চলতি মাসের শুরুর দিক থেকে দেশের প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) প্রবাহ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রথম আট দিনে মোট ১০০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে। যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলে ডিসেম্বরের শেষে দেশের প্রবাসী আয় দাঁড়াতে পারে ৫ বিলিয়ন ডলারে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক সূচক হবে। অন্যদিকে, এই বিপুল পরিমাণ প্রবাসী আয়ের কারণে ব্যাংকগুলোতে ডলারের অতিরিক্ত সরবরাহ সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য বজায় রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১৩টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ২০ কোটি ২০ লাখ ডলার ক্রয় করেছে।
এনপিএ (মাল্টিপল প্রাইস অকশন) পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত এই ডলারের ক্রয় কার্যক্রমে এক্সচেঞ্জ রেট ছিল প্রতি ডলার ১২২ টাকা ২৭ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ২৯ পয়সা। এ বছর ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৫১৪ মিলিয়ন বা আড়াই বিলিয়ন ডলার ডলার ক্রয় হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান মঙ্গলবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জানানো হয়, এই মাসের ১ থেকে ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে ১০০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে ৮ ডিসেম্বর এসেছে ১৩ কোটি ১০ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে প্রবাসী আয় হয়েছিল ৮৩ কোটি ১০ লাখ ডলার। এ হিসেবে প্রবাসী আয় ২১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অর্থবছরের জুলাই থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৪০৪ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১ হাজার ১৯৬ কোটি ডলার। ফলে, এই সময়ে প্রবাসী আয় ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মতে, হুন্ডি প্রতিরোধে সরকারের ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগ, প্রণোদনা এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থার উন্নতি রেমিট্যান্সের পরিমাণ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এর ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। এছাড়াও, সদ্য সমাপ্ত নভেম্বর মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২৮৮ কোটি ৯৫ লাখ ডলার প্রেরণ করেছেন, যার বাংলাদেশি মুদ্রায় পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার ২৫২ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)।