শেরপুরের শ্রীবরদীতে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভিডিও ধারণ করার সময় বন্য হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে ফারুক মিয়া (৪০) নামে এক কনটেন্ট নির্মাতার মৃত্যু হয়েছে। তিনি ঝিনাইগাতী উপজেলার ফাকরাবাদ গ্রামের সুরুজ আলীর ছেলে এবং পেশায় চা বিক্রেতা। সম্প্রতি বেশি আয় করার লক্ষ্য নিয়ে গারো পাহাড়ের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্ট তৈরি করতে থাকেন। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার মালাকোচার সোনাজুরি এলাকার ঘটনাটি ঘটে। বন বিভাগ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বালিজুড়ি পাহাড়ের টিলায় প্রায় দুটি সপ্তাহ ধরে ৩০-৪০টি বন্য হাতি একটি দলের মতো অবস্থান করে ছিল। সেই দিন বিকেল ৩টার দিকে মালাকোচা সোনাজুরি এলাকার একটি বাগানে হাতিগুলো অবস্থান নিলে খুবই উৎসাহী হয়ে কাছাকাছি গিয়ে ভিডিও ধারণের চেষ্টা করেন ফারুক মিয়া। ঠিক তখনই হাতির দল তার দিকে তেড়ে আসে এবং আক্রমণ করে। হাতির পা ও শুর দিয়ে আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে স্থানীয়রা তাকে শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। স্থানীয়রা আরও জানিয়েছেন, সম্প্রতি ফারুক ফেসবুকে হাতির ভিডিও আপলোড করতে শুরু করেন এবং অনলাইনে আয় করার জন্য গারো পাহাড়ের বিভিন্ন কন্টেন্ট তৈরি করছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী বসির মিয়া বলেন, “ভিডিও তোলার জন্য ফারুক একদম হাতির কাছাকাছি চলে যায়। এ সময় দৌড়াতে গিয়ে মাটিতে পড়ে গেলে হাতি তার পা ও শুর দিয়ে মুখ, মাথা, পা ও পেট আঘাত করে। পরে একটি ভ্যানগাড়ি দিয়ে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।” শ্রীবরদী বালিজুড়ি রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা সুমন মিয়া বলেন, “সম্প্রতি কিছু অতিরিক্ত উৎসাহী কনটেন্ট নির্মাতা হাতিকে উত্ত্যক্ত করছে। আমরা মাইকিং ও প্রচারণা চালাচ্ছি এবং সীমিত জনবল দিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করছি। আজ বিকেলে ভিডিও করতে গিয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।” শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বক্তব্য, ডা. মো. মফিদুল ইসলাম বলেন, “হাতির আক্রমণে আহত ফারুককে হাসপাতালে আনা হয়। আমাদের চিকিৎসা দেওয়া হলেও তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তিনি বাঁচতে পারেননি। তার লাশ এখন হাসপাতালে রয়েছে।” শ্রীবরদী থানার ওসি মোহাম্মদ নুরুল আলম বলেন, “লাশ বর্তমানে হাসপাতালেই রয়েছে। এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”