সুদানে নিহত ৬ সেনার জানাজা সম্পন্ন
রোববার রাজধানীর যেসব এলাকায় মার্কেট বন্ধ
দেশের বাজারে আজ যত টাকায় বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণ ও রুপা
হান্নান মাসউদকে হত্যার হুমকিদাতা সম্পর্কে যা জানালো পুলিশ
বাপ স্বতন্ত্র, বেটিও স্বতন্ত্র- সময়ই উত্তর দেবে: রুমিন ফারহানা
খুনিরা পার পেয়ে গেলে আপনার আমার কারো জীবন নিরাপদ থাকবে না: জামায়াত আমির
স্বর্ণকাণ্ডে গ্রেপ্তার অভিনেত্রীর মুক্তির আবেদন নাকচ
টেকনাফে আদিবাসী যুবককে তুলে নিয়ে গেল অস্ত্রধারীরা
বিশ্ববাজারে বাড়ল তেলের দাম
সুনামগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৩০
এমপি নির্বাচিত হলে যে সব কাজ করতে চেয়েছিলেন ওসমান হাদি
- আপডেট সময় ১৬ ঘন্টা আগে
- / ৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের তরুণদের মেধা ও শ্রমকে যথাযথভাবে ব্যবহার করে চাঁদাবাজি বন্ধের স্বপ্ন দেখতেন নিহত ইনকিলাব মঞ্চের সাবেক মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। মৃত্যুর কিছুদিন আগে তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে তিনি কীভাবে কাজ করবেন এবং কী স্বপ্ন দেখেন সে সম্পর্কে খোলামেলা আলোচনা করেন।
ঢাকা-৮ আসনে জয় লাভের পর তিনি চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলার আশায় বুক বেধেছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, “একটা কথা আমি স্পষ্ট করে দিতে চাই, ঢাকা আটের কোথাও চাঁদাবাজি হবে না, এটা আমি নিশ্চিত করছি। সিন্ডিকেটটা অনেক বড়, সব কিছু আমি বন্ধ করতে পারবো কি না জানি না। তবে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করবো।”
চাঁদাবাজি রোধে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে তিনি বলেছিলেন, “নাম্বার ওয়ান, ঢাকা আটের সবজিওয়ালা বা ভ্যানচালকদের কাছ থেকে যদি কেউ চাঁদা তোলে, আমি ওসমান হাদি শুনলেই আমার টিম নিয়ে সেখানে গিয়ে দাঁড়াবো। তার কাছ থেকে চাঁদা তুললে অবশ্যই তাকে হাত দিয়ে চাঁদা নিতে হবে। আর যদি অনেক রাঘব বোয়াল থাকে, যারা নিজে যান না, তাদের লোক পাঠায়, তাহলে তাদের নাম আমি জানব।”
দ্বিতীয়ত, চাঁদাবাজদের সিন্ডিকেটের তথ্য পब्लিক করে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে তিনি বলেছিলেন, “যে রাঘব বোয়ালরা তাদের ছেলেমেয়েকে পাঠিয়ে চাঁদাবাজি করাবে, ঢাকা আটের মধ্যে, আমি সংসদে দাঁড়িয়ে বিসমিল্লাহ বলে প্রত্যেকের নাম প্রকাশ করে দেবো। এর পরের সমস্ত দায়িত্ব আমার হাতে থাকবে, আমি তা করবই।”
তৃতীয়ত, তিনি ঢাকা-৮ কেন্দ্রের বিভিন্ন হাসপাতাল ঘিরে গড়ে ওঠা চিকিৎসা সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলার পরিকল্পনা ছিল।
হাদি বলেছিলেন, “পুরো বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা শাহবাগ কেন্দ্রিক। শুধু ঢাকা আটের নয়, পিজি, বারডেম ও ঢাকা মেডিকেলেও সিন্ডিকেটের ছত্রছায়ায় রয়েছে। চিকিৎসা বলতে গেলে, আপনি মরলেও আপনার লাশের জন্যও টাকা চেয়ে থাকে। ২০ হাজার টাকা না দিলে, ১৫ হাজারে যেতে চাইলে, আপনার মৃতদেহ অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয় না।”
নিজের পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, “ভাবুন কেমন দেশ আমরা বাস করছি। আমি ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য ও ঢাকা আটের তরুণ বন্ধুদের নিয়ে ভলান্টিয়ার টিম গঠন করব। যারা চিকিৎসা সেবা নিতে আসা মানুষকে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে সহায়তা করবে। এর ফলে এই হাসপাতাল জোনে কোনো সিন্ডিকেটের ব্যবসা চলবে না। অনেক অসুস্থ মানুষ আসেন, তারা কোন ডিপার্টমেন্টে যাবেন বুঝতে পারেন না। তাদের পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই। আমরা বুথ বসিয়ে সেই ব্যক্তিকে সেই নির্দিষ্ট হাসপাতালের জায়গায় নিয়ে যাবো এবং চিকিৎসার প্রতিটি ধাপে আমাদের ভলান্টিয়াররা সহায়তা করবে।”
স্বপ্নের তরুণ হাদি আরও বলেছিলেন, “আমি অনেক বড় বড় স্বপ্নের কথা বলতে পারি। কিন্তু আমি আবারও বলি, আমি যা বলি ইনশাআল্লাহ, সেটাই করবো। আমি এখন পর্যন্ত আমার ক্ষমতায় যা করতে পারব, সেটাই বললাম। বাকি সব কিছু ইনশাআল্লাহ করব।”
রাজনৈতিক পরিস্থিতির চাপে পড়ে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবনা প্রকাশ করে তিনি বলেছিলেন, “আমি আপনাকে শুধু একটাই কথা বলব, যদি আল্লাহ আমাকে এমপি বানায়, তাহলে বাকি ২৯৯ জন এমপি তাদের ভোটারদের কাছে ইনশআল্লাহ পরবর্তী নির্বাচনে চাপের মুখে পড়বেন। তারা শুনতে বাধ্য হবেন, এই ছেলে যদি এটা-ওটা পারল, তাহলে আপনি কেন পারলেন না?”
এমন অগণিত স্বপ্নের সাথে আজ (শনিবার) শরিফ ওসমান হাদির দেহ চিরনিদ্রায় শায়িত।
প্রিন্ট


























