, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুদ্ধের সম্ভাবনা নাকচ করলেন ট্রাম্প

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৫:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১২ বার পড়া হয়েছে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উল্লেখ করেছেন যে, ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুদ্ধের সম্ভাবনা খুবই কম। তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ক্ষমতা হয়তো শেষ হতে চলেছে। রোববার (২ নভেম্বর) সিবিএসের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘৬০ মিনিটস’-এ দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, যুক্তরাষ্ট্র কি ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে আগ্রাসনের পরিকল্পনা করছে? তার জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না, সন্দেহ রয়েছে। তবে তারা আমাদের সঙ্গে খুবই খারাপ আচরণ করছে।’ সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় সাগরে মাদকবাহী নৌযানের উপর হামলা চালিয়ে আসছে। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এসব অভিযান মাদক প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের জন্য জরুরি। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, মূল লক্ষ্য মাদুরো সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়া। এই অভিযোগ অস্বীকার করে ট্রাম্প বলেছেন, এটি ‘অসংখ্য বিষয়’ এর অংশ। সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ক্যারিবীয় ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় কমপক্ষে ৬৪ জন নিহত হয়েছেন। ফ্লোরিডার মার-আ-লাগো বাসভবন থেকে সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, ‘প্রতিটি নৌকায় গুলি চালানো হলে, তা ২৫ হাজার মানুষের জীবনে মাদক ছড়িয়ে দেয় এবং দেশের বিভিন্ন পরিবারকে ধ্বংস করে।’ স্থলভাগে যুক্তরাষ্ট্র কি কোনো হামলা চালাতে পারে—এ প্রশ্নে তিনি স্পষ্ট উত্তর দেননি। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এখনই কিছু বলতে চাই না। ভেনেজুয়েলা নিয়ে আমি কি করব বা করব না—তা জানাতে পারছি না।’ আগে থেকেই ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, তারা ‘নতুন যুদ্ধের সৃষ্টি’ করতে চাইছে। অন্যদিকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো দাবি করেছেন, নৌযানে হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমরা কাউকে আমাদের দেশে অনুপ্রবেশ করতে দেব না। তারা কঙ্গো থেকে আসে, বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ করে। বিশেষ করে ভেনেজুয়েলা থেকে— যেখানে গ্যাং রয়েছে।’ তিনি ‘ট্রেন দে আরাগুয়া’ নামে এক অপরাধী চক্রকে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর গ্যাং হিসেবে অভিহিত করেন। পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে যখন প্রশ্ন করা হয়, তিনি বলেন, ‘রাশিয়া ও চীন পারমাণবিক পরীক্ষা চালাচ্ছে, আমরাও কেন করব না?’ যদিও রাশিয়া ১৯৯০ সালের পরে ও চীন ১৯৯৬ সালের পরে কোনো পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটায়নি। ট্রাম্প বলেন, ‘তারা এসব বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলে না। আমি একমাত্র দেশ হতে চাই না যা পরীক্ষা করছে না।’ উত্তর কোরিয়া ও পাকিস্তানকেও তিনি পরীক্ষাকারী দেশের তালিকায় রাখেন। তবে মার্কিন জ্বালানি মন্ত্রী ক্রিস রাইট জানান, যুক্তরাষ্ট্র আসলে পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা করেনি। এসব পরীক্ষা হবে ‘অপ্রধান বিস্ফোরণ’, যা অস্ত্রের কাঠামো যাচাইয়ের জন্য করা হবে। সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প চলমান সরকারি অচলাবস্থাও নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি ডেমোক্র্যাটদের ‘পাগল’ বলে অভিহিত করে বলেন, ‘তারা পথ হারিয়ে ফেলেছে।’ তবে তিনি বিশ্বাস করেন, শেষ পর্যন্ত তারা বাধ্য হয়ে সমঝোতায় আসবে। এটি ছিল ট্রাম্পের সিবিএসের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎকার, ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে, যখন তিনি অভিযোগ করেছিলেন, তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সাক্ষাৎকারটি এমনভাবে সম্পাদিত হয়েছিল যাতে ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে সুবিধা হয়। পরে মামলার সমঝোতায় প্যারামাউন্ট ১ কোটি ৬০ লাখ ডলার পরিশোধ করে, তবে সেটি ট্রাম্পের ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্সিয়াল লাইব্রেরির তহবিলে যাবে—ব্যক্তিগতভাবে নয়। ট্রাম্প সর্বশেষ ‘৬০ মিনিটস’-এ অংশ নেন ২০২০ সালে, যখন তিনি সাংবাদিক লেসলি স্টাহলের প্রশ্নকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিযোগ করে সাক্ষাৎকার মাঝপথে ছেড়ে চলে যান। সূত্র: বিবিসি


প্রিন্ট

নিউজটি শেয়ার করুন

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুদ্ধের সম্ভাবনা নাকচ করলেন ট্রাম্প

আপডেট সময় ০৫:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উল্লেখ করেছেন যে, ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুদ্ধের সম্ভাবনা খুবই কম। তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ক্ষমতা হয়তো শেষ হতে চলেছে। রোববার (২ নভেম্বর) সিবিএসের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘৬০ মিনিটস’-এ দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, যুক্তরাষ্ট্র কি ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে আগ্রাসনের পরিকল্পনা করছে? তার জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না, সন্দেহ রয়েছে। তবে তারা আমাদের সঙ্গে খুবই খারাপ আচরণ করছে।’ সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় সাগরে মাদকবাহী নৌযানের উপর হামলা চালিয়ে আসছে। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এসব অভিযান মাদক প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের জন্য জরুরি। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, মূল লক্ষ্য মাদুরো সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়া। এই অভিযোগ অস্বীকার করে ট্রাম্প বলেছেন, এটি ‘অসংখ্য বিষয়’ এর অংশ। সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ক্যারিবীয় ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় কমপক্ষে ৬৪ জন নিহত হয়েছেন। ফ্লোরিডার মার-আ-লাগো বাসভবন থেকে সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, ‘প্রতিটি নৌকায় গুলি চালানো হলে, তা ২৫ হাজার মানুষের জীবনে মাদক ছড়িয়ে দেয় এবং দেশের বিভিন্ন পরিবারকে ধ্বংস করে।’ স্থলভাগে যুক্তরাষ্ট্র কি কোনো হামলা চালাতে পারে—এ প্রশ্নে তিনি স্পষ্ট উত্তর দেননি। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এখনই কিছু বলতে চাই না। ভেনেজুয়েলা নিয়ে আমি কি করব বা করব না—তা জানাতে পারছি না।’ আগে থেকেই ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, তারা ‘নতুন যুদ্ধের সৃষ্টি’ করতে চাইছে। অন্যদিকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো দাবি করেছেন, নৌযানে হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমরা কাউকে আমাদের দেশে অনুপ্রবেশ করতে দেব না। তারা কঙ্গো থেকে আসে, বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ করে। বিশেষ করে ভেনেজুয়েলা থেকে— যেখানে গ্যাং রয়েছে।’ তিনি ‘ট্রেন দে আরাগুয়া’ নামে এক অপরাধী চক্রকে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর গ্যাং হিসেবে অভিহিত করেন। পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে যখন প্রশ্ন করা হয়, তিনি বলেন, ‘রাশিয়া ও চীন পারমাণবিক পরীক্ষা চালাচ্ছে, আমরাও কেন করব না?’ যদিও রাশিয়া ১৯৯০ সালের পরে ও চীন ১৯৯৬ সালের পরে কোনো পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটায়নি। ট্রাম্প বলেন, ‘তারা এসব বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলে না। আমি একমাত্র দেশ হতে চাই না যা পরীক্ষা করছে না।’ উত্তর কোরিয়া ও পাকিস্তানকেও তিনি পরীক্ষাকারী দেশের তালিকায় রাখেন। তবে মার্কিন জ্বালানি মন্ত্রী ক্রিস রাইট জানান, যুক্তরাষ্ট্র আসলে পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা করেনি। এসব পরীক্ষা হবে ‘অপ্রধান বিস্ফোরণ’, যা অস্ত্রের কাঠামো যাচাইয়ের জন্য করা হবে। সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প চলমান সরকারি অচলাবস্থাও নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি ডেমোক্র্যাটদের ‘পাগল’ বলে অভিহিত করে বলেন, ‘তারা পথ হারিয়ে ফেলেছে।’ তবে তিনি বিশ্বাস করেন, শেষ পর্যন্ত তারা বাধ্য হয়ে সমঝোতায় আসবে। এটি ছিল ট্রাম্পের সিবিএসের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎকার, ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে, যখন তিনি অভিযোগ করেছিলেন, তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সাক্ষাৎকারটি এমনভাবে সম্পাদিত হয়েছিল যাতে ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে সুবিধা হয়। পরে মামলার সমঝোতায় প্যারামাউন্ট ১ কোটি ৬০ লাখ ডলার পরিশোধ করে, তবে সেটি ট্রাম্পের ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্সিয়াল লাইব্রেরির তহবিলে যাবে—ব্যক্তিগতভাবে নয়। ট্রাম্প সর্বশেষ ‘৬০ মিনিটস’-এ অংশ নেন ২০২০ সালে, যখন তিনি সাংবাদিক লেসলি স্টাহলের প্রশ্নকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিযোগ করে সাক্ষাৎকার মাঝপথে ছেড়ে চলে যান। সূত্র: বিবিসি


প্রিন্ট