, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo নওগাঁয় ভুয়া পুলিশ চক্রের ৪জন গ্রেপ্তার Logo জামায়াতের আমিরের সঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ Logo নওগাঁয় ব্যতিক্রমীভাবে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ ও মৎস্যজীবী সমাবেশ নৌকাবাইচ ও হাঁস খেলা Logo আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা: নওগাঁয় প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্টিত জেলায় এ বছর ৮৮১টি মন্ডপে শারদ উৎসব পালিত হবে Logo নওগাঁয় সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন Logo এ বিজয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর Logo জাবিতে দলীয় লেজুড়বৃত্তির রাজনৈতিক চর্চা বন্ধ করব Logo জাবিতে দলীয় লেজুড়বৃত্তির রাজনৈতিক চর্চা বন্ধ করব Logo এ বিজয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর Logo জাবিতে দলীয় লেজুড়বৃত্তির রাজনৈতিক চর্চা বন্ধ করব
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

পৃথক দুই মামলার রায় নওগাঁয় হত্যা মামলায় দুইজনের মৃত্যুদণ্ড ও ধর্ষণ মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৩:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
  • / ১০৩ বার পড়া হয়েছে

নওগাঁয় অপহরণ করে হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলায় দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিদের ১ লাখ টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

অপহরণ ও হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— মিশু (১৯), পিংকি (৩০)। এছাড়াও এ মামলায় দুই আসামি হুজাইফা এবং সাজু আহমেদের ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়ায় তাদের ১০ বছর আটকাদেশ দেওয়া হয়।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— মোরশেদ (৩৫), রবিউল (৩৮)। এ মামলায় সুলতানা পারভিন নামে এক নারীকে খালাস প্রদান করা হয়েছে।

হত্যা মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৭ নভেম্বর নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার খাদাইল গ্রামের আল আমিন হোসেনের ১৪ বছরের ছেলে নাজমুল নামের এক স্কুলছাত্রকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করে তার বাবার কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন কয়েকজন যুবক। মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে পরের দিন আসামিরা নাজমুলকে হত্যা করে প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে আক্কেলপুর রেলগেটের উত্তর পাশে ডোবার মধ্যে ফেলে রাখে। পরে নাজমুলের বাবা বদলগাছী থানায় অভিযোগ করলে তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০ জনের সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ দুই আসামি মিশু ও পিংকিকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারক। একই সাথে তাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ মামলার আরও দুই আসামির বয়স ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়ায় তাদের ১০ বছর আটকাদেশ দেওয়া হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিশেষ কৌশলী এডভোকেট রেজাউল করিম এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী সাঈদ হোসেন মামলাটি পরিচালনা করেন।

ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মান্দা উপজেলার চকদেবীরাম গ্রামের এক মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে উপজেলার বালুবাজার গ্রামের মোরশেদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ওই মেয়েকে ধর্ষণ করে আসামি রবিউল ইসলাম। এসময় তিনি মোবাইলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রাখেন। পরবর্তীতে ওই মেয়েকে রবিউল বিয়ে না করায় মেয়ের পরিবার তাকে অন্য জায়গায় বিয়ে দেয়। এরপর আসামি রবিউল ওই মেয়ের স্বামীর কাছে ধর্ষণের ভিডিও পাঠান।

ধর্ষণের ভিডিও এবং ছবি দেখে ওই মেয়ের স্বামী তাকে তালাক দেন। কিছুদিন পরে ঢাকার বিক্রমপুরে ওই মেয়ের দ্বিতীয় বিয়ে হলে রবিউল তার দ্বিতীয় স্বামীর কাছেও ধর্ষণের ভিডিও পাঠান। তখন তার দ্বিতীয় স্বামী আইনি পরামর্শের কথা বলে ওই মেয়েকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। ধর্ষণের শিকার ওই মেয়ে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করলে মান্দা থানা পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সংশ্লিষ্টতা থাকার রিপোর্ট প্রদান করে। দীর্ঘদিন ধরে চলা এ মামলায় ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মোরশেদ এবং রবিউল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এ মামলায় সুলতানা পারভিন নামে আরেক আসামীর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাকে খালাস প্রদান করেছেন।

উভয় মামলার রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিশেষ কৌশলী এডভোকেট রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।


প্রিন্ট

নিউজটি শেয়ার করুন

পৃথক দুই মামলার রায় নওগাঁয় হত্যা মামলায় দুইজনের মৃত্যুদণ্ড ও ধর্ষণ মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

আপডেট সময় ০৩:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

নওগাঁয় অপহরণ করে হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলায় দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিদের ১ লাখ টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

অপহরণ ও হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— মিশু (১৯), পিংকি (৩০)। এছাড়াও এ মামলায় দুই আসামি হুজাইফা এবং সাজু আহমেদের ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়ায় তাদের ১০ বছর আটকাদেশ দেওয়া হয়।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— মোরশেদ (৩৫), রবিউল (৩৮)। এ মামলায় সুলতানা পারভিন নামে এক নারীকে খালাস প্রদান করা হয়েছে।

হত্যা মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৭ নভেম্বর নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার খাদাইল গ্রামের আল আমিন হোসেনের ১৪ বছরের ছেলে নাজমুল নামের এক স্কুলছাত্রকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করে তার বাবার কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন কয়েকজন যুবক। মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে পরের দিন আসামিরা নাজমুলকে হত্যা করে প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে আক্কেলপুর রেলগেটের উত্তর পাশে ডোবার মধ্যে ফেলে রাখে। পরে নাজমুলের বাবা বদলগাছী থানায় অভিযোগ করলে তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০ জনের সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ দুই আসামি মিশু ও পিংকিকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারক। একই সাথে তাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ মামলার আরও দুই আসামির বয়স ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়ায় তাদের ১০ বছর আটকাদেশ দেওয়া হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিশেষ কৌশলী এডভোকেট রেজাউল করিম এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী সাঈদ হোসেন মামলাটি পরিচালনা করেন।

ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মান্দা উপজেলার চকদেবীরাম গ্রামের এক মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে উপজেলার বালুবাজার গ্রামের মোরশেদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ওই মেয়েকে ধর্ষণ করে আসামি রবিউল ইসলাম। এসময় তিনি মোবাইলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রাখেন। পরবর্তীতে ওই মেয়েকে রবিউল বিয়ে না করায় মেয়ের পরিবার তাকে অন্য জায়গায় বিয়ে দেয়। এরপর আসামি রবিউল ওই মেয়ের স্বামীর কাছে ধর্ষণের ভিডিও পাঠান।

ধর্ষণের ভিডিও এবং ছবি দেখে ওই মেয়ের স্বামী তাকে তালাক দেন। কিছুদিন পরে ঢাকার বিক্রমপুরে ওই মেয়ের দ্বিতীয় বিয়ে হলে রবিউল তার দ্বিতীয় স্বামীর কাছেও ধর্ষণের ভিডিও পাঠান। তখন তার দ্বিতীয় স্বামী আইনি পরামর্শের কথা বলে ওই মেয়েকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। ধর্ষণের শিকার ওই মেয়ে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করলে মান্দা থানা পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সংশ্লিষ্টতা থাকার রিপোর্ট প্রদান করে। দীর্ঘদিন ধরে চলা এ মামলায় ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মোরশেদ এবং রবিউল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এ মামলায় সুলতানা পারভিন নামে আরেক আসামীর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাকে খালাস প্রদান করেছেন।

উভয় মামলার রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিশেষ কৌশলী এডভোকেট রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।


প্রিন্ট