, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

হাদি হত্যার বিচারে ‘দ্রুত বিচারিক ট্রাইব্যুনাল’ গঠনের দাবি ইনকিলাব মঞ্চের

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ৫ ঘন্টা আগে
  • / ৩ বার পড়া হয়েছে

শরিফ ওসমান হাদির হত্যার ন্যায্য বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করার দাবি জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘর সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ আদালত বা ট্রাইব্যুনাল গঠন জরুরি। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থার সহায়তা নিতে হবে। কোনো ধরনের ‘বন্দুকযুদ্ধ’ নয়—আমরা চাই স্পষ্ট ও প্রকাশ্য বিচার। আব্দুল্লাহ আল জাবের আরও বলেন, শহীদ ওসমান হাদি ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তাকে আড়াল করা যাবে না। তার হত্যার সুষ্ঠু বিচারই আমাদের অঙ্গীকার। তিনি উল্লেখ করেন, শরিফ ওসমান হাদির জানাজায় উপস্থিত ছিল প্রায় দশ লাখ মানুষ—এটি স্পষ্ট করে দেয়, দেশের সাধারণ মানুষ এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চায়। তবে, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, গতকাল (২১ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে শহীদ ওসমান হাদির নাম বা তার হত্যার বিষয়ে কোনো স্পষ্টতা পাওয়া যায়নি। মনে হচ্ছে, এই ঘটনাকে তুচ্ছ করে দেখানোর চেষ্টার চেষ্টা করা হয়েছে। তারা মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড দমন করা যাবে। কিন্তু আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য—বাংলাদেশের মানুষ চুপ করে থাকেনি, চুপ থাকবেন না। ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আরও বলেন, গতকালের বিবৃতিতে স্পষ্টতই দেখা গেছে, এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সরকারের কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। কখনো বলা হয়, খুনি ভারতে পালিয়েছে, আবার কখনো বলা হয়, দেশে রয়েছে। তাহলে প্রশ্ন ওঠে, দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কার্যকারিতা কোথায়? জনগণের ট্যাক্সের অর্থ তারা কি শুধু সুবিধা ভোগে ব্যয় করে? আব্দুল্লাহ আল জাবের বলেন, শহীদ ওসমান হাদি ছিলেন দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তার হত্যাকে যদি এভাবে উপেক্ষা করা হয়, তাহলে আমাদের দাবি একটাই—আমাদের দুই দফা দাবি বাস্তবায়ন এখনো হয়নি। খুনির অবস্থান এখনও নিশ্চিত নয়, এমনকি খুনির ড্রাইভারকেও গ্রেফতার করা হয়নি। কখনো তার পরিবার, কখনো সহযোগীদের ধরে বলা হচ্ছে, তারা পর্যাপ্ত তথ্য দিতে পারেনি। তাহলে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সক্ষমতা কোথায়? বাস্তবতা হলো, ইনকিলাব মঞ্চ বারবার তথ্য দিয়ে আপনাদের সহযোগিতা করেছে। আমরা থাকলে হয়তো আজ পর্যন্ত খুনিকে শনাক্ত করা সম্ভব হতো। তাই, প্রশ্ন ওঠে—এই গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রয়োজন কি? সব কিছুই যদি আমাদের হাতেই রাখতে হয়, তাহলে দায়িত্ব আমাদেরকেই দেওয়া হোক। তিনি আরও বলেন, আমরা দ্বিতীয় দাবিতে জানিয়েছিলাম, সিভিল ও মিলিটারি গোয়েন্দাদের মধ্যে থাকা আওয়ামী দোসরদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে হবে—এ বিষয়েও কোনো উচ্চারণ করেনি সরকার। কোটি কোটি মানুষের দাবিকে উপেক্ষা করে এই দায়িত্বহীনতা চরম অমানবিক। জাবের বলেন, দেশের মানুষ এই সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য দায়ী নয়। যদি এই সরকার বিচার নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে এর নৈতিক অধিকারও থাকে না ক্ষমতায় থাকার। আইন উপদেষ্টা কি শুধুই দায় এড়িয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী? জনগণ আপনাদের নির্বাচন করেছে দায়িত্ব পালনের জন্য, দায় এড়ানোর জন্য নয়। কারা এই তদন্তে বাধা সৃষ্টি করছে, সবই যেন স্পষ্ট করে বলুন, তারপর পদত্যাগ করুন। অন্য কোনো উপায় নেই। তিনি বলেন, ড. ইউনূসকেও স্পষ্ট করে বলতে চাই—বাংলাদেশের জনগণ আপনাকে দেশের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য। জানাজার মাঠে আপনি শহীদ ওসমান হাদির প্রতি সম্মান প্রকাশ করেছেন, কিন্তু একবারও বলেননি, এই হত্যার বিচার কিভাবে হবে। এই নীরবতা আমাদের গভীর হতাশ করে। আমাদের স্পষ্ট অবস্থান—নির্বাচনের আগে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। না হলে, কোনো নির্বাচনই গ্রহণযোগ্য হবে না। তিনি আরও বলেন, আমরা আর রক্ত দিতে চাই না। তবে, যদি বিচার ব্যতীত এই পরিস্থিতি চলতে থাকে, তবে দায় সরকারকেই নিতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করতে হবে। যদি তারা দেশের বাইরে থাকে, তাহলে আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে আনতে হবে।


প্রিন্ট

নিউজটি শেয়ার করুন

হাদি হত্যার বিচারে ‘দ্রুত বিচারিক ট্রাইব্যুনাল’ গঠনের দাবি ইনকিলাব মঞ্চের

আপডেট সময় ৫ ঘন্টা আগে

শরিফ ওসমান হাদির হত্যার ন্যায্য বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করার দাবি জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘর সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ আদালত বা ট্রাইব্যুনাল গঠন জরুরি। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থার সহায়তা নিতে হবে। কোনো ধরনের ‘বন্দুকযুদ্ধ’ নয়—আমরা চাই স্পষ্ট ও প্রকাশ্য বিচার। আব্দুল্লাহ আল জাবের আরও বলেন, শহীদ ওসমান হাদি ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তাকে আড়াল করা যাবে না। তার হত্যার সুষ্ঠু বিচারই আমাদের অঙ্গীকার। তিনি উল্লেখ করেন, শরিফ ওসমান হাদির জানাজায় উপস্থিত ছিল প্রায় দশ লাখ মানুষ—এটি স্পষ্ট করে দেয়, দেশের সাধারণ মানুষ এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চায়। তবে, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, গতকাল (২১ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে শহীদ ওসমান হাদির নাম বা তার হত্যার বিষয়ে কোনো স্পষ্টতা পাওয়া যায়নি। মনে হচ্ছে, এই ঘটনাকে তুচ্ছ করে দেখানোর চেষ্টার চেষ্টা করা হয়েছে। তারা মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড দমন করা যাবে। কিন্তু আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য—বাংলাদেশের মানুষ চুপ করে থাকেনি, চুপ থাকবেন না। ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আরও বলেন, গতকালের বিবৃতিতে স্পষ্টতই দেখা গেছে, এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সরকারের কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। কখনো বলা হয়, খুনি ভারতে পালিয়েছে, আবার কখনো বলা হয়, দেশে রয়েছে। তাহলে প্রশ্ন ওঠে, দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কার্যকারিতা কোথায়? জনগণের ট্যাক্সের অর্থ তারা কি শুধু সুবিধা ভোগে ব্যয় করে? আব্দুল্লাহ আল জাবের বলেন, শহীদ ওসমান হাদি ছিলেন দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তার হত্যাকে যদি এভাবে উপেক্ষা করা হয়, তাহলে আমাদের দাবি একটাই—আমাদের দুই দফা দাবি বাস্তবায়ন এখনো হয়নি। খুনির অবস্থান এখনও নিশ্চিত নয়, এমনকি খুনির ড্রাইভারকেও গ্রেফতার করা হয়নি। কখনো তার পরিবার, কখনো সহযোগীদের ধরে বলা হচ্ছে, তারা পর্যাপ্ত তথ্য দিতে পারেনি। তাহলে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সক্ষমতা কোথায়? বাস্তবতা হলো, ইনকিলাব মঞ্চ বারবার তথ্য দিয়ে আপনাদের সহযোগিতা করেছে। আমরা থাকলে হয়তো আজ পর্যন্ত খুনিকে শনাক্ত করা সম্ভব হতো। তাই, প্রশ্ন ওঠে—এই গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রয়োজন কি? সব কিছুই যদি আমাদের হাতেই রাখতে হয়, তাহলে দায়িত্ব আমাদেরকেই দেওয়া হোক। তিনি আরও বলেন, আমরা দ্বিতীয় দাবিতে জানিয়েছিলাম, সিভিল ও মিলিটারি গোয়েন্দাদের মধ্যে থাকা আওয়ামী দোসরদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে হবে—এ বিষয়েও কোনো উচ্চারণ করেনি সরকার। কোটি কোটি মানুষের দাবিকে উপেক্ষা করে এই দায়িত্বহীনতা চরম অমানবিক। জাবের বলেন, দেশের মানুষ এই সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য দায়ী নয়। যদি এই সরকার বিচার নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে এর নৈতিক অধিকারও থাকে না ক্ষমতায় থাকার। আইন উপদেষ্টা কি শুধুই দায় এড়িয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী? জনগণ আপনাদের নির্বাচন করেছে দায়িত্ব পালনের জন্য, দায় এড়ানোর জন্য নয়। কারা এই তদন্তে বাধা সৃষ্টি করছে, সবই যেন স্পষ্ট করে বলুন, তারপর পদত্যাগ করুন। অন্য কোনো উপায় নেই। তিনি বলেন, ড. ইউনূসকেও স্পষ্ট করে বলতে চাই—বাংলাদেশের জনগণ আপনাকে দেশের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য। জানাজার মাঠে আপনি শহীদ ওসমান হাদির প্রতি সম্মান প্রকাশ করেছেন, কিন্তু একবারও বলেননি, এই হত্যার বিচার কিভাবে হবে। এই নীরবতা আমাদের গভীর হতাশ করে। আমাদের স্পষ্ট অবস্থান—নির্বাচনের আগে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। না হলে, কোনো নির্বাচনই গ্রহণযোগ্য হবে না। তিনি আরও বলেন, আমরা আর রক্ত দিতে চাই না। তবে, যদি বিচার ব্যতীত এই পরিস্থিতি চলতে থাকে, তবে দায় সরকারকেই নিতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করতে হবে। যদি তারা দেশের বাইরে থাকে, তাহলে আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে আনতে হবে।


প্রিন্ট