, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় রপ্তানি বেড়েছে, শুল্ক জারি থাকলেও কমছে বাণিজ্য উত্তেজনা

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
  • / ২০ বার পড়া হয়েছে

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ শুল্ক থাকলেও অক্টোবর মাসে ভারতের পণ্য রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেপ্টেম্বরের তুলনায় এক মাসে রপ্তানি ১৪.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রথম পাঁচ মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানিতে এমন বৃদ্ধি দেখা গেল। আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পাশাপাশি রাশিয়ার তেল কেনার জন্য অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ জরিমানা দিলে ভারতের রপ্তানি হঠাৎ করে কমে যায়। নতুন এই তথ্য প্রকাশিত হলো সেই সময়ে যখন ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানিগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি পরিমাণ তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) আমদানি করতে রাজি হয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কৃষি খাতে পারস্পরিক শুল্ক প্রত্যাহার করেছেন, যা ভারতের জন্য সুবিধাজনক বলে মনে হচ্ছে। দুই দেশের বাণিজ্য আলোচনা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছানোর খবর পাওয়া গেছে একজন ভারতীয় কর্মকর্তার মাধ্যমে। যদিও এই মাসে ভারতের মোট পণ্য রপ্তানি বছরে তুলনায় ১১.৮ শতাংশ কমেছে। শীর্ষ ২০টি রপ্তানি গন্তব্যের মধ্যে ১৫টিতেই দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য কমেছে। গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, ‘যেসব খাত শুল্কমুক্ত— যেমন স্মার্টফোন ও ওষুধ— সেগুলো ভালো ফল করেছে বলে মনে হচ্ছে, যদিও এটি এক ধরনের ধারণা।’ তিনি আরও জানান, অক্টোবরের এই উন্নতি সত্ত্বেও মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ভারতের যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি প্রায় ২৮.৪ শতাংশ কমেছে। এর ফলে মাসিক রপ্তানি আয় কমেছে আড়াইশো কোটি ডলার বেশি। তবে ধীরে ধীরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা কমতে শুরু করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। সোমবার ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রথমবারের মতো বড় একটি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে, যার ফলে দেশটির মোট বার্ষিক এলপিজি চাহিদার প্রায় ১০ শতাংশই এখন থেকে আমদানি হবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ভারতের জ্বালানি মন্ত্রী হার্দিপ সিং পুনি একে ‘ঐতিহাসিক অগ্রগতি’ বলে উল্লেখ করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসন দীর্ঘ দিন ধরে ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি আমদানি বাড়াতে এবং রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা কমাতে আহ্বান জানিয়ে আসছে। ইউক্রেন যুদ্ধের পর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারত রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতাদের একটি হয়ে উঠেছে। গত বছর ভারত রাশিয়া থেকে ৫২.৭ বিলিয়ন ডলারের তেল কিনেছিল, যা তাদের মোট তেল আমদানির ৩৭ শতাংশ। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, আগামী মাসে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দিল্লি সফরে আসবেন। এই সফরে দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। তারপরও যুক্তরাষ্ট্র–ভারত বাণিজ্য আলোচনা দ্রুত এগিয়ে চলছে। সোমবার এক সিনিয়র কর্মকর্তার বরাত দিয়ে দ্য হিন্দু খবর জানিয়েছে, বাণিজ্যচুক্তির প্রথম ধাপ ‘প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে’। যুক্তরাষ্ট্র ভারতের চা, কফি, মসলা সহ বেশ কিছু কৃষিপণ্যের উপর আরোপিত পারস্পরিক শুল্ক প্রত্যাহার করতে যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই সুবিধা পেয়ে প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের ভারতীয় কৃষিপণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে।


প্রিন্ট

নিউজটি শেয়ার করুন

যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় রপ্তানি বেড়েছে, শুল্ক জারি থাকলেও কমছে বাণিজ্য উত্তেজনা

আপডেট সময় ১০:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ শুল্ক থাকলেও অক্টোবর মাসে ভারতের পণ্য রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেপ্টেম্বরের তুলনায় এক মাসে রপ্তানি ১৪.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রথম পাঁচ মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানিতে এমন বৃদ্ধি দেখা গেল। আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পাশাপাশি রাশিয়ার তেল কেনার জন্য অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ জরিমানা দিলে ভারতের রপ্তানি হঠাৎ করে কমে যায়। নতুন এই তথ্য প্রকাশিত হলো সেই সময়ে যখন ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানিগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি পরিমাণ তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) আমদানি করতে রাজি হয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কৃষি খাতে পারস্পরিক শুল্ক প্রত্যাহার করেছেন, যা ভারতের জন্য সুবিধাজনক বলে মনে হচ্ছে। দুই দেশের বাণিজ্য আলোচনা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছানোর খবর পাওয়া গেছে একজন ভারতীয় কর্মকর্তার মাধ্যমে। যদিও এই মাসে ভারতের মোট পণ্য রপ্তানি বছরে তুলনায় ১১.৮ শতাংশ কমেছে। শীর্ষ ২০টি রপ্তানি গন্তব্যের মধ্যে ১৫টিতেই দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য কমেছে। গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, ‘যেসব খাত শুল্কমুক্ত— যেমন স্মার্টফোন ও ওষুধ— সেগুলো ভালো ফল করেছে বলে মনে হচ্ছে, যদিও এটি এক ধরনের ধারণা।’ তিনি আরও জানান, অক্টোবরের এই উন্নতি সত্ত্বেও মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ভারতের যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি প্রায় ২৮.৪ শতাংশ কমেছে। এর ফলে মাসিক রপ্তানি আয় কমেছে আড়াইশো কোটি ডলার বেশি। তবে ধীরে ধীরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা কমতে শুরু করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। সোমবার ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রথমবারের মতো বড় একটি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে, যার ফলে দেশটির মোট বার্ষিক এলপিজি চাহিদার প্রায় ১০ শতাংশই এখন থেকে আমদানি হবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ভারতের জ্বালানি মন্ত্রী হার্দিপ সিং পুনি একে ‘ঐতিহাসিক অগ্রগতি’ বলে উল্লেখ করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসন দীর্ঘ দিন ধরে ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি আমদানি বাড়াতে এবং রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা কমাতে আহ্বান জানিয়ে আসছে। ইউক্রেন যুদ্ধের পর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারত রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতাদের একটি হয়ে উঠেছে। গত বছর ভারত রাশিয়া থেকে ৫২.৭ বিলিয়ন ডলারের তেল কিনেছিল, যা তাদের মোট তেল আমদানির ৩৭ শতাংশ। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, আগামী মাসে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দিল্লি সফরে আসবেন। এই সফরে দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। তারপরও যুক্তরাষ্ট্র–ভারত বাণিজ্য আলোচনা দ্রুত এগিয়ে চলছে। সোমবার এক সিনিয়র কর্মকর্তার বরাত দিয়ে দ্য হিন্দু খবর জানিয়েছে, বাণিজ্যচুক্তির প্রথম ধাপ ‘প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে’। যুক্তরাষ্ট্র ভারতের চা, কফি, মসলা সহ বেশ কিছু কৃষিপণ্যের উপর আরোপিত পারস্পরিক শুল্ক প্রত্যাহার করতে যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই সুবিধা পেয়ে প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের ভারতীয় কৃষিপণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে।


প্রিন্ট