মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন জাতীয় নিরাপত্তা নীতিকে স্বাগত জানিয়েছে রাশিয়া। দীর্ঘদিনের শীতল সম্পর্কের পর এ ধরনের নীতিমালা মস্কোর পক্ষ থেকে এতোটা প্রশংসিত হওয়া খুবই বিরল বলে মনে করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা নীতিতে ট্রাম্পের ভাবনাকে ‘লচকানো বাস্তববাদ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম গোলার্ধকে নিজেদের প্রভাবাধীন এলাকা হিসেবে দেখার মনোভাব ১৯শ শতকের মনরো নীতিকে পুনরায় চালু করতে চায়। কৌশলপত্রে ইউরোপের ‘সভ্যতার অবসান’ ঝুঁকির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তির জন্য আলোচনাকে ‘মূল স্বার্থ’ হিসেবে দেখানো হয়েছে এবং রাশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত স্থিতিশীলতা স্থাপনের ইচ্ছাও প্রকাশ করা হয়েছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এই পরিবর্তনগুলো অনেক ক্ষেত্রে রাশিয়ার অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বিশ্ব রাজনীতির বড় বিষয়গুলোতে ওয়াশিংটন ও মস্কোর এই প্রকাশ্য সমর্থন খুবই বিরল। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার পর পারমাণবিক অস্ত্র ফেরত আনার মতো বিষয়ে দুই দেশ সহায়তা করেছিল। আবার ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে হামলার পরও তারা ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছিল। শীতল যুদ্ধের সময় মস্কো যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অবনতি পতনের পথে থাকা সাম্রাজ্য’ হিসেবে দেখত, এবং যুক্তরাষ্ট্র বলত ‘অশুভ সাম্রাজ্য’। সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর পশ্চিমের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন চাইলেও ন্যাটো জোটের সম্প্রসারণে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠে, এবং ভ্লাদিমির পুতিন ক্ষমতায় আসার পর তা আরও বাড়ে। মার্কিন নতুন নীতিতে ন্যাটোকে ‘চিরকাল বিস্তৃত হতে থাকা জোট’ হিসেবে দেখার ধারণা বন্ধ করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে পেসকভ বলেন, এটি উৎসাহজনক। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, মার্কিন ‘প্রভাবশালী দপ্তর’ বা ডিপ স্টেট ট্রাম্পের মতোভাবে বিশ্বকে দেখেন না। ট্রাম্প সবসময় এই গোষ্ঠীকে তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখিয়ে আসছেন। ২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখল ও ২০২২ সালে ইউক্রেনে আক্রমণের পর মার্কিন নীতিতে রাশিয়াকে আক্রমণকারী ও বৈশ্বিক শৃঙ্খলার জন্য হুমকি হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছিল। তবে এবার কৌশলপত্রে রাশিয়াকে সরাসরি হুমকি না করে কৌশলগত স্থিতিশীলতার জন্য সহযোগিতার আহ্বানকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখেছেন পেসকভ। সূত্র: রয়টার্স