পাবনা জেলার রেজিস্ট্রি অফিসে হামলা, চাঁদাবাজি, মামলার অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য আল্টিমেটাম ও প্রাণনাশের হুমকি সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে আলাপিত নুরুল আলম শাহীন সহ ছয় জন দলিল লেখকের সার্টিফিকেট বাতিল করেছে জেলা রেজিস্ট্রার অফিস। একই সঙ্গে তাদেরকে পাবনা সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। রোববার (২৩ নভেম্বর) জেলা রেজিস্ট্রার দ্বীপক কুমার সরকারের স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সোমবার (২৪ নভেম্বর) বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন জেলা রেজিস্ট্রার। বাতিল হওয়া দলিল লেখকরা হলেন, পাবনা সদর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ইসহাক উল আলম, সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম শাহীন, আব্দুস সালাম, মোস্তাফিজুর রহমান মানিক, হাসান মাহমুদ পাপ্পু ও গোলজার হোসেন। জেলা রেজিস্ট্রার দ্বীপক কুমার সরকার জানান, সাবেক সদর সাব-রেজিস্টার ইউসুফ আলীকে হত্যার হুমকি, অশালীন আচরণ, অফিসে হামলা, আতঙ্ক সৃষ্টি, কর্মচারীদের লাঞ্ছনা ও জোরপূর্বক চাঁদা আদায়ের গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্তে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। সম্প্রতি ওই দলিল লেখকরা ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে দায়ের করা তিনটি মামলা প্রত্যাহারের জন্য প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে— এমনটাই অভিযোগ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, শুধু এই ছয়জনই নয়, তদন্তে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, নুরুল আলম শাহীন দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিক লীগ নেতা পরিচয় দিয়ে পাবনা সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার ছত্রছায়ায় সেখানে চাঁদাবাজির স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছেন তিনি। ৫ আগস্টের পরে রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন হলেও নতুন পরিচয়ে বিএনপি সমর্থক প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থাকছেন তিনি। প্রতিদিন তিনি ৪ থেকে ৫ শত দলিলের জন্য অতিরিক্ত ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা আদায় করেন, যা মাসে কোটি টাকার অবৈধ অর্থের উৎস হিসেবে বিবেচিত। এই বিষয়ে নুরুল আলম শাহীন এর বক্তব্য জানার জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে, সনদ বাতিল হওয়া দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ইসহাক উল আলম বলেন, “আমরা শুধু এই চিঠি পেয়েছি যে আমাদের সার্টিফিকেট বাতিল করা হয়েছে। কেন বাতিল করা হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো নোটিশ আগে পাইনি। আমরা কোনো ঝামেলা করি না। যদি মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়, তাহলে আমাদের কিছু করার থাকবে না।”