রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ ২০২৫’-এ স্বাক্ষর করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে তার দপ্তরের একজন কর্মকর্তা এ খবর নিশ্চিত করেছেন। এই আদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো এখন গণভোটের জন্য প্রস্তাবিত হবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মধ্যস্থতায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় চূড়ান্ত হওয়া সংস্কার প্রস্তাবগুলোতে জনগণের মতামত নেওয়ার জন্য সেই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে, একই দিন দুপুরে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ধারণা করা হচ্ছে, সেই ভাষণে তিনি গণভোটের তারিখ ঘোষণা করবেন। তার ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশন, বিটিভি নিউজ ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে বিকেল আড়াইটায়। এর আগে, রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়। গত ২৮ অক্টোবর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য দুটি বিকল্প প্রস্তাব জমা দেয়। উভয় প্রস্তাবেই সংবিধান সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য গণভোটের আয়োজন ও একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের কথা বলা হয়েছে।
প্রথম বিকল্প—
(ক) জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এ সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত বিষয়গুলো কার্যকর করার জন্য সরকার ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ ২০২৫’ জারি করবে।
(খ) জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগের উদ্দেশ্যে ওই আদেশ ও তার তফসিল-১-এ অন্তর্ভুক্ত জুলাই সনদের সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো গণভোটে উপস্থাপন করা হবে।
(গ) আদেশ জারির পর, জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে সংসদ গঠন করা হবে। একইসঙ্গে, একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে, যাহা সংবিধান সংশোধনের জন্য গঠনের ক্ষমতা রাখবে।
(ঘ) গণভোটে যদি ইতিবাচক মতামত পাওয়া যায়, তবে সংবিধান সংস্কার বিলটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ তার দায়িত্ব পালন করতে সহায়ক হিসেবে বিবেচনা করবে। তবে, যদি প্রথম অধিবেশনের শুরু থেকে ২৭০ পঞ্জিকা দিবসের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন না হয়, তবে গণভোটে অনুমোদিত সংবিধান সংস্কার বিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হবে।
দ্বিতীয় বিকল্প—
(ক) জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এ সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত বিষয়গুলো কার্যকর করার জন্য সরকার ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ ২০২৫’ জারি করবে।
(খ) এই আদেশ ও তার তফসিল-১-এ অন্তর্ভুক্ত সংবিধান সংস্কার প্রস্তাবগুলো গণভোটের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
(গ) আদেশ জারির পর, একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে, যা সংসদ সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত। এই পরিষদ সংবিধান সংশোধনের জন্য গঠনের ক্ষমতা রাখবে।
(ঘ) প্রথম অধিবেশনের তারিখ থেকে ২৭০ পঞ্জিকা দিবসের মধ্যে, জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে, ওই আদেশের তফসিল-১-এ উল্লেখিত জুনি সনদ অনুসারে সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন হবে। এই কার্যক্রম শেষ হলে, পরিষদের কার্যক্রম সমাপ্ত হবে।
গণভোটে পক্ষে প্রশ্নটি হবে: “আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং এর তফসিল-১-এ থাকা সংবিধান সংস্কার প্রস্তাবসমূহের প্রতি আপনার সম্মতি প্রকাশ করছেন?”