেহের ছবি বা সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করা যাবে না। এটি মানবাধিকার ও সম্মানের বিষয়। আগের মতোই আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। শহীদদের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক বাবা-মা ও ভাই-বোন বছর ধরে তাদের প্রিয়জনের পরিচয় জানার জন্য অপেক্ষা করছেন। আমরা এই বেদনা থেকে দেশকে মুক্ত করতে কাজ করছি। শেষে তিনি সব সংশ্লিষ্ট সংস্থা, চিকিৎসক, সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, ডিএমপি ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এসময় ইউনাইটেড নেশনস হাইকমিশনার ফর হিউম্যান রাইটস (ইউএনএইচআর) আর্জেন্টিনার ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ লুইস ফন্ডিব্রাইডার বলেন, আমি তিন মাস ধরে সিআইডির সঙ্গে কাজ করছি। এই আন্তর্জাতিক মানের কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন হবে। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি, সব কাজ আন্তর্জাতিক ফরেনসিক মানদণ্ড অনুযায়ী হবে। স্থানীয় সংস্থা (সিআইডি) কে রুলস অনুসরণ করে সহায়তা দেওয়া হবে।


প্রিন্ট