বিশ্বের প্রত্যেক তিন নারীর একজন জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে স্বজনের দ্বারা নির্যাতন বা যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। বিশ্বজুড়ে প্রায় ৮৪ কোটি নারী এই ধরনের সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এই সহিংসতাকে মানবতার প্রাচীন অন্যায় হিসেবে উল্লেখ করে বুধবার (১৯ নভেম্বর) নতুন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ডব্লিউএইচও। সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক বছরে ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সী ৩১ কোটি ৬০ লাখ নারী ও কিশোরী শারীরিক ও যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন। নারীর প্রতি সহিংসতা নির্মূলের জন্য আন্তর্জাতিক দিবসের প্রাক্কালে জাতিসংঘের প্রকাশিত প্রতিবেদনে ২০০০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৬৮টি দেশের সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে বৈশ্বিক বৈদেশিক সাহায্যের মাত্র ০.২ শতাংশ ব্যয় হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিদেশি সহায়তা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ২০২৪ সালে এই বরাদ্দ আরও হ্রাস পেয়েছে। আরও বলা হয়েছে, যুদ্ধ, দীর্ঘস্থায়ী সংকট, বাস্তুচ্যুতি, পরিবেশের অবনতি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন কারণে বিশ্বজুড়ে বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা ঝুঁকি দ্রুত বাড়ছে। ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক টেডরস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেছেন, নারীর প্রতি সহিংসতা মানবতার ইতিহাসের অন্যতম প্রাচীন ও মারাত্মক অন্যায়। কিন্তু, এটি সবচেয়ে কম গুরুত্ব পায় এমন একটি সমস্যা। অর্ধেক মানুষ ভয় ও অনিরাপত্তার মধ্যে থাকলে কোনো সমাজই ন্যায্য বা নিরাপদ হতে পারে না। ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, বিশ্বে অগ্রগতি থাকা সত্ত্বেও নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা এখনো উপেক্ষিত সমস্যা, এবং এর মোকাবিলায় বরাদ্দ অনেকটাই অপ্রতুল। সূত্র: আল-জাজিরা