খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে নিয়ে সুখবর দিলেন তথ্য উপদেষ্টা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাবেক ইউপি সদস্যের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার
শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা অন্তত ১৯৩
ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চাইলেন নেতানিয়াহু
হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে দেখতে গেলেন তামিম ইকবাল
নোয়াখালীতে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় কোরআন খতম ও দোয়া
মসজিদে বিয়ে ও সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন শবনম ফারিয়া
দেশে বাড়লো সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম
ইসরায়েলি হামলার গাজায় নিহত ৭০ হাজারের বেশি
খাদ্য অধিদপ্তরের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস
হোয়াইট হাউসে শারার সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক
- আপডেট সময় ০৫:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
- / ২৪ বার পড়া হয়েছে
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার মধ্যে সোমবার হোয়াইট হাউসে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই বৈঠককে সিরিয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক পরিবর্তনের সূচক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বিদ্রোহী থেকে রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হওয়া শারা গত বছর দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর থেকেই তিনি সিরিয়ার আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা কাটাতে বিভিন্ন দেশের সফরে যাচ্ছেন। এটি হবে সিরিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্টের হোয়াইট হাউস সফর। ছয় মাস আগে সৌদি আরবে ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের পর এবার তারা দ্বিতীয়বারের মতো বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন। এর কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দেয় যে, শারা আর ‘বিশেষভাবে চিহ্নিত বৈশ্বিক সন্ত্রাসী’ নন। ৪২ বছর বয়স্ক শারা গত বছর উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার বিদ্রোহী ঘাঁটি থেকে দ্রুত অভিযান চালিয়ে ৮ ডিসেম্বর বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেন। এর ফলে সিরিয়ার পররাষ্ট্রনীতিতে দ্রুত পরিবর্তন এসেছে—ইরান ও রাশিয়ার প্রভাব কমিয়ে দেশটি এখন তুরস্ক, উপসাগরীয় দেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। সোমবারের বৈঠকটি মূলত নিরাপত্তা বিষয়ক হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্ভাব্য নিরাপত্তা চুক্তির বিষয়েও মধ্যস্থতা করছে। একই সঙ্গে ড্যামাস্কাসে একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। এছাড়া ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটে সিরিয়া যোগ দিতে পারে—যা এই বৈঠকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হতে পারে। বৈঠকের আগে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “সিরিয়া বিষয়ে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। আমি মনে করি শারা খুব ভালো কাজ করছেন। কঠিন পরিস্থিতিতেও তিনি দৃঢ়ভাবে থাকছেন, এবং আমার সঙ্গে তার সম্পর্কও ভালো।” গত মে মাসে রিয়াদে ট্রাম্প ও শারার সাক্ষাতের পর ট্রাম্প ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে। তবে সবচেয়ে কঠোর আইন ‘সিজার স্যাংশন অ্যাক্ট’ প্রত্যাহারে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন। হোয়াইট হাউস ও স্টেট ডিপার্টমেন্ট ২০২৫ সালের মধ্যে তা তুলে নেওয়ার পক্ষে, যদিও সরকারি অচলাবস্থার কারণে এর সময়সীমা পিছিয়ে যেতে পারে। শারা এবিষয়ে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য জোর দাবি করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে সিরিয়া পুনরায় বৈদেশিক বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ হবে। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ১৪ বছরের যুদ্ধের পর দেশের পুনর্গঠনে প্রয়োজন প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে সম্প্রতি সংগঠিত সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ২,৫০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যা নতুন সরকারের শাসনক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে। শারার ব্যক্তিগত জীবনও নাটকীয় পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক অভিযান চলাকালে তিনি আল-কায়েদায় যোগ দেন এবং কয়েক বছর মার্কিন কারাগারে ছিলেন। পরে সিরিয়ায় ফিরে আসেন এবং আসাদবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র তাকে সন্ত্রাসী ঘোষণা করে ১ কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। তবে ২০১৬ সালে তিনি আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন এবং উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় নিজের প্রভাব জোরদার করেন। গত ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র তার উপরে থেকে পুরস্কার প্রত্যাহার করে নেয়। এক সপ্তাহ আগে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ শারা ও তার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে। পরে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যও একই সিদ্ধান্ত নেয়। নিউইয়র্কভিত্তিক ইউরেশিয়া গ্রুপের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফিরাস মাকসাদ বলেন, “ওয়াশিংটন সফর সিরিয়ার বড় পরিবর্তনের প্রতীক। একসময় ইরানের প্রভাব থাকা সিরিয়া এখন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দিচ্ছে। আর শারা নিজেও একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী থেকে এখন সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগী।” তিনি আরও বললেন, “সব কিছু এখনো অনিশ্চিত, সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। তবে সিরিয়ার কোনও প্রেসিডেন্টের প্রথমবারের মতো ওয়াশিংটন সফর নিঃসন্দেহে আশার বার্তা যে দেশটি সঠিক পথে এগোচ্ছে।” সূত্র: রয়টার্স
প্রিন্ট














