জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রবীণ যুগ্ম আহ্বায়ক ও নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের সদ্য নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল হান্নান মাসউদের তিন সমর্থকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে চরকিং ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম শুল্লকিয়া গ্রামের কিল্লার বাজার এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। রাতের মধ্যে আহতদের হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভর্তি করা হয়। আহতরা হলেন, মধ্যম শুল্লকিয়া গ্রামের মো. ওমর ফারুকের ছেলে মো. হাছান উদ্দিন, মো. সালাউদ্দিনের ছেলে এমদাদ হোসেন ও এমরান হোসেনের ছেলে রাজিব উদ্দিন। জানা গেছে, এইসব ব্যক্তি সবাই এনসিপি’র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং নিয়মিত শাপলা কলি প্রতীকের পক্ষে প্রচার চালিয়ে আসছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাতিয়ার নতুন জেগে ওঠা চর জাগলার জমির বন্দোবস্ত নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। অতীতে ভূমিদস্যুদের কাছ থেকে নতুন চর ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা দিয়ে কিনে নেওয়া হত বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে এনসিপি’র প্রার্থী আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ভূমিহীনদের জন্য সরকারি বন্দোবস্ত হলে জমি কিনতে টাকা দিতে হবে না। তিনি আরও জানান, ভূমিহীনদের পক্ষে কথা বলায় হামলার শিকার হন মো. হাছান উদ্দিন। শামসুদ্দিনের নেতৃত্বে একদল ব্যক্তি তাকে দা দিয়ে পিঠ ও বুক কুপিয়ে জখম করে, ডান হাত ভেঙে দেয়। এ সময় এমদাদ হোসেনকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। রক্ষার জন্য এগিয়ে আসা রাজিব উদ্দিনও আহত হন। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। গুরুতর আহত মো. হাছান উদ্দিন বলেন, ‘ভূমিহীনদের পক্ষে কথা বলায় আব্দুল মান্নান, সুমন উদ্দিন, মোসলেহ উদ্দিন, আলাউদ্দিন, আবদুল হক ধনু, সাকিল, সিরাজ, শামসুদ্দিন ও মহিউদ্দিন আমাদের ওপর হামলা চালায়। তারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপের চিহ্ন রয়েছে। তারা আগে আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল, কিন্তু ৫ আগস্টের পরে দল পরিবর্তন করেছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’ এই অভিযোগ অস্বীকার করে বাজারের এক ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন বলেন, ‘ভূমি বিরোধের কারণে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। আমি এতে জড়িত নই।’ শামসুদ্দিন বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে এসে প্রথমে এনসিপি’র লোকজন হামলা চালায়। কারা হামলা করেছে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না, তবে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’ এনসিপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের এমপি প্রার্থী আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘এ ধরনের হামলা গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার ওপর সরাসরি আঘাত। রাজনৈতিক মতভিন্নতা থাকতে পারে, কিন্তু সন্ত্রাস ও সহিংসতার কোনো স্থান নেই। হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’ হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইফুল আলম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং আহতদের সাথে হাসপাতালে কথা বলেছে। এ ঘটনায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।