ইসরাইলি সেনারা দখলকৃত পশ্চিম তীরের শহরগুলোতে অভিযান চালিয়ে একটি চারতলা বাসভবন ধ্বংস করেছে। সোমবার পূর্ব জেরুজালেমে এই ধ্বংসযজ্ঞের সময় সেনারা স্টান গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলছেন, এটি শহর থেকে ফিলিস্তিনিদের বিতাড়িত করার পরিকল্পিত এক অপারেশন। বহু ফিলিস্তিনি এই ধ্বংসের ফলে তাদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য বাধ্য হয়েছেন। একটিভিস্টরা জানিয়েছেন, এটি এ বছরের সবচেয়ে বড় ধ্বংস অভিযান। সিলওয়ান এলাকার ওয়াদি কাদ্দুমের ১৩টি অ্যাপার্টমেন্টের এই চারতলা ভবনটি তিনটি ইসরাইলি ব্লাডোজার ধ্বংস করে। সেনারা আশপাশের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে, এলাকায় ভারী নিরাপত্তা মোতায়েন করেছে এবং প্রতিবেশী বাড়িগুলোর ছাদে নিরাপত্তা কর্মী স্থাপন করেছে। অভিযানের সময় একজন যুবক ও এক কিশোরকে আটক করা হয়। বাসিন্দাদের জানানো হয়েছে, ভবনটি অনুমোদনবিহীনভাবে নির্মিত হয়েছিল। তবে ফিলিস্তিনিরা বলছেন, ইসরাইলের কঠোর নীতি তাদের জন্য নির্মাণের অনুমতি পাওয়া কঠিন করে তোলে, যা ফিলিস্তিনিদের জমি থেকে বিতাড়িত করার একটি অংশ। ইসরাইলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা সম্প্রতি পশ্চিম তীরে ১৯টি নতুন বসতি অনুমোদন দিয়েছে। চলতি বছরে মোট বসতি সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৯-এ। ফিলিস্তিনি প্রশাসনের অধীনে জেরুজালেম গভর্নরেট এই ধ্বংসযজ্ঞের নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলেছে, ‘বাড়ি ধ্বংস করা ফিলিস্তিনির নাগরিকদের জোরপূর্বক বিতাড়িত করার একটি পরিকল্পিত নীতি’। ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের দাবি, জেরুজালেম পৌরসভা বলেছে, ধ্বংসকাজটি ২০১৪ সালের আদালতের আদেশ অনুযায়ী সম্পন্ন হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থা ইর আমিম ও বিমকম জানিয়েছে, ভবন ধ্বংসের আগে কোনো সতর্কতা দেয়া হয়নি, যদিও সোমবার ভবনটি বৈধ করার আলোচনা চলছিল। তারা বলেছে, ‘এটি চলমান নীতির অংশ। শুধু এ বছরেই প্রায় ১০০টি ফিলিস্তিনি পরিবার তাদের বাড়ি হারিয়েছে’। অন্যদিকে, পশ্চিম তীরের বিভিন্ন এলাকায় ইসরাইলি সেনারা কৃষিজমি ধ্বংস করেছে ও গাছ কেটে ফেলেছে। হেবলরনের উত্তরে হালহুল শহরে সেনারা বড়সংখ্যক সেনা মোতায়েন করেছে, স্নাইপার দল স্থাপন করেছে এবং শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়েছে। অক্টোবরে ২০২৩ থেকে গাজা উপগ্রহে ইসরাইলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরেও হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফিলিস্তিনি সূত্র বলছে, এখন পর্যন্ত পশ্চিম তীরে নিহতের সংখ্যা ১,১০২, আহতের সংখ্যা প্রায় ১১,০০০ এবং আটক হয়েছে ২১,০০০ এর বেশি। সূত্র: আল জাজিরা