অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) এস এন মো. নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো মামলা দায়ের করেছে, তবে দ্য ডেইলি স্টারের মামলা এখনো তদন্তাধীন। তিনি উল্লেখ করেন, ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে এ বিষয়ে মামলা করবে পুলিশ। ইতিমধ্যেই ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় চারটি আইনে মামলা করা হয়েছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন তিনি। নজরুল ইসলাম বলছেন, দুটো দৈনিক পত্রিকার হামলার ঘটনায় মোট ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে থানার পুলিশ ১৩ জন, সিটিসি ৩ জন ও ডিবি ১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
তিনি আরও জানান, অন্যান্য আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। চারটি আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের ঘটনায় কোন প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি, এইটাই পুলিশের বড় অর্জন বলে মনে করছে ডিএমপির এই কর্মকর্তা।
এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো, দ্য ডেইলি স্টার এবং দুটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয়ে সম্প্রতি হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে সাতজনের পরিচয় এখনই নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা হলেন: মো. কাশেম ফারুক, মো. সাইদুর রহমান, রাকিব হোসেন, মো. নাইম, ফয়সাল আহমেদ প্রান্ত, মো. সোহেল রানা ও মো. শফিকুল ইসলাম। এছাড়াও পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও গোয়েন্দা পুলিশ আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের পরিচয় যাচাই-বাছাই চলছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রোববার (২১ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জানিয়েছে, সাম্প্রতিক এসব ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ইতিমধ্যে ৩১ জনের প্রাথমিক শনাক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি, চট্টগ্রামে ভারতের সহকারী হাইকমিশনারের বাসভবনের কাছে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টাকারীদের মধ্যে তিনজনকে ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়েছে।
গোছের কাশেম ফারুক বগুড়ার আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া কাসেমুল উলুম মাদরাসার সাবেক ছাত্র ও ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা। মো. সাইদুর রহমান ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার নোয়াকান্দা গ্রামের বাসিন্দা।
শেরপুরের বাসিন্দা রাকিব হোসেনকে প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ভিডিও ফুটেজে শনাক্ত করা হয়েছে। তার আইডি থেকে ধ্বংসের ছবি পোস্ট করা হয়। তিনি ফেসবুকেও উসকানিমূলক পোস্ট করেছেন।
ঢাকার তেজগাঁওয়ের কুনিপাড়া এলাকার মো. নাইমকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়, তার সঙ্গে লুট হওয়া ৫০ হাজার টাকাও জব্দ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাইম স্বীকার করেছেন, তিনি মোট এক লাখ ২৩ হাজার টাকা লুট করেছেন। এই টাকা দিয়ে তিনি মোহাম্মদপুর থেকে একটি টিভি ও ফ্রিজ কিনেছেন, যা ইতিমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে।
ঢাকার কারওয়ান বাজার রেললাইন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার মো. সোহেল রানার বিরুদ্ধে মাদক ও অন্যান্য আইনে ১৩টি মামলা রয়েছে। একই এলাকার মো. শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে আগুন ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে দুটি মামলা রয়েছে। অন্যান্য গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলেও জানানো হয়েছে।
অপরদিকে, ১৮ ডিসেম্বর মধ্যরাতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।