বগুড়ার শাজাহানপুরে সাদিয়া আক্তার (২৪) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ ও তার দুই শিশুর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার খলিশাকান্দি গ্রামে তার বাড়ির শয়নকক্ষ থেকে লাশগুলো পাওয়া যায়। তবে, সাদিয়া কি আত্মহত্যা করেছে নাকি এটি পরিকল্পিত হত্যা, সে বিষয়ে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী শাহাদতকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পরিবারটির তিনজনই হারিয়ে ফেলায় স্বজনরা গভীর শোকের মধ্য দিয়ে কান্নাকাটি করছেন। শয়নকক্ষে পড়ে ছিল ছয় মাস বয়সী সাইফ ও তিন বছর বয়সী সাঈফার গলাকাটা নিথর দেহ। সাথে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলছিল তাদের মা সাদিয়ার মরদেহ। স্বজনরা জানান, ছয় বছর আগে পারিবারিকভাবে শাজাহানপুরের খলিশাকান্দি গ্রামের সেনা সদস্য শাহাদত হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয় সাদিয়ার। তবে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে প্রায়ই অশান্তি লেগে থাকত। গত শুক্রবার শাহাদত কর্মস্থল ময়মনসিংহ থেকে ছুটিতে বাড়ি ফেরেন। মঙ্গলবার সকালে পরিবারের জন্য রান্না শেষে সাদিয়া শয়নকক্ষে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন। তাদের দাবি, শাহাদত পাশের ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। পরে সকাল দশটার দিকে অনেক সময় ডাকাডাকি করেও যখন কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি, তখন দরজা ভেঙে দেখা যায়, সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না প্যাঁচানো সাদিয়ার ঝুলন্ত দেহ এবং দুই শিশুর গলাকাটা লাশ পড়ে রয়েছে। তবে, সাদিয়ার পরিবারের অভিযোগ, শাহাদত পরিকল্পিতভাবে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা করেছেন। একজন মা কখনোই তার সন্তানদের হত্যা করতে পারেন না। এ বিষয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান বলেন, স্ত্রীর ও সন্তানদের লাশ দেখে শাহাদত অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। তদন্তের পর এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।