ভরা মঞ্চে এক তরুণীর হিজাব টানার অভিযোগে ভারতের বিহার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের বিরুদ্ধে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনা সম্পর্কিত একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। দশমবার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার এক মাসের মধ্যে নীতিশ কুমারের আচরণ ও মানসিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সমালোচকেরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস ও আরজেডির পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) পাটনায় একটি সরকারি অনুষ্ঠানে আয়ুষ বিভাগের (আয়ুর্বেদ, যোগ, ইউনানি, সিদ্ধ ও হোমিওপ্যাথি) চিকিৎসকদের নিয়োগপত্র প্রদান করা হচ্ছিল। সেই সময় হিজাব পরিহিত এক নারী চিকিৎসক মঞ্চে নিয়োগপত্র গ্রহণ করতে গিয়ে এই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। এনডিটিভির ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে হাসিমুখে ওই তরুণীর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এরপর তিনি ইশারায় হিজাব সরানোর নির্দেশ দেন। তরুণী প্রতিক্রিয়া দেখানোর আগে নীতিশ কুমার নিজেই হাত বাড়িয়ে তার হিজাব টেনে নামিয়ে দেন। এতে তিনি মুহূর্তের জন্য বিচলিত হয়ে পড়েন এবং দ্রুত মঞ্চ ত্যাগ করেন। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, মঞ্চে থাকা কিছু ব্যক্তির হাসি পড়ছে। একই সঙ্গে উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী মুখ্যমন্ত্রীকে থামানোর চেষ্টা করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়েছে। আরজেডি এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ লিখেছে, ‘নীতিশ জির কি হয়েছে? তার মানসিক অবস্থা কি একেবারেই খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে? নাকি তিনি এখন ১০০ শতাংশ সংঘের সদস্য?’ আরজেডি মুখপাত্র এজাজ আহমদ বলেন, ‘পর্দা মানা এক মুসলিম নারীর হিজাব সরিয়ে দিয়ে নীতিশ কুমার দেখিয়ে দিয়েছেন, নারীর ক্ষমতায়নের নামে জেডিইউ–বিজেপি কি ধরনের রাজনীতি করছে। এটি একজন নারীর সংস্কৃতি, ধর্ম ও সংবিধানপ্রদত্ত অধিকার ওপর সরাসরি আঘাত।’ কংগ্রেসও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দলের এক্স হ্যান্ডেলে লেখা হয়েছে, ‘এটি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। একজন নারী চিকিৎসক নিয়োগপত্র নিতে এলে তিনি প্রকাশ্যে তার হিজাব টেনে নামান। রাজ্যের সর্বোচ্চ পদে বসে এমন অশোভন আচরণ লজ্জাজনক। এই ঘটনায় নীতিশ কুমারের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। এটি ক্ষমার অযোগ্য।’ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর বা জেডিইউ-এর তরফ থেকে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।