নতুন মার্কিন অর্থনৈতিক তথ্য এবং ডিসেম্বরে ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা বাড়ার কারণে বুধবার (২৬ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের মূল্য প্রায় দুই সপ্তাহের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। একই সঙ্গে ডলারের মূল্য কমে আসায় স্বর্ণের দাম আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্সে ৪ হাজার ১৬১ দশমিক ১০ ডলারে অবস্থান করছে, যা ১৪ নভেম্বরের পর থেকে সর্বোচ্চ। তবে ডিসেম্বরে ডেলিভারির জন্য মার্কিন স্বর্ণের ফিউচার শেয়ার শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ কমে প্রতি আউন্সে ৪ হাজার ১৫৯ ডলারে পৌঁছেছে। কেসিএম ট্রেডের প্রধান বিশ্লেষক টিম ওয়াটারার বলেন, ‘ডিসেম্বরে সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা আরো জোরদার হচ্ছে। ফেডের কর্মকর্তাদের মন্তব্য ও সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক তথ্য স্বর্ণের মূল্য বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।’ মার্কিন অর্থনৈতিক তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরের খুচরা বিক্রয় প্রত্যাশার চেয়ে কম বেড়ে গেছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১২ মাসে উৎপাদক মূল্য সূচক আগস্টের মতো ২ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, ফেডের পরবর্তী পদক্ষেপ স্বর্ণের জন্য সহায়ক হবে। ডলারের মূল্য এক সপ্তাহের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, পরবর্তী ফেড চেয়ারের জন্য নীতিমালা আরো নমনীয় হতে পারে, যা অন্যান্য মুদ্রার তুলনায় স্বর্ণের দামকে তুলনামূলকভাবে কম ব্যয়বহুল করে তুলেছে। এর ফলে ১০-বছরের ট্রেজারি ইল্ড বেঞ্চমার্ক এক মাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। অন্যদিকে, মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেন, ফেডের সুদের হার পরিচালনার পদ্ধতি এখনো জটিল এবং এটি সরলীকরণ করা উচিত। সিএমই ফেডওয়াচ টুল অনুযায়ী, ডিসেম্বরে ফেডের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা বর্তমানে ৮৪ শতাংশে পৌঁছেছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ শতাংশ। কম সুদের হার পরিস্থিতিতে স্বর্ণ, যা একটি অ-ফলনশীল সম্পদ, ভালো পারফর্ম করে। মার্কিন সাপ্তাহিক বেকারত্বের রিপোর্ট বুধবার প্রকাশিত হবে। অন্যদিকে, অক্টোবরে হংকংয়ের মাধ্যমে চীনের স্বর্ণ আমদানি সেপ্টেম্বরের তুলনায় প্রায় ৬৪ শতাংশ কমে গেছে। বর্তমানে দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের ভরি বিক্রি হচ্ছে ২ লাখ ৮ হাজার ১৬৭ টাকায়। এছাড়াও, ২১ ক্যারেটের ভরি ১ লাখ ৯৮ হাজার ৬৯৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ভরি ১ লাখ ৭০ হাজার ৩১৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতিতে ভরি স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৬৪৮ টাকায়। অন্যদিকে, বিশ্ববাজারে রুপা বাদে অন্যান্য ধাতুর দাম কমে গেছে। স্পট সিলভার দামের বৃদ্ধি হয়েছে ১ শতাংশ, যা প্রতি আউন্সে ৫১ দশমিক ৮৭ ডলার। প্ল্যাটিনামের দাম শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমে ১ হাজার ৫৫০ দশমিক ৪০ ডলারে নেমে এসেছে এবং প্যালাডিয়ামের দাম শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ কমে ১ হাজার ৩৯০ দশমিক ৬৬ ডলারে অবস্থান করছে।