, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে স্পষ্ট বার্তা প্রেসসচিবের

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ২ ঘন্টা আগে
  • / ৫ বার পড়া হয়েছে

প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম বলেছেন, বাংলাদেশ ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন করার পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে ফেসবুকে একটি সংবাদ লিংক শেয়ার করে তিনি এ কথা বলেন। প্রেসসচিব বলেন, জিল্লুর রহমান বলেছেন—তিনি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন না। তবে আমরা দেখছি। বাংলাদেশ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমাদের আশা, নির্বাচন কমিশন দ্রুতই তফসিল ঘোষণা করবে। জিল্লুর গত কিছু মাস ধরে একইধরণের মন্তব্য করে আসছেন; এবং তিনি এ বিষয়ে স্বাধীন। কিন্তু আমরা এর জন্য প্রস্তুত নয়, এই দাবি বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণে অন্তর্বর্তী সরকার সবসময়ই স্বচ্ছতা বজায় রেখেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর রেকর্ডসংখ্যক সদস্যের পাশাপাশি নজিরবিহীন সংখ্যক সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন থাকবে নির্বাচনকালে। নতুন ডিসি ও এসপি পদের নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। এসব নিয়োগে কোনো বিতর্ক উঠেনি বা খুবই কম।

প্রেসসচিব বলেন, নির্বাচনী প্রচার ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ দল তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে। কেবল কিছু সীমিত আকারের দলীয় ও আন্তঃদলীয় কোন্দল ছাড়া পরিস্থিতি স্থিতিশীল। জুলাই চার্টার গ্রহণের মাধ্যমে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে। এর ফলে দল ও নাগরিকরা একই দিনে অনুষ্ঠিতব্য গণভোটের জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

তিনি প্রশ্ন করেন, তাহলে কি জিল্লুর কালের কণ্ঠের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দাবি করেন যে—তিনি ফেব্রুয়ারিতে কোনো নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখছেন না? আর কেন তিনি ইঙ্গিত দেন যে—আমরা হয়তো ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ২০১৮ বা ২০২৪ সালের মতো পরিস্থিতির দিকে এগোচ্ছি? তিনি কি মনে করেন যে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত দলকে নির্বাচনের বাইরে রাখা মানে নির্বাচন ‘অবিশ্বাস্য’ বা ‘অংশগ্রহণহীন’? তবে আমরা তার সঙ্গে একমত নই। দেশের অধিকাংশ নাগরিকও এ বিষয়ে একমত নয়। আওয়ামী লীগকে আবার নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনার জন্য কেউ গুরুতরভাবে কথা বলছে না। তাদের দলের কিছু মানুষের রক্তের দাগ লেগে আছে এবং কোনো সভ্য দেশ মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত দলকে নির্বাচনে ফিরিয়ে আনবে না, যারা হাজার হাজার কারচুপির অভিযোগে অভিযুক্ত; যার মধ্যে রয়েছে তিনটি জাতীয় নির্বাচন। শফিকুল আলম বলেন, তাদের নেতৃত্ব এখনো রক্তের পিপাসায় উন্মত্ত। আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররাও বিশ্বাস করেন না যে, প্রকাশ্য ক্ষমা চাওয়া ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ছাড়া আওয়ামী লীগ আবার স্বাভাবিক রাজনীতিতে ফিরতে পারবে। গত কয়েক সপ্তাহের ঘটনাও প্রমাণ করে যে, আওয়ামী লীগ এখনও মনে করে বাসে আগুন দেওয়া কিংবা ককটেল নিক্ষেপের মতো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড তাদের রাজনীতিতে পুনঃপ্রবেশের পথ সহজ করে দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, জিল্লুর রহমান সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একের পর এক মনোলগ ভিডিও তৈরি করে চলেছেন। এর অনেক অংশ গুজবকে প্রশ্রয় দেয়; মানুষকে তথ্য দেওয়ার বদলে বিভ্রান্তি ছড়ায়। এসব ভিডিওতে তিনি নানা ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব প্রচার করেন। বহু বছর ধরে তিনি দেশের অন্যতম কুখ্যাত ভুয়া তথ্যবাহক হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিদের মঞ্চে এনেছেন, যেমন- নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ ও গোলাম মাওলা রনি। এখন কি মনে হয় না, তিনিও আস্তে আস্তে সেই একই ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন? তিনি আরও বলেন, আবারও বলছি, এতে আমাদের আপত্তি নেই। মানুষ নিজেদের বিচার-বিবেচনা দিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তারা বোকা নয়। আর দুটি বিষয় আমি স্পষ্ট করে বলতে পারি: আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে পারবে না এবং আন্তঃবর্তী সরকার ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করবে, ইনশাআল্লাহ।


প্রিন্ট
ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে স্পষ্ট বার্তা প্রেসসচিবের

আপডেট সময় ২ ঘন্টা আগে

প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম বলেছেন, বাংলাদেশ ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন করার পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে ফেসবুকে একটি সংবাদ লিংক শেয়ার করে তিনি এ কথা বলেন। প্রেসসচিব বলেন, জিল্লুর রহমান বলেছেন—তিনি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন না। তবে আমরা দেখছি। বাংলাদেশ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমাদের আশা, নির্বাচন কমিশন দ্রুতই তফসিল ঘোষণা করবে। জিল্লুর গত কিছু মাস ধরে একইধরণের মন্তব্য করে আসছেন; এবং তিনি এ বিষয়ে স্বাধীন। কিন্তু আমরা এর জন্য প্রস্তুত নয়, এই দাবি বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণে অন্তর্বর্তী সরকার সবসময়ই স্বচ্ছতা বজায় রেখেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর রেকর্ডসংখ্যক সদস্যের পাশাপাশি নজিরবিহীন সংখ্যক সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন থাকবে নির্বাচনকালে। নতুন ডিসি ও এসপি পদের নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। এসব নিয়োগে কোনো বিতর্ক উঠেনি বা খুবই কম।

প্রেসসচিব বলেন, নির্বাচনী প্রচার ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ দল তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে। কেবল কিছু সীমিত আকারের দলীয় ও আন্তঃদলীয় কোন্দল ছাড়া পরিস্থিতি স্থিতিশীল। জুলাই চার্টার গ্রহণের মাধ্যমে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে। এর ফলে দল ও নাগরিকরা একই দিনে অনুষ্ঠিতব্য গণভোটের জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

তিনি প্রশ্ন করেন, তাহলে কি জিল্লুর কালের কণ্ঠের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দাবি করেন যে—তিনি ফেব্রুয়ারিতে কোনো নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখছেন না? আর কেন তিনি ইঙ্গিত দেন যে—আমরা হয়তো ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ২০১৮ বা ২০২৪ সালের মতো পরিস্থিতির দিকে এগোচ্ছি? তিনি কি মনে করেন যে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত দলকে নির্বাচনের বাইরে রাখা মানে নির্বাচন ‘অবিশ্বাস্য’ বা ‘অংশগ্রহণহীন’? তবে আমরা তার সঙ্গে একমত নই। দেশের অধিকাংশ নাগরিকও এ বিষয়ে একমত নয়। আওয়ামী লীগকে আবার নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনার জন্য কেউ গুরুতরভাবে কথা বলছে না। তাদের দলের কিছু মানুষের রক্তের দাগ লেগে আছে এবং কোনো সভ্য দেশ মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত দলকে নির্বাচনে ফিরিয়ে আনবে না, যারা হাজার হাজার কারচুপির অভিযোগে অভিযুক্ত; যার মধ্যে রয়েছে তিনটি জাতীয় নির্বাচন। শফিকুল আলম বলেন, তাদের নেতৃত্ব এখনো রক্তের পিপাসায় উন্মত্ত। আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররাও বিশ্বাস করেন না যে, প্রকাশ্য ক্ষমা চাওয়া ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ছাড়া আওয়ামী লীগ আবার স্বাভাবিক রাজনীতিতে ফিরতে পারবে। গত কয়েক সপ্তাহের ঘটনাও প্রমাণ করে যে, আওয়ামী লীগ এখনও মনে করে বাসে আগুন দেওয়া কিংবা ককটেল নিক্ষেপের মতো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড তাদের রাজনীতিতে পুনঃপ্রবেশের পথ সহজ করে দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, জিল্লুর রহমান সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একের পর এক মনোলগ ভিডিও তৈরি করে চলেছেন। এর অনেক অংশ গুজবকে প্রশ্রয় দেয়; মানুষকে তথ্য দেওয়ার বদলে বিভ্রান্তি ছড়ায়। এসব ভিডিওতে তিনি নানা ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব প্রচার করেন। বহু বছর ধরে তিনি দেশের অন্যতম কুখ্যাত ভুয়া তথ্যবাহক হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিদের মঞ্চে এনেছেন, যেমন- নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ ও গোলাম মাওলা রনি। এখন কি মনে হয় না, তিনিও আস্তে আস্তে সেই একই ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন? তিনি আরও বলেন, আবারও বলছি, এতে আমাদের আপত্তি নেই। মানুষ নিজেদের বিচার-বিবেচনা দিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তারা বোকা নয়। আর দুটি বিষয় আমি স্পষ্ট করে বলতে পারি: আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে পারবে না এবং আন্তঃবর্তী সরকার ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করবে, ইনশাআল্লাহ।


প্রিন্ট