অপরিকল্পিত কার্বন নিঃসরণের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা, নদীভাঙন, জলাবদ্ধতা ও পানির লবণাক্ততা এইসব ঝুঁকি মোকাবিলায় দেশে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এই উদ্যোগে ঋণ প্রদান করে সহায়তা দিয়ে আসছে। তবে চলতি বছর এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সময়ের (দ্বিতীয় প্রান্তিক) টেকসই ও সবুজ প্রকল্পে বিনিয়োগ কমে গেছে ৯ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, এই সময়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো মোট ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯৭৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছে টেকসই ও সবুজ প্রকল্পে। এর আগে জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে এই বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৫৮ হাজার ৫৮২ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমেছে টেকসই প্রকল্পে বিনিয়োগ। মার্চের শেষে এ খাতে অর্থায়নের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা, যা জুনের শেষে কমে এসে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার ১২৫ কোটি টাকায়। অর্থাৎ তিন মাসে কমেছে ৮ হাজার ৬৯৩ কোটি টাকা। বাংলাদেশের ব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী, এপ্রিল থেকে জুন সময়ে ব্যাংকগুলো টেকসই খাতে বিনিয়োগ করেছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দিয়েছে ২ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা। সবুজ বা পরিবেশবান্ধব প্রকল্পেও অর্থায়ন কমে গেছে। জুনের শেষে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সবুজ প্রকল্পে বিনিয়োগ ছিল ৭ হাজার ৮৪৯ কোটি টাকা, যা তিন মাস আগে ছিল ৮ হাজার ৭৬৩ কোটি টাকা। মার্চের শেষে এই খাতে বিনিয়োগ ছিল ৮ হাজার ৭৬৩ কোটি টাকা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এপ্রিল থেকে জুন সময়ে ব্যাংকগুলো সবুজ প্রকল্পে ঋণ দিয়েছে ৭ হাজার ৭০ কোটি টাকা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দিয়েছে ৭৭৮ কোটি টাকা। তবে সুখের খবর হলো, টেকসই কৃষিতে বিনিয়োগ বেড়েছে। জুন শেষে এ খাতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা, যা মার্চের তুলনায় ১ হাজার ৭১০ কোটি টাকা বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স নীতি অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো টেকসই অর্থায়নের ১১টি ক্যাটাগরির মধ্যে ৬৮টি পণ্যে ঋণ দিতে পারে। এর বেশিরভাগই সবুজ অর্থায়নের আওতায় অন্তর্ভুক্ত। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, চলমান ঋণের অন্তত ২০ শতাংশ টেকসই খাতে বিনিয়োগ করতে হবে ব্যাংকগুলোকে।