যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ভেনেজুয়েলায় কোন ধরনের সামরিক আক্রমণের পরিকল্পনা তারা করেনি। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সাথে আলাপচারিতায় তিনি এ কথা জানান। ট্রাম্পের এই বক্তব্য তার আগের সপ্তাহের মন্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক, যেখানে তিনি ভেনেজুয়েলায় মাদকবিরোধী অভিযান বিস্তৃত করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় অঞ্চলে ব্যাপক সামরিক উপস্থিতি রেখেছে। সেখানে বর্তমানে যুদ্ধবিমান, নৌবাহিনীর জাহাজ এবং অসংখ্য সৈন্য মোতায়েন রয়েছে। আগামী কিছু সপ্তাহের মধ্যে আরও শক্তিশালী করার জন্য সেখানে 'জেরাল্ড ফোর্ড' নামে বিমানবাহী রণতরী যোগ হবে। শুক্রবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, ‘না, ভেনেজুয়েলায় কোন হামলার পরিকল্পনা নেই।’ তবে তিনি ভবিষ্যতে এমন হামলা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি, নাকি এখনো সিদ্ধান্তের জন্য আলোচনা চলছে— এ বিষয়ে স্পষ্ট করেননি। এর আগে গত সপ্তাহে ট্রাম্প বলেছিলেন, মাদকবিরোধী অভিযানে এবার ‘স্থলভাগেও আঘাত হানবে’ যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের দাবি, মাদক চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত অন্তত ১৪টি নৌকা ইতোমধ্যে ধ্বংস করা হয়েছে। এসব অভিযানে ৬১ জন নিহত হয়েছে। ট্রাম্প আগেই নিশ্চিত করেছিলেন যে, তিনি ভেনেজুয়েলায় সিআইএ-কে গোপন অভিযান চালানোর অনুমতি দিয়েছেন। অন্যদিকে রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম জানিয়েছেন, ট্রাম্প তাকে বলেছেন যে, এশিয়া সফর শেষে ফিরে এসে ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়াকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য সামরিক অভিযান নিয়ে আইনপ্রণেতাদের জানানো হবে। একজন মার্কিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে বেশ কিছু বিকল্প পরিকল্পনা প্রস্তুত করেছে, যার মধ্যে ভেনেজুয়েলার সামরিক স্থাপনা ও রানওয়েতে আঘাতের পরিকল্পনাও রয়েছে। ভেনেজুয়েলার বিরোধী দল, মানবাধিকার সংস্থা এবং প্রতিবেশী কয়েকটি দেশ দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে প্রেসিডেন্ট Nicolás Maduro এর সরকার ও সেনাবাহিনী মাদক চোরাচালানে যুক্ত। তবে মাদুরো এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর আগস্টে মাদুরোর গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়ে ৫০ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে, যা আগের পুরস্কারের দ্বিগুণ। মার্কিন সেনাবাহিনীর চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে কয়েকজন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ, এসব অভিযান আন্তর্জাতিক যুদ্ধ আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।