ভূমিকম্পের প্রভাবে নরসিংদীর ঘোড়াশালসহ দেশের বেশ কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র অস্থায়ীভাবে বন্ধ রয়েছে। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য প্রকাশ করে। এতে জানানো হয়, ভূমিকম্পের কারণে ঘোড়াশাল, বিবিয়ানা, বাঁশখালী, আশুগঞ্জ, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন অঞ্চলের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সাময়িক বন্ধ রয়েছে। ফলে দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন দেখা দিয়েছে। পিডিবি আরও জানায়, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ স্বাভাবিক করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এর আগে, সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ডে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্পের অনুভূতি হয়। এর কেন্দ্রস্থল ছিল নরসিংদীর মাধবদী। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৭। এই মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প কিছুক্ষণ স্থায়ী ছিল। গোপালগঞ্জ, নড়াইল, নারায়ণগঞ্জ, রংপুর, সাতক্ষীরা, নরসিংদী, যশোর, জামালপুর, দিনাজপুর, ঝালকাঠি, কুমিল্লা, রাজশাহী, কুড়িগ্রাম, বাগেরহাট, মাদারীপুর, শেরপুর, সিলেট, ফেনী, খুলনা—এমন বিভিন্ন এলাকার প্রতিনিধিরাও ভূমিকম্পের খবর দিয়েছেন। ভূমিকম্পে নরসিংদীতে বড় ধরনের ভবন ধসে পড়েনি, তবে অনেক ভবন, বাড়িঘর ও বিভিন্ন স্থাপনায় ফাটল দেখা গেছে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অন্যদিকে, ভবন থেকে নামার সময় হুড়োহুড়িতে কমপক্ষে শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু আহত হন এবং নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের ঢাকাস্থ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পাশাপাশি, পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিকম্পের ফলে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ভবন হেলে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। অনেক ভবনে ফাটল দেখা গেছে। বংশালে কশাইতলীতে পাঁচতলা ভবনের রেলিং ভেঙে তিনজন পথচারী নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এক টিনসেড ঘরের দেয়াল ধসে ফাতেমা নামে এক বছরের শিশুর মৃত্যু হয়। শিশুটির মা কুলসুম বেগম ও প্রতিবেশী জেসমিন বেগম আহত হয়েছেন। এছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৮ জন। তাঁদের মধ্যে একজন রিকশাচালকের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এনডিটিভির খবর অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ও আশপাশের এলাকাগুলোতেও এই ভূমিকম্পের প্রভাব পড়ে।