বিতর্কিত অঙ্গভঙ্গির কারণে ‘বর্ণবাদী আচরণের’ জন্য শিরোপা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন মিস ফিনল্যান্ড সারা জাফস। সংস্থার মতে, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত একটি পোস্টের কারণে এই বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, যা ‘বর্ণবিদ্বেষমূলক আচরণ’ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। গত ১২ ডিসেম্বর সংস্থার ইনস্টাগ্রাম পেজে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়, যা সারা জাফসের ক্ষমাপ্রার্থনার কয়েক দিনের মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমসের খবর অনুযায়ী, ঘটনাটি শুরু হয় জোডেল নামে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মাধ্যমে। সেখানে দেখা যায়, তিনি আঙুল দিয়ে চোখের কোণ টানছেন। ছবির সঙ্গে ফিনিশ ভাষায় লেখা ছিল, “kiinalaisenkaa syömäs,” যার অর্থ— ‘চীনা ব্যক্তির সঙ্গে আমি খাবার খাচ্ছি’। এই অঙ্গভঙ্গি সাধারণত পূর্ব এশীয় জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বর্ণবিদ্বেষের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। পরে মিস ফিনল্যান্ড সংস্থার পক্ষ থেকে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘সারা জাফসের সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত বিষয়বস্তু ‘অপমানজনক, ক্ষতিকারক এবং মিস ফিনল্যান্ড প্রতিযোগিতার মূল মূল্যবোধের সম্পূর্ণ বিপরীত।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘মিস ফিনল্যান্ড সংস্থা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করে— আমরা কোনও ধরনের বর্ণবাদ বা বৈষম্যমূলক আচরণকে গ্রহণ করি না। আমরা সম্মান, সমতা, দায়িত্ব এবং মানব মর্যাদার মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে কাজ করি। এই নীতিগুলি আলোচনার বিষয় নয়।’ সংস্থা বিশেষ করে এশীয় সম্প্রদায়ের প্রতি ক্ষমা চেয়ে জানায়, বর্ণবাদ কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। ‘ফিনল্যান্ড ও ফিনিশ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে এই শিরোপা দেওয়া হয় ১৯৩১ সাল থেকে।’ সংস্থার মতে, সারা জাফসের এই আচরণ জাতীয়ভাবে একজন দায়িত্বশীল রোল মডেলের জন্য অপর্যাপ্ত। তবে শিরোপা হারানোর জন্য নিজেই ক্ষমা চেয়েছেন এই বিতর্কিত সুন্দরী। ৮ ডিসেম্বর সারা মিস ফিনল্যান্ড লিখেছিলেন, ‘আমি বুঝতে পেরেছি যে— আমার আচরণ অনেকের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে এবং আমি গভীরভাবে দুঃখিত। বিশেষ করে তাঁদের কাছে আমি ক্ষমা চাই, যারা ব্যক্তিগতভাবে এই পরিস্থিতিতে আঘাত পেয়েছেন। আমার উদ্দেশ্য কখনো কাউকে আঘাত দেওয়া ছিল না।’ ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেটেরি অর্পো এশিয়ার দেশগুলোর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বলেন, এই ধরনের পোস্ট ফিনল্যান্ডের মূল মূল্যবোধের সঙ্গে খাপ খায় না। উল্লেখ্য, ফিনল্যান্ডের মিডিয়ায় এই ঘটনাকে ‘স্ল্যান্টেড আইস’ স্ক্যান্ডাল হিসেবে পরিচিত করা হয়। একই ধরনের অঙ্গভঙ্গি করেছেন ফিনস পার্টির কিছু রাজনীতিবিদও, যার মধ্যে রয়েছে ফিনল্যান্ডের সংসদের দুই সদস্য ও একজন ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রতিনিধি।