যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনের জন্য ভোটদান প্রক্রিয়া মঙ্গলবার শুরু হয়েছে। এই নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জোহরান মামদানি। জুন মাসে অনুষ্ঠিত ডেমোক্র্যাট প্রাইমারিতে অপ্রত্যাশিত জয় পাওয়ার পর থেকেই তিনি সংবাদ শিরোনামে আছেন। তরুণ ভোটারদের মধ্যে তিনি বেশ জনপ্রিয় বলে জানিয়েছে আল জাজিরা। সোমবার কুইন্সের অ্যাস্টোরিয়ায় শেষ নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে মামদানি বলেন, “এই হাতগুলোই আমাদের এই মহানগরে ইতিহাস রচনার পথ দেখিয়েছে। যখন আপনি শ্রমজীবী মানুষের জন্য সংগ্রাম করেন, তখন আপনি সত্যিকার অর্থে আপনার শহরের রাজনীতি পুনর্গঠন করতে সক্ষম হন।” এর কয়েক ঘণ্টা আগে সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমোকে প্রকাশ্যে সমর্থন দেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, নিউইয়র্কবাসীদের ‘কমিউনিস্টের’ পরিবর্তে অন্তত একজন ‘খারাপ ডেমোক্র্যাট’ নির্বাচিত হওয়া উচিত। এর আগে ট্রাম্প মামদানিকে ‘কমিউনিস্ট’ বলে অনেকবার সমালোচনা করেছেন। অল্প সময়ের মধ্যে বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্কও কুওমোকে সমর্থন জানান। কুওমো মূলত ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী ছিলেন, তবে প্রাইমারিতে মামদানি কাছে পরাজিত হয়ে তিনি স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সাম্প্রতিক বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, মামদানি কুওমোর থেকে এগিয়ে রয়েছেন। জিতলে তিনি হবেন নিউইয়র্ক সিটির প্রথম মুসলিম মেয়র, দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত এবং আফ্রিকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথম ব্যক্তি। মামদানের জন্ম উগান্ডায় হলেও তার পারিবারিক সূত্র ভারতীয় উপমহাদেশে। প্রচারণার শেষ দিনে আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মামদানি বলেন, “নির্বাচনে জিতবে ভোটই। যতক্ষণ আমরা মনোযোগ ধরে রাখব, মানুষের দরজায় কড়া নাড়ব এবং প্রচারণা চালিয়ে যাব, ততই জয় লাভের সম্ভাবনা বাড়বে।” প্রচারাভিযানে অংশ নেওয়া তাসনুভা খান বলেন, “এই প্রতিযোগিতা মুসলিম ভোটারদের প্রভাব এবং নিউইয়র্কের দ্রুত বর্ধনশীল বাংলাদেশি কমিউনিটির উপস্থিতি তুলে ধরেছে।” কুইন্সের লং আইল্যান্ড সিটির দন্ত চিকিৎসক ও মামদানি সমর্থক শবনম সালেহেজাদেহি বলেন, নির্বাচনের পরই মামদানির প্রকৃত চ্যালেঞ্জ শুরু হবে। তার মতে, জয়ী হলেও তাকে প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে। এই নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী আরও দুইজন—স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুওমো ও রিপাবলিকান কার্টিস স্লিওয়া। এই তিন মুখের লড়াইয়ে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচন এখন আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।