, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

সেন্টমার্টিনে আজ থেকে রাতযাপনের সুযোগ, মানতে হবে যেসব শর্ত

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ২ ঘন্টা আগে
  • / ২ বার পড়া হয়েছে

সেন্টমার্টিন হলো দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ, যা কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। মনোমুগ্ধকর এই দ্বীপের স্বচ্ছ নীল জলরাশি, জীবন্ত প্রবাল প্রাচীর, নারকেল গাছের সারি এবং সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করলেও, কর্তৃপক্ষ ভ্রমণের উপর কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছিল। সেই নিষেধাজ্ঞার কারণে দ্বীপে রাত্রিযাপন বন্ধ ছিল। অবশেষে, দীর্ঘ ১০ মাসের নিষেধাজ্ঞার পর ১ ডিসেম্বর থেকে আবারও জাহাজ চলাচল শুরু হবে সেন্টমার্টিনে। রাতযাপনের সুবিধাও থাকছে। তবে, প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি পর্যটক এই প্রবাল দ্বীপে যেতে পারবেন না। কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া জেটিঘাট থেকে সকাল ৭টায় জাহাজ ছেড়ে যাবে। পরবর্তী দিন বেলা ৩টায় সেন্টমার্টিন থেকে ফেরত আসবে। এই কার্যক্রম ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এই দুই মাসের মধ্যে পর্যটকরা এই ভ্রমণে অংশ নিতে পারবেন। রোববার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের যাতায়াতের জন্য প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল মান্নান। সভায় পরিবেশ অধিদপ্তর, পর্যটন বোর্ড, পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভার শেষে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) শাহিদুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, জেলা প্রশাসন থেকে চারটি জাহাজের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, এমভি বার আউলিয়া ও কেয়ারি সিন্দাবাদ নামের তিনটি জাহাজ ১ ডিসেম্বর থেকে যাত্রা শুরু করবে। পর্যটকদের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন যাতে কোনও সমস্যা না হয়। পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক খন্দকার মাহমুদ পাশা বলেন, একবার ব্যবহৃত প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর জন্য নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাটে জাহাজে ওঠার সময় পর্যটকদের বিনামূল্যে অ্যালুমিনিয়ামের পানির বোতল দেওয়া হবে। সেন্টমার্টিন রুটে যাত্রীবাহী জাহাজের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, তিনটি জাহাজ সকাল পর্যন্ত টিকিট বিক্রি করবে, ফলে মোট যাত্রীর সংখ্যা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উপপরিচালক মহিবুল ইসলাম জানান, সেন্টমার্টিনে যাতায়াতের জন্য পর্যটকদের ১২টি নির্দেশনা মানতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করা। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে। পর্যটন বিভাগ থেকে ২০ স্বেচ্ছাসেবক (ভলান্টিয়ার) জেটিঘাটে থাকবে এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে। জানা গেছে, আগামী বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে আবারও ৯ মাসের জন্য দ্বীপে পর্যটক আসা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই এই মৌসুমে ভ্রমণের সময়সূচি এবং পর্যটকদের উপস্থিতিও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ১২ নির্দেশনার মধ্যে অন্যতম হলো, বিআইডব্লিউটিএ ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সেন্টমার্টিনে কোনো নৌযান চলাচল করবে না। পর্যটকদের অবশ্যই বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে। নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, ভ্রমণের সময় রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি বা বারবিকিউ পার্টি করা সম্পূর্ণ নিষেধ। কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা ক্রয়-বিক্রয়, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুক ও অন্যান্য সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষেধ। এ ছাড়া সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ কোনও মোটরচালিত যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। ভ্রমণের সময় নিষিদ্ধ হয়েছে পলিথিন বহন, একবার ব্যবহৃত প্লাস্টিকের প্যাকেট, প্লাস্টিকের চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, ৫০০ ও ১০০০ মিলিলিটারের প্লাস্টিক বোতল বহন। পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।


প্রিন্ট

নিউজটি শেয়ার করুন

সেন্টমার্টিনে আজ থেকে রাতযাপনের সুযোগ, মানতে হবে যেসব শর্ত

আপডেট সময় ২ ঘন্টা আগে

সেন্টমার্টিন হলো দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ, যা কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। মনোমুগ্ধকর এই দ্বীপের স্বচ্ছ নীল জলরাশি, জীবন্ত প্রবাল প্রাচীর, নারকেল গাছের সারি এবং সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করলেও, কর্তৃপক্ষ ভ্রমণের উপর কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছিল। সেই নিষেধাজ্ঞার কারণে দ্বীপে রাত্রিযাপন বন্ধ ছিল। অবশেষে, দীর্ঘ ১০ মাসের নিষেধাজ্ঞার পর ১ ডিসেম্বর থেকে আবারও জাহাজ চলাচল শুরু হবে সেন্টমার্টিনে। রাতযাপনের সুবিধাও থাকছে। তবে, প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি পর্যটক এই প্রবাল দ্বীপে যেতে পারবেন না। কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া জেটিঘাট থেকে সকাল ৭টায় জাহাজ ছেড়ে যাবে। পরবর্তী দিন বেলা ৩টায় সেন্টমার্টিন থেকে ফেরত আসবে। এই কার্যক্রম ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এই দুই মাসের মধ্যে পর্যটকরা এই ভ্রমণে অংশ নিতে পারবেন। রোববার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের যাতায়াতের জন্য প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল মান্নান। সভায় পরিবেশ অধিদপ্তর, পর্যটন বোর্ড, পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভার শেষে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) শাহিদুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, জেলা প্রশাসন থেকে চারটি জাহাজের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, এমভি বার আউলিয়া ও কেয়ারি সিন্দাবাদ নামের তিনটি জাহাজ ১ ডিসেম্বর থেকে যাত্রা শুরু করবে। পর্যটকদের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন যাতে কোনও সমস্যা না হয়। পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক খন্দকার মাহমুদ পাশা বলেন, একবার ব্যবহৃত প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর জন্য নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাটে জাহাজে ওঠার সময় পর্যটকদের বিনামূল্যে অ্যালুমিনিয়ামের পানির বোতল দেওয়া হবে। সেন্টমার্টিন রুটে যাত্রীবাহী জাহাজের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, তিনটি জাহাজ সকাল পর্যন্ত টিকিট বিক্রি করবে, ফলে মোট যাত্রীর সংখ্যা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উপপরিচালক মহিবুল ইসলাম জানান, সেন্টমার্টিনে যাতায়াতের জন্য পর্যটকদের ১২টি নির্দেশনা মানতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করা। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে। পর্যটন বিভাগ থেকে ২০ স্বেচ্ছাসেবক (ভলান্টিয়ার) জেটিঘাটে থাকবে এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে। জানা গেছে, আগামী বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে আবারও ৯ মাসের জন্য দ্বীপে পর্যটক আসা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই এই মৌসুমে ভ্রমণের সময়সূচি এবং পর্যটকদের উপস্থিতিও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ১২ নির্দেশনার মধ্যে অন্যতম হলো, বিআইডব্লিউটিএ ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সেন্টমার্টিনে কোনো নৌযান চলাচল করবে না। পর্যটকদের অবশ্যই বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে। নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, ভ্রমণের সময় রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি বা বারবিকিউ পার্টি করা সম্পূর্ণ নিষেধ। কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা ক্রয়-বিক্রয়, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুক ও অন্যান্য সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষেধ। এ ছাড়া সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ কোনও মোটরচালিত যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। ভ্রমণের সময় নিষিদ্ধ হয়েছে পলিথিন বহন, একবার ব্যবহৃত প্লাস্টিকের প্যাকেট, প্লাস্টিকের চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, ৫০০ ও ১০০০ মিলিলিটারের প্লাস্টিক বোতল বহন। পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।


প্রিন্ট