, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

ময়মনসিংহে নিহত হিন্দু যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির প্রমাণ পায়নি র‌্যাব

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০ ঘন্টা আগে
  • / ৪ বার পড়া হয়েছে

ময়মনসিংহের ভালুকায় গণপিটুনিতে নিহত হিন্দু যুবকের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অবমাননার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। ধর্মীয় অবমাননা সংক্রান্ত কোনো তথ্য বা সাক্ষ্য পাওয়া যায়নি বলেও জানায় এই সংস্থা। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে র‌্যাব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য প্রকাশ করেন র‍্যাব-১৪ এর পরিচালক নাঈমুল হাসান। এ সময় তিনি আরও জানান, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর মধ্যে সাতজন র‍্যাবের হাতে আটক এবং তিনজন পুলিশি হেফাজতে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন— লিমন সরকার (১৯), তারেক হোসেন (১৯), মানিক মিয়া (২০), এরশাদ আলী (৩৯), নিজুম উদ্দিন (২০), আলমগীর হোসেন (৩৮) এবং মিরাজ হোসেন আকন (৪৬)। অপরদিকে, পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে— আজমল হাসান সগীর (২৬), শাহিন মিয়া (১৯) এবং নাজমুল। হত্যার পর গাছের ডালে ঝুলিয়ে লাশে অগ্নিসংযোগের ঘটনা অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন র‍্যাব-১৪ এর পরিচালক। তিনি আরও জানান, দিপুকে জনতার হাতে তুলে দেওয়ার আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়নি; ফলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়। প্রশ্নের জবাবে তিনি জানিয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতা নেই। বাকি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার জন্য তৎপরতা চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে, নিহত দিপু চন্দ্র দাসের চাচাতো ভাই কার্তিক চন্দ্র দাস সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “কারখানার ভিতরে অনেক কিছু ঘটেছে,” তাই তার মতে, এ কারণেই তার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। র‍্যাব জানায়, ঘটনা শুরু হয় বিকাল পাঁচটায়, তবে পুলিশকে কল করা হয় রাত আটটায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর কারখানার শ্রমিকরা দিপু চন্দ্র দাসের ওপর হামলা শুরু করে। এ সময় তারা অভিযোগ করে, দিপু মহানবী (সাঃ)-কে কটূক্তি করেছেন। ছড়িয়ে পড়ে, দিপু চা দোকানে বসে এমন মন্তব্য করেছেন। খবর ছড়িয়ে পড়লে কারখানার বাইরেও অনেক মানুষ জড়ো হয়ে দিপুকে হাতে তুলে নেওয়ার দাবিতে জড়ো হয়। ওই সময় এলাকার কারখানাগুলোর ছুটির জন্য অনেক মানুষ দ্রুত জমায়েত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে কারখানার প্রডাকশন ম্যানেজার দিপুকে বরখাস্ত করে বাইরে পাঠিয়ে দেন বলে জানায় র‍্যাব। এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র‍্যাব জানায়, “অজ্ঞাত উত্তেজিত জনতা দিপু চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে নবী ও ধর্মের অবমাননার অভিযোগ এনে, গত বৃহস্পতিবার রাত নয়টায়, তাকে জোরপূর্বক কারখানা থেকে বের করে দাঙ্গা সৃষ্টি করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে।” পরে দেহ জামিরদিয়া স্কয়ার মাস্টারবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের মাঝখানে আইল্যান্ডের গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার এক অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, “ময়মনসিংহে এক হিন্দু ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে নিন্দা জানাই। নতুন বাংলাদেশে এই ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই। এই নৃশংস অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।”


প্রিন্ট

নিউজটি শেয়ার করুন

ময়মনসিংহে নিহত হিন্দু যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির প্রমাণ পায়নি র‌্যাব

আপডেট সময় ১০ ঘন্টা আগে

ময়মনসিংহের ভালুকায় গণপিটুনিতে নিহত হিন্দু যুবকের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অবমাননার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। ধর্মীয় অবমাননা সংক্রান্ত কোনো তথ্য বা সাক্ষ্য পাওয়া যায়নি বলেও জানায় এই সংস্থা। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে র‌্যাব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য প্রকাশ করেন র‍্যাব-১৪ এর পরিচালক নাঈমুল হাসান। এ সময় তিনি আরও জানান, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর মধ্যে সাতজন র‍্যাবের হাতে আটক এবং তিনজন পুলিশি হেফাজতে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন— লিমন সরকার (১৯), তারেক হোসেন (১৯), মানিক মিয়া (২০), এরশাদ আলী (৩৯), নিজুম উদ্দিন (২০), আলমগীর হোসেন (৩৮) এবং মিরাজ হোসেন আকন (৪৬)। অপরদিকে, পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে— আজমল হাসান সগীর (২৬), শাহিন মিয়া (১৯) এবং নাজমুল। হত্যার পর গাছের ডালে ঝুলিয়ে লাশে অগ্নিসংযোগের ঘটনা অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন র‍্যাব-১৪ এর পরিচালক। তিনি আরও জানান, দিপুকে জনতার হাতে তুলে দেওয়ার আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়নি; ফলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়। প্রশ্নের জবাবে তিনি জানিয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতা নেই। বাকি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার জন্য তৎপরতা চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে, নিহত দিপু চন্দ্র দাসের চাচাতো ভাই কার্তিক চন্দ্র দাস সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “কারখানার ভিতরে অনেক কিছু ঘটেছে,” তাই তার মতে, এ কারণেই তার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। র‍্যাব জানায়, ঘটনা শুরু হয় বিকাল পাঁচটায়, তবে পুলিশকে কল করা হয় রাত আটটায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর কারখানার শ্রমিকরা দিপু চন্দ্র দাসের ওপর হামলা শুরু করে। এ সময় তারা অভিযোগ করে, দিপু মহানবী (সাঃ)-কে কটূক্তি করেছেন। ছড়িয়ে পড়ে, দিপু চা দোকানে বসে এমন মন্তব্য করেছেন। খবর ছড়িয়ে পড়লে কারখানার বাইরেও অনেক মানুষ জড়ো হয়ে দিপুকে হাতে তুলে নেওয়ার দাবিতে জড়ো হয়। ওই সময় এলাকার কারখানাগুলোর ছুটির জন্য অনেক মানুষ দ্রুত জমায়েত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে কারখানার প্রডাকশন ম্যানেজার দিপুকে বরখাস্ত করে বাইরে পাঠিয়ে দেন বলে জানায় র‍্যাব। এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র‍্যাব জানায়, “অজ্ঞাত উত্তেজিত জনতা দিপু চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে নবী ও ধর্মের অবমাননার অভিযোগ এনে, গত বৃহস্পতিবার রাত নয়টায়, তাকে জোরপূর্বক কারখানা থেকে বের করে দাঙ্গা সৃষ্টি করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে।” পরে দেহ জামিরদিয়া স্কয়ার মাস্টারবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের মাঝখানে আইল্যান্ডের গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার এক অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, “ময়মনসিংহে এক হিন্দু ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে নিন্দা জানাই। নতুন বাংলাদেশে এই ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই। এই নৃশংস অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।”


প্রিন্ট