বাংলাদেশের নেতারা যদি ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দেন, তাহলে ভারতের পক্ষ থেকে বেশিদিন চুপ থাকবেন না বলে সতর্কতা জারি করেছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় তিনি এই মন্তব্য করেন। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, গত এক বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে বারবার এমন বক্তব্য আসছে, যেখানে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সংযোগের কথা বলা হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, ‘এমন চিন্তাই বাংলাদেশের জন্য ভুল। এটি একটি খারাপ মানসিকতার পরিচয়।’ আসামের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ভারত একটি বৃহৎ দেশ, একটি পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন রাষ্ট্র এবং বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি। তার ভাষায়, ‘আমরা যদি সাহায্য চাই বা অন্য কোনো পরিস্থিতিতে থাকি, এবং কেউ ভারতের বিরুদ্ধে এমন আচরণ করে, তবে আমরা চুপ থাকব না।’ এই প্রতিক্রিয়া তার এ বক্তব্যের এক দিন আগে বাংলাদেশের সদ্য গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর মন্তব্যের পর আসে। তিনি বলেন, ভারতের আটটি রাজ্য নিয়ে গঠিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করা উচিত। তিনি বলেন, ‘যদি ভারত আমাদের সার্বভৌমত্ব ও মানবাধিকার মানে না, তাহলে আমরা ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয় দেব এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে আলাদা করে দেব।’ হাসনাত আবদুল্লাহ অভিযোগ করেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুসারীদের অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে বর্তমানে সরকারের বিরুদ্ধে উসকানি দিচ্ছে ভারত। তবে এই ধরনের মন্তব্য প্রথম নয়। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, ‘ভারতের পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্য স্থলবেষ্টিত। সমুদ্রে যাওয়ার কোনো পথ তাদের নেই। আমরা সমুদ্রের একমাত্র রক্ষাকর্তা।’ পরবর্তীতে বাংলাদেশি নেতাদের বক্তব্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি করিডোরের কথাও উঠে আসে, যা উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ রক্ষা করে। এ প্রসঙ্গে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ভারতের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার আগে বাংলাদেশের নিজস্ব দুটি ‘ঝুঁকিপূর্ণ চিকেনস নেক’ নিয়ে ভাবা উচিত। তিনি উল্লেখ করেন, একটি করিডোর পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে মেঘালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম গারো পাহাড় পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার জুড়ে বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে গেছে। অন্যটি হলো প্রায় ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রাম করিডোর, যা দক্ষিণ ত্রিপুরা থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। সূত্র: দ্য হিন্দু