যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম বিবিসির বিরুদ্ধে পাঁচ বিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬১ হাজার কোটি টাকা) মানহানি মামলায় দায়ের করেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, প্যানোরামা ডকুমেন্টারিতে ‘মিথ্যা, মানহানিকর এবং বিভ্রান্তিকরভাবে’ তার ছবি উপস্থাপন করা হয়েছে, যা ২০২৪ সালের নির্বাচন কয়েক দিন আগে বিবিসি সম্প্রচার করে। এ মামলা তিনি সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ফ্লোরিডার মিয়ামি ফেডারেল আদালতে দায়ের করেন। দ্য গার্ডিয়ান প্রতিবেদনে জানানো হয়, মামলায় বলা হয়েছে— ‘ট্রাম্প: অ্যা সেকেন্ড চান্স’ শীর্ষক ডকুমেন্টারিটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যেন মনে হয় ট্রাম্প ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসের বাইরে তার সমর্থকদের সরাসরি ক্যাপিটল আক্রমণের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। ‘প্যানোরামা ডকুমেন্টারি মিথ্যা দেখিয়েছে যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার সমর্থকদের বলেছিলেন— “আমরা ক্যাপিটলের দিকে হাঁটব এবং আমি তোমাদের সঙ্গে থাকব। আর আমরা লড়াই করব। আমরা লড়াই করব জোরে, ও যদি জোরে লড়াই না করো, তো তোমাদের আর কোনো দেশ থাকবে না,”’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে মামলায়। ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কখনো এই কথাগুলো উচ্চারণ করেননি।’ অভিযোগপত্রে তিনি দুবার ৫ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন— এক, বিবিসি তার মানহানি করেছে; দুই, এটি ফ্লোরিডার ‘ভুল ও অবৈধ বাণিজ্য অনুশীলন আইন’ লঙ্ঘন করেছে। বিবিসি এখনও এই মামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। এর আগে তারা স্বীকার করে নিয়েছিল, ডকুমেন্টারিটিতে ‘ভুল’ ছিল এবং ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চেয়েছিল। তবে তাদের দাবি, মানহানি মামলার কোনো আইনি ভিত্তি নেই। এই ঘটনার কারণে গত মাসে বিবিসির পরিচালক জেনারেল টিম ডেভি ও নিউজ প্রধান দেবোরাহ টার্নেস পদত্যাগ করেছেন। তারা পদত্যাগের ঘোষণা দেন তখন, যখন ট্রাম্প, গাজা ও ট্রান্স ইস্যু নিয়ে বিবিসির ‘গুরুত্বপূর্ণ ও পদ্ধতিগত সমস্যা’ নিয়ে সংকট সৃষ্টি হয়েছিল। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলাটি ফ্লোরিডার দক্ষিণ জেলা মার্কিন আদালতে দায়ের হয়েছে, যদিও এই পর্বটি কখনো যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রচারিত হয়নি। তবে ট্রাম্পের আইনী দল বলেছে, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এক সপ্তাহ আগে সম্প্রচারিত তার ভাষণের সম্পাদনা ছিল নির্বাচনে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হস্তক্ষেপ’। ট্রাম্পের আইনজীবী বলেন, ‘বিবিসি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কভারেজে দীর্ঘদিন ধরে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে আসছে, সবই তাদের নিজস্ব বামপন্থী রাজনৈতিক এজেন্ডার জন্য। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শক্তিশালী মামলাটি বিবিসিকে তার মানহানি ও অস্থির নির্বাচনী হস্তক্ষেপের জন্য দায়ী করছে, যেমন তারা অন্য মূলধারার মিডিয়াকেও তাদের ভুলের জন্য দায়ী করেছেন।’