বাংলাদেশের উন্নয়নে জ্বালানি সরবরাহের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, দেশের অগ্রগতির মূল চাবিকাঠি হলো জ্বালানি। যদি যথাযথভাবে জ্বালানি সরবরাহ না হয়, তবে আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনার সফলতা কতটা সম্ভব হবে? জ্বালানি শুধু অর্থনীতির বিষয় নয়, এটি সামাজিক ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ, দেশের সমাজের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র পর্যাপ্ত জ্বালানি নিশ্চিত করা আবশ্যক। শনিবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে দৈনিক বণিক বার্তা আয়োজিত ‘বাংলাদেশে এলপিজি : অর্থনীতি, পরিবেশ ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক পলিসি কনক্লেভে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এই কথা বলেন। ড. মঈন আরও বলেন, আমি সম্প্রতি গ্রামে গিয়ে সরাসরি মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। সেখানকার নারীরা গ্যাস সংযোগের সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি জানান। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের প্রায় ১৮ কোটি মানুষের জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি সরবরাহ এখনও সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে, দেশের প্রাথমিক এনার্জির প্রায় ৬৫ শতাংশই আমদানির উপর নির্ভর। ফলে দেশের মুদ্রার ওপর চাপ পড়ছে। দেশের এলপিজি সরবরাহ বাড়ানো এবং সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য করা অত্যন্ত জরুরি। ড. মঈন বলেন, বাংলাদেশের কয়লা সম্পদ অত্যন্ত উচ্চমানের, যার সালফার কন্টেন্ট বিশ্বের সর্বনিম্ন। যদিও পরিবেশবাদীরা কয়লা ব্যবহারে সমালোচনা করতে পারেন, তবে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিবেশ দূষণ কমিয়ে দেশের এনার্জি চাহিদা পূরণ সম্ভব। দেশীয় গ্যাসের মজুত ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে এবং বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী দ্রুত নিঃশেষ হয়ে যাবে। তাই বিদ্যুৎ, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানির বিকল্প উৎস খুঁজে বের করা এখনই প্রয়োজন। সীমিত প্রাকৃতিক গ্যাসের কারণে এলএনজি বা এলপিজির দিকে আরও মনোযোগ দেওয়া উচিত। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, দেশের নীতিনির্ধারকরা এনার্জি পরিকল্পনায় সঠিক বিনিয়োগ করলে দেশের সার্বিক জ্বালানি সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব হবে। বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে এলপিজির অংশ মাত্র ২ শতাংশ হলেও, সঠিক পরিকল্পনা ও বিনিয়োগের মাধ্যমে এটি বৃদ্ধি করে দেশের এনার্জি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। ভবিষ্যতে দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামো উন্নয়নে জ্বালানি চাহিদা আরও বাড়বে। জনগণের কাছে সহজ প্রযুক্তি ব্যবহার করে এলপিজি পৌঁছে দিলে এটি দেশের উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ম. তামিম।