, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

আরও তিন জিম্মির মৃতদেহ ফেরত দিয়েছে হামাস

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৫:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১৭ বার পড়া হয়েছে

গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির মাঝেও একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠার মধ্যে, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস রবিবার আরও তিনজন জিম্মার মৃতদেহ ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করেছে। ইসরায়েলি সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রেড ক্রসের মাধ্যমে গাজা থেকে তিনজনের দেহাবশেষসহ কফিন ইসরায়েলি সেনাদের কাছে পৌঁছেছে। এগুলো শনাক্তের জন্য ইসরায়েলে পাঠানো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, এগুলো সেই ১১ জন জিম্মার মধ্যে তিনজনের দেহ, যাদের ফিরিয়ে আনার জন্য ইসরায়েল চেষ্টা চালাচ্ছে। ইসরায়েল বলছে, হামাস দেহ হস্তান্তরে বিলম্ব করছে, তবে হামাসের দাবি— কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও তারা দ্রুত কাজ করছে। এই পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির পুরোপুরি বাস্তবায়ন আটকে দিয়েছে। এর আগে রবিবার সকালে গাজার উত্তর অংশে ইসরায়েলি বিমান হামলায় একজন নিহত হন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করে, ওই হামলায় তাদের বাহিনীকে হুমকি দেওয়া এক যোদ্ধাকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। গাজার আল-আহলি হাসপাতাল জানায়, গাজা শহরের শেজায়া এলাকার এক সবজি বাজারের কাছাকাছি হামলায় একজনের মৃত্যু হয়। জেরুজালেমে মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা গাজার এলাকাগুলোরও কিছু ঘাঁটি আছে, যেখানে হামাস এখনও রয়েছে, আমরা ধাপে ধাপে সেগুলো ধ্বংস করছি।’ অন্যদিকে, হামাস ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত সরকারের গণমাধ্যম কার্যালয়ের পরিচালক ইসমাইল আল-থাওবতা দাবি করেন, হামাস যোদ্ধারা যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করেনি। এই যুদ্ধবিরতির পর গাজায় লড়াই অনেকটাই কমে গেছে, ফলে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিজেদের ভাঙা ঘরে ফিরে যেতে পারছে। ইসরায়েল শহরাঞ্চল থেকে কিছু সেনা প্রত্যাহার করেছে এবং আরও মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, হামাস গাজায় থাকা ২০ জন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে, এর বিনিময়ে ইসরায়েল প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্ত করেছে। এছাড়া, হামাস ২৮ জন নিহত জিম্মার দেহ ফেরত দিতে সম্মত হয়েছে, এর বিনিময়ে ইসরায়েল ৩৬০ জন নিহত ফিলিস্তিনি যোদ্ধার দেহ ফেরত দেবে। রবিবার পর্যন্ত, হামাস ১৭টি মরদেহ হস্তান্তর করেছে। তবে সহিংসতা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২৩৬ জন নিহত হয়েছেন, যার অর্ধেকেরও বেশি একদিনে নিহত হয় ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক হামলায়। ইসরায়েল জানায়, তাদের তিন সেনা নিহত হয়েছে এবং বহু হামাস যোদ্ধাকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। এই যুদ্ধবিরতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হয়েছে। দুই পক্ষই ওয়াশিংটনের কাছে অভিযোগ করেছে যে, অপর পক্ষ যুদ্ধবিরতি মানছে না। শনিবার, যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন ইসরায়েলি সামরিক প্রধান এয়াল জামিরের সঙ্গে গাজা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন। নেতানিয়াহু বলেন, গাজায় ইসরায়েলের সব কার্যক্রম ওয়াশিংটনকে জানানো হয়। তবে, হামাসের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি মানতে বাধ্য করতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বর্তমানে প্রায় ২০০ মার্কিন সেনা দক্ষিণ ইসরায়েলে অবস্থান করছে, যুদ্ধবিরতি তদারকি ও গাজায় ভবিষ্যৎ শান্তিরক্ষী বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য। যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপে এখনো বেশ অগ্রগতি হয়নি। হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের সময়সূচি নিয়ে বড় বাধা রয়ে গেছে।


প্রিন্ট
ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

আরও তিন জিম্মির মৃতদেহ ফেরত দিয়েছে হামাস

আপডেট সময় ০৫:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫

গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির মাঝেও একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠার মধ্যে, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস রবিবার আরও তিনজন জিম্মার মৃতদেহ ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করেছে। ইসরায়েলি সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রেড ক্রসের মাধ্যমে গাজা থেকে তিনজনের দেহাবশেষসহ কফিন ইসরায়েলি সেনাদের কাছে পৌঁছেছে। এগুলো শনাক্তের জন্য ইসরায়েলে পাঠানো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, এগুলো সেই ১১ জন জিম্মার মধ্যে তিনজনের দেহ, যাদের ফিরিয়ে আনার জন্য ইসরায়েল চেষ্টা চালাচ্ছে। ইসরায়েল বলছে, হামাস দেহ হস্তান্তরে বিলম্ব করছে, তবে হামাসের দাবি— কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও তারা দ্রুত কাজ করছে। এই পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির পুরোপুরি বাস্তবায়ন আটকে দিয়েছে। এর আগে রবিবার সকালে গাজার উত্তর অংশে ইসরায়েলি বিমান হামলায় একজন নিহত হন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করে, ওই হামলায় তাদের বাহিনীকে হুমকি দেওয়া এক যোদ্ধাকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। গাজার আল-আহলি হাসপাতাল জানায়, গাজা শহরের শেজায়া এলাকার এক সবজি বাজারের কাছাকাছি হামলায় একজনের মৃত্যু হয়। জেরুজালেমে মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা গাজার এলাকাগুলোরও কিছু ঘাঁটি আছে, যেখানে হামাস এখনও রয়েছে, আমরা ধাপে ধাপে সেগুলো ধ্বংস করছি।’ অন্যদিকে, হামাস ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত সরকারের গণমাধ্যম কার্যালয়ের পরিচালক ইসমাইল আল-থাওবতা দাবি করেন, হামাস যোদ্ধারা যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করেনি। এই যুদ্ধবিরতির পর গাজায় লড়াই অনেকটাই কমে গেছে, ফলে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিজেদের ভাঙা ঘরে ফিরে যেতে পারছে। ইসরায়েল শহরাঞ্চল থেকে কিছু সেনা প্রত্যাহার করেছে এবং আরও মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, হামাস গাজায় থাকা ২০ জন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে, এর বিনিময়ে ইসরায়েল প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্ত করেছে। এছাড়া, হামাস ২৮ জন নিহত জিম্মার দেহ ফেরত দিতে সম্মত হয়েছে, এর বিনিময়ে ইসরায়েল ৩৬০ জন নিহত ফিলিস্তিনি যোদ্ধার দেহ ফেরত দেবে। রবিবার পর্যন্ত, হামাস ১৭টি মরদেহ হস্তান্তর করেছে। তবে সহিংসতা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২৩৬ জন নিহত হয়েছেন, যার অর্ধেকেরও বেশি একদিনে নিহত হয় ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক হামলায়। ইসরায়েল জানায়, তাদের তিন সেনা নিহত হয়েছে এবং বহু হামাস যোদ্ধাকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। এই যুদ্ধবিরতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হয়েছে। দুই পক্ষই ওয়াশিংটনের কাছে অভিযোগ করেছে যে, অপর পক্ষ যুদ্ধবিরতি মানছে না। শনিবার, যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন ইসরায়েলি সামরিক প্রধান এয়াল জামিরের সঙ্গে গাজা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন। নেতানিয়াহু বলেন, গাজায় ইসরায়েলের সব কার্যক্রম ওয়াশিংটনকে জানানো হয়। তবে, হামাসের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি মানতে বাধ্য করতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বর্তমানে প্রায় ২০০ মার্কিন সেনা দক্ষিণ ইসরায়েলে অবস্থান করছে, যুদ্ধবিরতি তদারকি ও গাজায় ভবিষ্যৎ শান্তিরক্ষী বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য। যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপে এখনো বেশ অগ্রগতি হয়নি। হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের সময়সূচি নিয়ে বড় বাধা রয়ে গেছে।


প্রিন্ট