, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

ঘরে মিলল স্ত্রীসহ মুক্তিযোদ্ধার রক্তাক্ত মরদেহ

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ১৩ বার পড়া হয়েছে

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের উত্তর রহিমাপুর এলাকায় এক মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীর হত্যার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) গভীর রাতে তাদের নিজস্ব বাসভবনে এ নৃশংস ঘটনা সংঘটিত হয়। নিহত ব্যক্তিরা হলেন, মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় (৭৫) এবং তার স্ত্রী সুর্বণা রায় (৬০)। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন পুলিশ সুপার মারুফাত হুসেইন, সিআইডি, র‌্যাব, ডিবিসহ অন্যান্য তদন্ত সংস্থা। পুলিশ ও স্থানীয় জনগণ জানায়, রোববার ভোর সাড়ে ৭টার দিকে প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করলে কোনো সাড়া না পেয়ে মই দিয়ে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে। প্রধান দরজার চাবি দিয়ে দরজা খুলে তারা ডাইনিং রুমে দেখতে পান, যোগেশ চন্দ্র রায়ের রক্তাক্ত দেহ এবং রান্নাঘরে সুর্বণা রায়ের রক্তাক্ত মৃতদেহ। এরপর তারা পুলিশে খবর দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শী দীপক চন্দ্র রায় বলেন, তার পরিবার প্রায় ৪০-৫০ বছর ধরে যোগেশ চন্দ্র রায়ের বাড়ির দেখাশোনা করে আসছে। তিনি জানান, প্রতিদিন সকালে তারা কাজে যেতেন। আজ সকাল ৭টার দিকে ঘর থেকে কেউ বের না হওয়ায় সন্দেহ হয়। দীপক চন্দ্র রায় বলেন, ‘ডাকাডাকি করে কোনো শব্দ না পেয়ে আশেপাশের মানুষজনকে ডাকি। তারপর মই দিয়ে ভেতরে ঢুকে দেখি, ঘরে কেউ নেই। পরে ডাইনিং রুমের দরজা খুলে দাদুর রক্তাক্ত দেহ আর রান্নাঘরে দিদার মৃতদেহ দেখতে পাই।’

স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা জানান, নিহত যোগেশ চন্দ্র রায় একজন শিক্ষক ছিলেন। তিনি ২০১৭ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। তার দুই ছেলে রয়েছে— বড় ছেলে শোভেন চন্দ্র রায় জয়পুরহাটে এবং ছোট ছেলে রাজেশ খান্না চন্দ্র রায় ঢাকায় পুলিশে কাজ করেন। তারা স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে গ্রামে থাকতেন।

সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, হত্যাকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু মানুষ জড়ো হন। খবর পেয়ে উপস্থিত হন পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোনাব্বর হোসেন এবং মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেন। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেন বলেন, ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’

এসআই মো. আবু ছাইয়ুম বলেন, ‘প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী, দুইজনের মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে।’


প্রিন্ট

নিউজটি শেয়ার করুন

ঘরে মিলল স্ত্রীসহ মুক্তিযোদ্ধার রক্তাক্ত মরদেহ

আপডেট সময় ১২:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের উত্তর রহিমাপুর এলাকায় এক মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীর হত্যার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) গভীর রাতে তাদের নিজস্ব বাসভবনে এ নৃশংস ঘটনা সংঘটিত হয়। নিহত ব্যক্তিরা হলেন, মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় (৭৫) এবং তার স্ত্রী সুর্বণা রায় (৬০)। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন পুলিশ সুপার মারুফাত হুসেইন, সিআইডি, র‌্যাব, ডিবিসহ অন্যান্য তদন্ত সংস্থা। পুলিশ ও স্থানীয় জনগণ জানায়, রোববার ভোর সাড়ে ৭টার দিকে প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করলে কোনো সাড়া না পেয়ে মই দিয়ে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে। প্রধান দরজার চাবি দিয়ে দরজা খুলে তারা ডাইনিং রুমে দেখতে পান, যোগেশ চন্দ্র রায়ের রক্তাক্ত দেহ এবং রান্নাঘরে সুর্বণা রায়ের রক্তাক্ত মৃতদেহ। এরপর তারা পুলিশে খবর দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শী দীপক চন্দ্র রায় বলেন, তার পরিবার প্রায় ৪০-৫০ বছর ধরে যোগেশ চন্দ্র রায়ের বাড়ির দেখাশোনা করে আসছে। তিনি জানান, প্রতিদিন সকালে তারা কাজে যেতেন। আজ সকাল ৭টার দিকে ঘর থেকে কেউ বের না হওয়ায় সন্দেহ হয়। দীপক চন্দ্র রায় বলেন, ‘ডাকাডাকি করে কোনো শব্দ না পেয়ে আশেপাশের মানুষজনকে ডাকি। তারপর মই দিয়ে ভেতরে ঢুকে দেখি, ঘরে কেউ নেই। পরে ডাইনিং রুমের দরজা খুলে দাদুর রক্তাক্ত দেহ আর রান্নাঘরে দিদার মৃতদেহ দেখতে পাই।’

স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা জানান, নিহত যোগেশ চন্দ্র রায় একজন শিক্ষক ছিলেন। তিনি ২০১৭ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। তার দুই ছেলে রয়েছে— বড় ছেলে শোভেন চন্দ্র রায় জয়পুরহাটে এবং ছোট ছেলে রাজেশ খান্না চন্দ্র রায় ঢাকায় পুলিশে কাজ করেন। তারা স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে গ্রামে থাকতেন।

সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, হত্যাকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু মানুষ জড়ো হন। খবর পেয়ে উপস্থিত হন পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোনাব্বর হোসেন এবং মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেন। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেন বলেন, ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’

এসআই মো. আবু ছাইয়ুম বলেন, ‘প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী, দুইজনের মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে।’


প্রিন্ট