২০১৮ সালে দেশের সবচেয়ে কনিষ্ঠ সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে শেরপুর-১ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকা। এবারও বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি। শেরপুর জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ী আলহাজ হযরত আলী কারাগারে থাকায় দল তাকে এই আসনে প্রার্থী করে। বাবার জনপ্রিয়তা ও চৌকশ নেতৃত্বের কারণে ঐ সময়ের আওয়ামী লীগের দুর্গ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিল। ওই নির্বাচনে দুপুর ১২টার মধ্যে ৩৫ হাজার ভোট পাওয়ার পরেও কারচুপির অভিযোগ তুলে তিনি ভোট থেকে সরে দাঁড়ান। অন্যদিকে, সোমবার দলের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। সেই সময় নারী কোঠায় প্রিয়াংকার নাম উঠে আসে, যা আবারও ২০১৮ সালের ঐ প্রতিবাদী নির্বাচনের স্মৃতি জাগিয়ে দেয় শেরপুরের মানুষের মনে। স্থানীয়রা বলছেন, এবার তিনি দেশের সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য হিসেবে শেরপুরের প্রতিনিধিত্ব করবেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে, চলছে নির্বাচনী প্রচার। জেলা বিএনপির সূত্রে জানা যায়, দলীয় ৩১ দফা বাস্তবায়ন ও পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে জনসমর্থন আদায়ের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকা। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হামলা-ভাঙচুর উপেক্ষা করে শক্ত প্রতিরোধ ও প্রতিবাদে সারাদেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন তিনি। এর ধারাবাহিকতায়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-১ আসন থেকে দলের মনোনয়ন পেতে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন দীর্ঘ সময়। দলের মূল্যায়নে তিনি জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন। তবে মনোনয়ন না পাওয়াদের নিয়ে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নির্বাচনী পরিকল্পনা চূড়ান্ত হবে। এই ব্যাপারে শেরপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও শেরপুর-১ আসনের মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকা বলেন, আমি ২০১৮ সালে ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে শেরপুর-১ আসনে নির্বাচন করেছিলাম। সেই সময় আমি শেরপুর সদরের সর্বস্তরের মানুষের চোখে মুখে ধানের শীষের জনপ্রিয়তা ও ভালোবাসা দেখেছি। এক ঘণ্টার মধ্যে সাধারণ মানুষ যে পরিমাণ ভোট দিয়েছিল, তা দেখে বোঝা যায় তারা ধানের শীষ ও আমাকে কতটা পছন্দ করে। সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এবারও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। এজন্য আমি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞ। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই মনোনয়ন পেয়েছি। ২০১৮ সালে আমি সারাদেশে ভোট কারচুপির প্রতিবাদে প্রতিবাদ করেছিলাম। তিনি মনোনয়ন না পাওয়া অন্যান্য প্রার্থীদের উদ্দেশে বলেন, একটি আসনে একাধিক প্রার্থী থাকতেই পারে। বিএনপি বড় একটি রাজনৈতিক দল, এখানে প্রতিযোগিতা স্বাভাবিক। আমাদের এখানে আরও কিছু প্রার্থী ছিল। আমি বিশ্বাস করি, প্রত্যেকেই ধানের শীষকে ভালোবাসে এবং দলের প্রতি আন্তরিক। কেন্দ্র আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে, আমি বিশ্বাস করি অন্য প্রার্থীরাও আমাকে সহযোগিতা করবেন এবং ধানের শীষের জন্য কাজ করবেন। ইনশাআল্লাহ, এবার শেরপুর সদর আসন থেকে ধানের শীষ জয়ী হবে। নারী কোঠায় প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, নারীর কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য আমার আলাদা পরিকল্পনা থাকবে। শিক্ষার্থী, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও কৃষি ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। বড় প্রকল্পে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া হবে। শেরপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বলেন, গতকাল দলের মহাসচিব শেরপুরের তিনটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। তার মধ্যে নারী কোঠায় প্রিয়াংকা সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছেন বলে আমি মনে করি। তিনি আরও বলেন, নারীনেত্রীর গুণাবলী তার মধ্যে সবই রয়েছে। আমি আশা করি, প্রিয়াংকা সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে রেকর্ড করবেন। ভবিষ্যত নির্বাচনে শেরপুরের তিনটি আসনই বিএনপির হবে।