, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo নওগাঁয় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই বন্ধু নিহত, আহত চারজন Logo নওগাঁয় ৭০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে মার্কেট বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা Logo নওগাঁয় ইলা মিত্রের জন্মশতবার্ষিকীতে কৃষক, আদিবাসী ও নারী সমাবেশ Logo নওগাঁয় লালন সাঁইয়ের ১৩৫তম তিরোধান দিবস উদযাপিত Logo পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নওগাঁয় বৃক্ষরোপণ Logo তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নে  নওগাঁ-৫ আসনের জনতার এমপি ধলূ  লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ Logo প্রাণ বাঁচাতে নওগাঁর পোরশায়  বজ্র নিরোধক ছাউনি  নির্মান Logo অভ্যুত্থানের ফায়দা লুটছে তথাকথিত কিছু রাজনীতিবিদ: সারজিস Logo তখন তো জানতাম না আমাকের বর্ডার ক্রস করানো হচ্ছে Logo সশস্ত্র বাহিনীর আর কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরিকল্পনা নেই : প্রেস সচিব
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

শেরপুরে সুদের টাকা না পেয়ে কৃষকের বাড়ি ভাঙচুর-লুটপাট

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৫:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫
  • / ২০ বার পড়া হয়েছে

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার জামিরাকান্দা গ্রামে সুদের টাকা সময়মতো পরিশোধ না করায় মসজিদের ইমামের নেতৃত্বে এক কৃষকের ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৮ ও ৯ অক্টোবর। জানা গেছে, কৃষক সোহেল মিয়ার স্ত্রী রিতা বেগম পার্শ্ববর্তী বাড়ির আমানুল্লাহ মুন্সির কাছ থেকে প্রতি মাসে ১০ শতাংশ সুদে এক লাখ টাকা ঋণ নেন। এই আমানুল্লাহ মুন্সি পাঁচগাঁও বাজারের একটি জামে মসজিদের খতিব ও ইমাম। ঋণ নেওয়ার পর থেকে রিতা বেগম নিয়মিত সুদের টাকা পরিশোধ করছিলেন। কিছুদিন আগে তিনি মূল টাকার সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা ফেরত দেন। কিন্তু এরপরেও আমানুল্লাহ মুন্সি আরও ৮০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা জোগাড় করতে রিতা ঢাকায় স্বামী ও সন্তানদের কাছে চলে যান। সুযোগ বুঝে ইমাম আমানুল্লাহ মুন্সি স্থানীয় সোহেলসহ আরও কয়েকজনকে নিয়ে ৮ ও ৯ অক্টোবর রিতা বেগমের দুটি ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। তারা ঘরের আসবাবপত্র, কাঠ, টিন, খুঁটি, নলকূপ, গোসলখানা, এমনকি গাছপালা ও ঘরের মেঝের ইট পর্যন্ত খুলে নিয়ে যায়। হামলার সময় ঘরে কেউ না থাকায় পুরো বাড়িটি তছনছ করে ফেলেন অভিযুক্তরা। পরে রিতা বেগম ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশকে বিষয়টি জানান। গতকাল শুক্রবার (১০ অক্টোবর) ভুক্তভোগী পরিবার মামলা দায়ের করে, যেখানে ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- ইমাম আমানুল্লাহ মুন্সির স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৪২), সোহেল রানার স্ত্রী খাদিজা বেগম (২৬), বাবু মিয়া (২১) ও নয়ন মিয়া (১৯)। ভুক্তভোগী রিতার বোন রিমা বলেন, আমার বোন সুদের উপর এক লাখ টাকা নিয়েছিল, যা অনেক আগেই পরিশোধ করা হয়েছে। এরপর আরও এক লাখ টাকা নেয়। ৮ মাস সুদ দিয়েছে, মাঝখানে দুই মাস টাকা দিতে পারেনি। এই জন্যই আমার বোন ঢাকায় গিয়ে আত্মীয়স্বজনের কাছে টাকা জোগাড় করে। এই সুযোগে তার বাড়িঘর সব ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এটা কোনো মানুষের কাজ নয়। টাকার কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ ছিল না, তবুও টাকা জোগাড় করতে ঢাকায় গিয়েছিল। এই সুযোগে তারা এমন কাজ করেছে। আমার বোন এখন নিঃস্ব। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। সুদের কারণে সমাজের ক্ষতি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ বিষয়ে তদন্তকারী এসআই কানাই লাল চক্রবর্তী বলেন, সুদের টাকার জন্য বাড়িঘর, টিনের চালসহ ইট পর্যন্ত খুলে নেওয়া হয়েছে। আমরা সব কিছু উদ্ধার করেছি। চারজনকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজাখুঁজি চলছে। নালিতাবাড়ী থানার ওসি সুহেল রানা বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গতকাল যাদেরকে আটক করা হয়েছিল, তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।


প্রিন্ট
ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

শেরপুরে সুদের টাকা না পেয়ে কৃষকের বাড়ি ভাঙচুর-লুটপাট

আপডেট সময় ০৫:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার জামিরাকান্দা গ্রামে সুদের টাকা সময়মতো পরিশোধ না করায় মসজিদের ইমামের নেতৃত্বে এক কৃষকের ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৮ ও ৯ অক্টোবর। জানা গেছে, কৃষক সোহেল মিয়ার স্ত্রী রিতা বেগম পার্শ্ববর্তী বাড়ির আমানুল্লাহ মুন্সির কাছ থেকে প্রতি মাসে ১০ শতাংশ সুদে এক লাখ টাকা ঋণ নেন। এই আমানুল্লাহ মুন্সি পাঁচগাঁও বাজারের একটি জামে মসজিদের খতিব ও ইমাম। ঋণ নেওয়ার পর থেকে রিতা বেগম নিয়মিত সুদের টাকা পরিশোধ করছিলেন। কিছুদিন আগে তিনি মূল টাকার সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা ফেরত দেন। কিন্তু এরপরেও আমানুল্লাহ মুন্সি আরও ৮০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা জোগাড় করতে রিতা ঢাকায় স্বামী ও সন্তানদের কাছে চলে যান। সুযোগ বুঝে ইমাম আমানুল্লাহ মুন্সি স্থানীয় সোহেলসহ আরও কয়েকজনকে নিয়ে ৮ ও ৯ অক্টোবর রিতা বেগমের দুটি ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। তারা ঘরের আসবাবপত্র, কাঠ, টিন, খুঁটি, নলকূপ, গোসলখানা, এমনকি গাছপালা ও ঘরের মেঝের ইট পর্যন্ত খুলে নিয়ে যায়। হামলার সময় ঘরে কেউ না থাকায় পুরো বাড়িটি তছনছ করে ফেলেন অভিযুক্তরা। পরে রিতা বেগম ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশকে বিষয়টি জানান। গতকাল শুক্রবার (১০ অক্টোবর) ভুক্তভোগী পরিবার মামলা দায়ের করে, যেখানে ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- ইমাম আমানুল্লাহ মুন্সির স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৪২), সোহেল রানার স্ত্রী খাদিজা বেগম (২৬), বাবু মিয়া (২১) ও নয়ন মিয়া (১৯)। ভুক্তভোগী রিতার বোন রিমা বলেন, আমার বোন সুদের উপর এক লাখ টাকা নিয়েছিল, যা অনেক আগেই পরিশোধ করা হয়েছে। এরপর আরও এক লাখ টাকা নেয়। ৮ মাস সুদ দিয়েছে, মাঝখানে দুই মাস টাকা দিতে পারেনি। এই জন্যই আমার বোন ঢাকায় গিয়ে আত্মীয়স্বজনের কাছে টাকা জোগাড় করে। এই সুযোগে তার বাড়িঘর সব ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এটা কোনো মানুষের কাজ নয়। টাকার কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ ছিল না, তবুও টাকা জোগাড় করতে ঢাকায় গিয়েছিল। এই সুযোগে তারা এমন কাজ করেছে। আমার বোন এখন নিঃস্ব। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। সুদের কারণে সমাজের ক্ষতি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ বিষয়ে তদন্তকারী এসআই কানাই লাল চক্রবর্তী বলেন, সুদের টাকার জন্য বাড়িঘর, টিনের চালসহ ইট পর্যন্ত খুলে নেওয়া হয়েছে। আমরা সব কিছু উদ্ধার করেছি। চারজনকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজাখুঁজি চলছে। নালিতাবাড়ী থানার ওসি সুহেল রানা বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গতকাল যাদেরকে আটক করা হয়েছিল, তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।


প্রিন্ট