, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

গাজার ধ্বংসস্তূপে ৫৪ নবদম্পতির গণবিবাহ

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০১:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ২৩ বার পড়া হয়েছে

দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ধ্বংসস্তূপের মাঝখানে ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি পোশাকে একত্রিত হন ৫৪ দম্পতি। দুই বছরের ধ্বংস, মৃত্যু ও সংঘর্ষের পর গত মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত এই গণবিবাহ ছিল এক বিরল মুহূর্ত। গাজার চলমান সংঘর্ষের কারণে বিয়ের অনুষ্ঠান গুলির উপস্থিতি কমে এসেছে। তবে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পরে এই ঐতিহ্য পুনরায় ফিরে আসতে শুরু করেছে। যদিও এখন আগের মতো জাঁকজমকপূর্ণ নয়, তবুও নবদম্পতিদের জন্য এটি জীবনের এক ক্ষণিকের স্বস্তির মুহূর্ত। ডেইলি সাবাহর প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার নবদম্পতিদের বহনকারী শোভাযাত্রা ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের পাশ দিয়ে গিয়েছিল। নবদম্পতিদের একটি সারি হাত ধরে এগোচ্ছিল। তাদের মধ্যে ছিলেন ইমান হাসান লাওয়া ও হিকমত লাওয়া। ইমান বলেন, ‘সব কিছুর পরও আমরা নতুন করে জীবন শুরু করব। ইনশাআল্লাহ, এই যুদ্ধের শেষ আসবে।’ হিকমত যোগ করেন, ‘আমরা অন্য সবার মতো সুখী হতে চাই। এক সময় ছিল আমার স্বপ্ন ছিল একটি বাড়ি, একটি চাকরি— আজ আমাদের স্বপ্ন শুধু একটি তাঁবু খুঁজে পাওয়া।’ ইমান কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “এত দুঃখের মধ্যে আনন্দ অনুভব করা কঠিন। ইনশাআল্লাহ, আমরা ধীরে ধীরে সবকিছু পুনর্নির্মাণ করব।” প্রতিবেদনে বলা হয়, দূরবর্তী আত্মীয় ইমান ও হিকমত লাওয়া যুদ্ধের সময় দেইর আল-বালাহ শহরে আশ্রয় নেন। মানবিক সংস্থা আল ফারেস আল শাহিম, যা সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমর্থন পেয়েছে, এই গণবিবাহের আয়োজন ও নবদম্পতিদের জন্য অর্থ ও সামগ্রী প্রদান করে। ফিলিস্তিনে বিয়ে একটি সামাজিক ও পারিবারিক অনুষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি সাধারণত বহু দিনের জাঁকজমকপূর্ণ উৎসবের মাধ্যমে উদযাপিত হয়, যেখানে থাকে নাচ-গান, শোভাযাত্রা, বিশেষ পোশাক ও প্রচুর খাবার। বার্নার্ড কলেজের সমাজতত্ত্বের অধ্যাপক রান্দা সেরহান বলেন, ‘প্রতি নতুন বিয়ের সঙ্গে নতুন সন্তান আসে, যা স্মৃতি ও বংশধারাকে জীবন্ত রাখে। কঠিন পরিস্থিতিতেও জীবন চলতে থাকে।’ ইমান ও হিকমত ফিলিস্তিনি পতাকা নাড়ছিলেন, তাদের চারপাশে পরিবার ও বন্ধুদের নাচ ও সঙ্গীতের মাধ্যমে আনন্দের গান বাজছে। অক্টোবর ২০২৩ থেকে গাজার সংঘাতে প্রায় ৭০,০০০ মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু, এবং ১,৭০,৯০০ এর বেশি মানুষ আহত। দুই বছর ধরে চলা এই যুদ্ধের ফলে গাজার প্রায় সব অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।


প্রিন্ট
ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজার ধ্বংসস্তূপে ৫৪ নবদম্পতির গণবিবাহ

আপডেট সময় ০১:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫

দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ধ্বংসস্তূপের মাঝখানে ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি পোশাকে একত্রিত হন ৫৪ দম্পতি। দুই বছরের ধ্বংস, মৃত্যু ও সংঘর্ষের পর গত মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত এই গণবিবাহ ছিল এক বিরল মুহূর্ত। গাজার চলমান সংঘর্ষের কারণে বিয়ের অনুষ্ঠান গুলির উপস্থিতি কমে এসেছে। তবে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পরে এই ঐতিহ্য পুনরায় ফিরে আসতে শুরু করেছে। যদিও এখন আগের মতো জাঁকজমকপূর্ণ নয়, তবুও নবদম্পতিদের জন্য এটি জীবনের এক ক্ষণিকের স্বস্তির মুহূর্ত। ডেইলি সাবাহর প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার নবদম্পতিদের বহনকারী শোভাযাত্রা ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের পাশ দিয়ে গিয়েছিল। নবদম্পতিদের একটি সারি হাত ধরে এগোচ্ছিল। তাদের মধ্যে ছিলেন ইমান হাসান লাওয়া ও হিকমত লাওয়া। ইমান বলেন, ‘সব কিছুর পরও আমরা নতুন করে জীবন শুরু করব। ইনশাআল্লাহ, এই যুদ্ধের শেষ আসবে।’ হিকমত যোগ করেন, ‘আমরা অন্য সবার মতো সুখী হতে চাই। এক সময় ছিল আমার স্বপ্ন ছিল একটি বাড়ি, একটি চাকরি— আজ আমাদের স্বপ্ন শুধু একটি তাঁবু খুঁজে পাওয়া।’ ইমান কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “এত দুঃখের মধ্যে আনন্দ অনুভব করা কঠিন। ইনশাআল্লাহ, আমরা ধীরে ধীরে সবকিছু পুনর্নির্মাণ করব।” প্রতিবেদনে বলা হয়, দূরবর্তী আত্মীয় ইমান ও হিকমত লাওয়া যুদ্ধের সময় দেইর আল-বালাহ শহরে আশ্রয় নেন। মানবিক সংস্থা আল ফারেস আল শাহিম, যা সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমর্থন পেয়েছে, এই গণবিবাহের আয়োজন ও নবদম্পতিদের জন্য অর্থ ও সামগ্রী প্রদান করে। ফিলিস্তিনে বিয়ে একটি সামাজিক ও পারিবারিক অনুষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি সাধারণত বহু দিনের জাঁকজমকপূর্ণ উৎসবের মাধ্যমে উদযাপিত হয়, যেখানে থাকে নাচ-গান, শোভাযাত্রা, বিশেষ পোশাক ও প্রচুর খাবার। বার্নার্ড কলেজের সমাজতত্ত্বের অধ্যাপক রান্দা সেরহান বলেন, ‘প্রতি নতুন বিয়ের সঙ্গে নতুন সন্তান আসে, যা স্মৃতি ও বংশধারাকে জীবন্ত রাখে। কঠিন পরিস্থিতিতেও জীবন চলতে থাকে।’ ইমান ও হিকমত ফিলিস্তিনি পতাকা নাড়ছিলেন, তাদের চারপাশে পরিবার ও বন্ধুদের নাচ ও সঙ্গীতের মাধ্যমে আনন্দের গান বাজছে। অক্টোবর ২০২৩ থেকে গাজার সংঘাতে প্রায় ৭০,০০০ মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু, এবং ১,৭০,৯০০ এর বেশি মানুষ আহত। দুই বছর ধরে চলা এই যুদ্ধের ফলে গাজার প্রায় সব অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।


প্রিন্ট