, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

দলীয় প্রার্থীর প্রচারে থেকেও মনোনয়নপত্র নিলেন সাক্কু

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ৩ ঘন্টা আগে
  • / ৪ বার পড়া হয়েছে

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুইবার ধারাবাহিকভাবে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করে দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু আবারও নতুন রূপে চমক দেখিয়েছেন। বিএনপি প্রার্থীর প্রচার চালানোর সময়ই হঠাৎ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাক্কুর মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের খবর ছড়িয়ে পড়লে নতুন করে কৌতূহল ও আলোচনা তৈরি হয়েছে। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে ২০২২ সালের কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য মনিরুল হক সাক্কুকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল। তবে সম্প্রতি ঢাকায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক ও পরে দলের প্রাথমিক মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করে প্রচারে অংশ নেওয়ায় তিনি আবারও আলোচনায় আসেন। এর ধারাবাহিকতায় রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকালে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মু. রেজা হাসানের কাছ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন মনিরুল হক সাক্কুর প্রতিনিধিরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা, আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা মাস্টার, আজিজ গুহ কলেজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক মিঠু, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি আজাহার উদ্দিন বাপ্পি, ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. কবির হোসেন মজুমদার, মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইকরাম হোসেন ইকু, আব্দুল হালিম ও যুবদল নেতা জুয়েল রানা। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা-৬ (সদর ও সদর দক্ষিণ) আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল হক চৌধুরী। অন্যদিকে একই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন দলের আরেক উপদেষ্টা হাজি আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, যিনি মনোনয়ন দাবিতে নিজ সমর্থকদের নিয়ে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। সাক্কুর ঘনিষ্ঠ বেশ কিছু বিএনপি নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, হাজি ইয়াছিনের সঙ্গে সাক্কুর সম্পর্ক দীর্ঘদিনের বৈরি। এই কারণে কৌশলগত সিদ্ধান্ত হিসেবে তিনি এবার দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রবীণ নেতার পক্ষে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে মনোনয়ন ফরম কেনার ঘোষণা রাজনৈতিক চাপ ও বিভাজনের অংশ বলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন। ২০২২ সালের সিটি নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করায় সাক্কুকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। ওই নির্বাচনে বিজয়ী হন নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে রিফাতের মৃত্যু হলে ২০২৪ সালের ৯ মার্চ উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন সাক্কু। ওই নির্বাচনে বিজয়ী হন ডা. তাহসিন বাহার সূচনা। তাছাড়াও, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগে থেকেই সাক্কুর দলে ফিরতে গুঞ্জন শুরু হয়। ২৬ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠকে তিনি সদর আসনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন। মনোনয়ন ফরম কেনার ব্যাপারে মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘মনোনয়ন কেনার জন্য কোথাও কোনো সমস্যা নেই। আমি এখনও মনিরুল হক চৌধুরীর জন্যই ভোট চাইছি। হাজি ইয়াছিনের চেয়ে বেশি মাঠে কাজ করছি। আজ সকালে প্রতিনিধির মাধ্যমে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছি, নিজে গিয়ে জমা দেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘হাজি ইয়াছিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে তার জনপ্রিয়তা পরীক্ষাই হয়ে যাবে। সাক্কুর ঘোষণা নিয়ে হাজি আমিন উর রশিদ ইয়াছিন বলেছেন, ‘মনোনয়ন ফরম কেনা সবার গণতান্ত্রিক অধিকার। দলীয় মনোনয়ন না পেলে আমি কি করব, তা দলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পরে জানাব।’ এই বিষয়ে বিএনপি প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘মনোনয়ন ফরম কেনা সাক্কুর নিজস্ব কৌশল হতে পারে। তবে আমি নিশ্চিত, সে এখনও আমার পক্ষে মাঠে কাজ করছে।’


প্রিন্ট
ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

দলীয় প্রার্থীর প্রচারে থেকেও মনোনয়নপত্র নিলেন সাক্কু

আপডেট সময় ৩ ঘন্টা আগে

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুইবার ধারাবাহিকভাবে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করে দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু আবারও নতুন রূপে চমক দেখিয়েছেন। বিএনপি প্রার্থীর প্রচার চালানোর সময়ই হঠাৎ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাক্কুর মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের খবর ছড়িয়ে পড়লে নতুন করে কৌতূহল ও আলোচনা তৈরি হয়েছে। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে ২০২২ সালের কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য মনিরুল হক সাক্কুকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল। তবে সম্প্রতি ঢাকায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক ও পরে দলের প্রাথমিক মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করে প্রচারে অংশ নেওয়ায় তিনি আবারও আলোচনায় আসেন। এর ধারাবাহিকতায় রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকালে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মু. রেজা হাসানের কাছ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন মনিরুল হক সাক্কুর প্রতিনিধিরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা, আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা মাস্টার, আজিজ গুহ কলেজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক মিঠু, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি আজাহার উদ্দিন বাপ্পি, ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. কবির হোসেন মজুমদার, মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইকরাম হোসেন ইকু, আব্দুল হালিম ও যুবদল নেতা জুয়েল রানা। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা-৬ (সদর ও সদর দক্ষিণ) আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল হক চৌধুরী। অন্যদিকে একই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন দলের আরেক উপদেষ্টা হাজি আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, যিনি মনোনয়ন দাবিতে নিজ সমর্থকদের নিয়ে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। সাক্কুর ঘনিষ্ঠ বেশ কিছু বিএনপি নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, হাজি ইয়াছিনের সঙ্গে সাক্কুর সম্পর্ক দীর্ঘদিনের বৈরি। এই কারণে কৌশলগত সিদ্ধান্ত হিসেবে তিনি এবার দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রবীণ নেতার পক্ষে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে মনোনয়ন ফরম কেনার ঘোষণা রাজনৈতিক চাপ ও বিভাজনের অংশ বলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন। ২০২২ সালের সিটি নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করায় সাক্কুকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। ওই নির্বাচনে বিজয়ী হন নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে রিফাতের মৃত্যু হলে ২০২৪ সালের ৯ মার্চ উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন সাক্কু। ওই নির্বাচনে বিজয়ী হন ডা. তাহসিন বাহার সূচনা। তাছাড়াও, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগে থেকেই সাক্কুর দলে ফিরতে গুঞ্জন শুরু হয়। ২৬ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠকে তিনি সদর আসনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন। মনোনয়ন ফরম কেনার ব্যাপারে মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘মনোনয়ন কেনার জন্য কোথাও কোনো সমস্যা নেই। আমি এখনও মনিরুল হক চৌধুরীর জন্যই ভোট চাইছি। হাজি ইয়াছিনের চেয়ে বেশি মাঠে কাজ করছি। আজ সকালে প্রতিনিধির মাধ্যমে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছি, নিজে গিয়ে জমা দেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘হাজি ইয়াছিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে তার জনপ্রিয়তা পরীক্ষাই হয়ে যাবে। সাক্কুর ঘোষণা নিয়ে হাজি আমিন উর রশিদ ইয়াছিন বলেছেন, ‘মনোনয়ন ফরম কেনা সবার গণতান্ত্রিক অধিকার। দলীয় মনোনয়ন না পেলে আমি কি করব, তা দলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পরে জানাব।’ এই বিষয়ে বিএনপি প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘মনোনয়ন ফরম কেনা সাক্কুর নিজস্ব কৌশল হতে পারে। তবে আমি নিশ্চিত, সে এখনও আমার পক্ষে মাঠে কাজ করছে।’


প্রিন্ট