হাদির ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণের নির্দেশ
শরীয়তপুরে বিএনপির তিন প্রার্থী অপু–কিরণ–আসলামের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ
প্রধান বিচারপতি হচ্ছেন জুবায়ের রহমান চৌধুরী
টাঙ্গাইলে বাইক রেসিং করতে গিয়ে ৩ বন্ধু নিহত
‘মাঝে মাঝে মনে হয়, ভারত-বাংলাদেশ যুদ্ধ লেগে যাবে’
শরীয়তপুরে এনসিপি ও ছাত্রদলের সংঘর্ষ, আহত ১০
বাংলাদেশের সংকটময় মুহূর্তে প্রত্যাবর্তন হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ এক ব্যক্তির
দিল্লির পর আগরতলা-শিলিগুড়িতেও বাংলাদেশের ভিসা সেবা বন্ধ
নেতাকর্মীদের যাতায়াতে ১০ স্পেশাল ট্রেন পেল বিএনপি
দিল্লিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের ভিসা সেবা বন্ধ
বাংলাদেশের সংকটময় মুহূর্তে প্রত্যাবর্তন হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ এক ব্যক্তির
- আপডেট সময় ৫ ঘন্টা আগে
- / ৪ বার পড়া হয়েছে
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে নতুন সরকার গঠন করে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন। শপথ গ্রহণের পর দেশের স্থিতিশীলতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে এক জনমত গঠনের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের সদস্যরা। তবে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দক্ষিণপন্থী দলের উত্থান ও বিভিন্ন সময়ে সহিংসতার ঘটনা পরিস্থিতিকে অচলাবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারসহ সংবাদমাধ্যমে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মতো ঘটনা এর প্রমাণ। ভারতের সংবাদসংস্থা এনডিটিভি জানাচ্ছে, ফেব্রুয়ারির আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ সহিংসতার অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে চলেছে, ঠিক তখনি রাজনীতিতে ফিরে আসছে এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তিনি হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র ও তার রাজনৈতিক উত্তরসূরি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আগামী বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) তার ফেরার উপলক্ষে বিএনপি একটি সংবর্ধনা সভার অনুমতি পেয়েছে। সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তারেক রহমান এমন সময় দেশে ফিরছেন যখন বাংলাদেশ এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তার দল বিএনপি ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এবং বড় কোনো অঘটন না ঘটলে জয়ের সম্ভাবনা বেশিই। এই পরিস্থিতিতে তারেক রহমান দেশের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনায় এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে উঠতে পারেন বলে মনে করছে এনডিটিভি। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অনেকে মনে করেন— মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত অপ্রয়োজনীয় ছিল, বিশেষ করে পররাষ্ট্রনীতিতে। এর বিপরীতে, তারেক রহমান ইতোমধ্যে স্পষ্ট করে দিয়েছেন— বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশের পররাষ্ট্রনীতি কেমন হবে। মে মাসে, নির্বাচন ও সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন— নির্বাচিত সরকার না থাকলেও মুহাম্মদ ইউনূস কিভাবে দীর্ঘমেয়াদী পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ করতে পারেন। ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ নীতি তিনি স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছেন— বাংলাদেশ দিল্লি বা পিন্ডির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করবে না, বরং দেশের স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দেবে। নয়াপল্টনে এক বিশাল সমাবেশে তিনি ঘোষণা দেন, ‘দিল্লি নয়, পিন্ডি নয়— সবার আগে বাংলাদেশ’। তারেক রহমানের এই অবস্থানকে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রনীতির সম্পূর্ণ বিপরীত হিসেবে দেখছে এনডিটিভি, বলছে— শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ড. ইউনূস যে পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেছিলেন, তা ভারত- বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষতি করে পাকিস্তানের সাথে ঘনিষ্ঠ করে তুলেছে। দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি শেখ হাসিনার শাসনব্যবস্থার কঠোর সমালোচক। তার শাসনামলে তারা ‘ফ্যাসিবাদ’ ও ভয়াবহ গণতান্ত্রিক সংকটের শিকার হয়েছে। তবে বিএনপি ও ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের মধ্যে মতবিরোধও রয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপির চাপের কারণেই ইউনূস সরকার ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অতীতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী একযোগে কাজ করলেও, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার ইতিহাসে তারেক রহমানের চেয়ে ভালো কেউ জানে না। শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগকে ইউনূস সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধা দেওয়ায় এখন মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বিএনপি। এনডিটিভি জানাচ্ছে, জামায়াত চায় যতদিন না তারা সম্পূর্ণ সংগঠিত হতে পারে, ততদিন পর্যন্ত ইউনূস সরকার ক্ষমতায় থাকুক। জামায়াতের নেতা বলছেন, তারা কোন নির্বাচনী জোটে যোগ দিচ্ছেন না, ফলে নির্বাচন মূলত বিএনপি এবং অন্যান্য শক্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। যদি নির্বাচন বিলম্বিত হয়, তাহলে বিএনপির ক্ষতি হবে, কারণ তাদের প্রচার ইতোমধ্যে গতি পেয়েছে। অন্যদিকে, জামায়াত ও এনসিপি সময় পেলে সুবিধা নেবে, কারণ তারা এখনো তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠিত হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। জামায়াত আরও বলেছে, একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট আয়োজন করলে পরিস্থিতি বিশৃঙ্খল হয়ে উঠতে পারে। তবে, ইউনূস সরকার একই দিনে গণভোটের ঘোষণা দিয়ে তা ‘বিশৃঙ্খল নির্বাচনী পরিস্থিতি’ তৈরির পথ সুগম করেছে বলে মনে করছে এনডিটিভি। এই পরিস্থিতিতে, যদি বিএনপি নির্বাচনে জয় লাভ করে এবং তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হন, তবে দেশের ঐক্য রক্ষা তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। তিনি ইতোমধ্যে একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন, যা ক্ষমতায় এলে বাস্তবায়ন করবেন বলে জানিয়েছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্য বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। অন্যদিকে, তারেক রহমান বগুড়া-৬ (সদর) আসন থেকে দলের প্রার্থী হবেন। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত খালেদা জিয়া নিয়মিতভাবে বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। ভারতীয় গণমাধ্যমটি বলছে, গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নিয়ে তারেক রহমান নিজেকে ও বিএনপিকে জনগণের ভাষা হিসেবে তুলে ধরছেন। এ মাসে এক জনসমাবেশে তিনি বলেন, ‘শুধু গণতন্ত্রই আমাদের এই সংকট থেকে মুক্তি দিতে পারে, এবং গণতন্ত্রের ভিত্তি শক্তিশালী করতে পারে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিটি কর্মী।’ উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে পরিবারের সাথে দেশ ছাড়ার পর থেকে তিনি বিদেশে বসবাস করছেন। সেই বছর ৩ সেপ্টেম্বর মুক্তি পাওয়ার আগে তিনি ১৮ মাস কারাভোগ করেন, এরপর যুক্তরাজ্যে চলে যান।
প্রিন্ট





















