, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

ভোলায় বিএনপি-বিজেপি সমর্থকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৭:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১৭ বার পড়া হয়েছে

ভোলায় বিএনপি ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে পঞ্চাশ জন আহত হয়েছেন। ওই সময় উভয় পক্ষ ককটেল বিস্ফোরণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। কিছু সংখ্যক মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। এই ঘটনার জন্য একটি দল অন্য দলে দোষারোপ করেছে। শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের নতুন বাজার ও পৌরসভার সামনের এলাকায় এই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সকাল ১১টায় নতুন বাজার বিজেপি কার্যালয় থেকে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি সদর রোড ও চকবাজার ঘুরে দলীয় কার্যালয়ে এসে সমাবেশ করে। অন্যদিকে, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিএনপি দুপুর সাড়ে ১২টায় মহাজনপট্টি দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল বের করে। এই মিছিলটি সদর রোড, বাংলাস্কুল মোড় ঘুরে নতুন বাজারে প্রবেশের সময় দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ, সংবাদকর্মীসহ কমপক্ষে পঞ্চাশ জন আহত হন। বিজেপি অফিসের বেশ কিছু আসবাবপত্র ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাস্তার পাশে রাখা কিছু মোটরসাইকেল ভাঙচুরের শিকার হয়। সংঘর্ষের পর জেলা বিএনপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় বিএনপি নেতারা তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলার অভিযোগ করেন। ভোলা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. রাইসুল আলম বলেন, “নির্বাচন বিলম্বিত ও বানচালের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আজ আমাদের মিছিল ছিল। প্রশাসনের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী দুপুর সাড়ে ১২টায় মিছিল শুরু হয়। বিজেপির মিছিল ১২টার আগেই শেষ করার কথা ছিল। যখন আমরা বাংলাস্কুল মোড়ে পৌঁছাই, তখন মুখোমুখি সংঘর্ষ শুরু হয়।” তিনি আরও বলেন, “আমরা তাদের (বিজেপি) ফিরে যেতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা উপেক্ষা করে ঢিল ছুঁড়তে শুরু করে। এই ঢিল ছোড়ার কারণে গণ্ডগোলের সৃষ্টি হয়। বিএনপিকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য কিছু বহিরাগত ছিল সেখানে।” বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির সোপান অভিযোগ করেন, “শান্তিপূর্ণ মিছিলে তারা (বিজেপি) হামলা চালিয়েছে। আমাদের কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ জন আহত হয়েছেন। তবে তাদের নাম এখনো জানা যায়নি।” তবে বিজেপির জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম বলেন, “বিজেপির অঙ্গ সংগঠনের আজকের অনুষ্ঠান ছিল। পুলিশ নির্দেশনা অনুযায়ী তারা সভা করেছে। সভার শেষ পর্যায়ে বিএনপির একটি গ্রুপ হামলা চালিয়েছে।” তিনি জানান, ৩৬ জন আহত হন, তাদের মধ্যে ছয়জনকে বরিশালে ও ৩০ জনকে ভোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হামলাকারীরা বিজেপি অফিসের আসবাবপত্র ভাঙচুরের জন্য দায়ী করেন। বিএনপির মিছিলে হামলা চালানোর ব্যাপারে তিনি অস্বীকার করেন। ভোলা সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু শাহাদৎ মো. হাচনাইন পারভেজ বলেন, বিএনপির মিছিলকারীরা ডিসি অফিসের সামনে দিয়ে না গিয়ে জোর করে নতুন বাজারের দিকে রওনা দেয়। প্রেস ক্লাবের সামনে এলে বিজেপির পার্টি অফিস থেকে লোকজন পৌরসভার দিকে এগিয়ে যায়। এ সময় দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি তখন কিছুটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। যারা আইন অমান্য করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।


প্রিন্ট
ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

ভোলায় বিএনপি-বিজেপি সমর্থকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ

আপডেট সময় ০৭:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫

ভোলায় বিএনপি ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে পঞ্চাশ জন আহত হয়েছেন। ওই সময় উভয় পক্ষ ককটেল বিস্ফোরণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। কিছু সংখ্যক মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। এই ঘটনার জন্য একটি দল অন্য দলে দোষারোপ করেছে। শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের নতুন বাজার ও পৌরসভার সামনের এলাকায় এই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সকাল ১১টায় নতুন বাজার বিজেপি কার্যালয় থেকে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি সদর রোড ও চকবাজার ঘুরে দলীয় কার্যালয়ে এসে সমাবেশ করে। অন্যদিকে, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিএনপি দুপুর সাড়ে ১২টায় মহাজনপট্টি দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল বের করে। এই মিছিলটি সদর রোড, বাংলাস্কুল মোড় ঘুরে নতুন বাজারে প্রবেশের সময় দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ, সংবাদকর্মীসহ কমপক্ষে পঞ্চাশ জন আহত হন। বিজেপি অফিসের বেশ কিছু আসবাবপত্র ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাস্তার পাশে রাখা কিছু মোটরসাইকেল ভাঙচুরের শিকার হয়। সংঘর্ষের পর জেলা বিএনপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় বিএনপি নেতারা তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলার অভিযোগ করেন। ভোলা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. রাইসুল আলম বলেন, “নির্বাচন বিলম্বিত ও বানচালের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আজ আমাদের মিছিল ছিল। প্রশাসনের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী দুপুর সাড়ে ১২টায় মিছিল শুরু হয়। বিজেপির মিছিল ১২টার আগেই শেষ করার কথা ছিল। যখন আমরা বাংলাস্কুল মোড়ে পৌঁছাই, তখন মুখোমুখি সংঘর্ষ শুরু হয়।” তিনি আরও বলেন, “আমরা তাদের (বিজেপি) ফিরে যেতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা উপেক্ষা করে ঢিল ছুঁড়তে শুরু করে। এই ঢিল ছোড়ার কারণে গণ্ডগোলের সৃষ্টি হয়। বিএনপিকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য কিছু বহিরাগত ছিল সেখানে।” বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির সোপান অভিযোগ করেন, “শান্তিপূর্ণ মিছিলে তারা (বিজেপি) হামলা চালিয়েছে। আমাদের কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ জন আহত হয়েছেন। তবে তাদের নাম এখনো জানা যায়নি।” তবে বিজেপির জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম বলেন, “বিজেপির অঙ্গ সংগঠনের আজকের অনুষ্ঠান ছিল। পুলিশ নির্দেশনা অনুযায়ী তারা সভা করেছে। সভার শেষ পর্যায়ে বিএনপির একটি গ্রুপ হামলা চালিয়েছে।” তিনি জানান, ৩৬ জন আহত হন, তাদের মধ্যে ছয়জনকে বরিশালে ও ৩০ জনকে ভোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হামলাকারীরা বিজেপি অফিসের আসবাবপত্র ভাঙচুরের জন্য দায়ী করেন। বিএনপির মিছিলে হামলা চালানোর ব্যাপারে তিনি অস্বীকার করেন। ভোলা সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু শাহাদৎ মো. হাচনাইন পারভেজ বলেন, বিএনপির মিছিলকারীরা ডিসি অফিসের সামনে দিয়ে না গিয়ে জোর করে নতুন বাজারের দিকে রওনা দেয়। প্রেস ক্লাবের সামনে এলে বিজেপির পার্টি অফিস থেকে লোকজন পৌরসভার দিকে এগিয়ে যায়। এ সময় দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি তখন কিছুটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। যারা আইন অমান্য করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।


প্রিন্ট