, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo ভরা মঞ্চে তরুণীর হিজাব টেনে খুলে বিতর্কে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী Logo ১৪ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৭০ কোটি ডলার Logo জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা Logo হাদিকে গুলি: মূল অভিযুক্ত ফয়সালের ঘনিষ্ঠ সহযোগী গ্রেপ্তার Logo সাংবাদিক আনিস আলমগীরের গ্রেপ্তারে সম্পাদক পরিষদের নিন্দা Logo পঞ্চগড়-১ আসনে মনোনয়নপত্র কিনলেন সারজিস আলম Logo সিইসির সেই বিতর্কিত বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলো ইসি Logo কালই বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ মোবাইল ফোন, নতুন সিদ্ধান্ত সরকারের Logo এমপি প্রার্থী ও রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্সে নতুন নীতিমালা Logo গরুর সঙ্গে অটোরিকশার ধাক্কা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই গ্রামের সংঘর্ষ
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ৯ বার পড়া হয়েছে

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ভোর ৭টার পরে তিনি পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি সম্মান জানান। এরপর কিছুক্ষণ নিরবভাবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এই দিনটি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক গভীর শোকের দিন। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর, বিজয়ের প্রথম সূর্যোদয়কালে, দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হারানোর কষ্টের দিন এটি। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে যখন পুরো দেশ বিজয়ের পথে, ঠিক তখনই দেশের নরঘাতকরা—রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা—উদ্যোগ নেয় বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞের। বিজয়ের শেষ মুহূর্তে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড পুরো জাতিকে আর বিশ্বকে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণের দু’দিন আগে, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতে, ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে প্রায় দেড়শ জন বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীকে চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেদিনের অন্ধকারে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক, সংস্কৃতি কর্মী ও সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের বাড়ি থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে হত্যা করা হয়। পরে তাদের দেহ ছুঁড়ে ফেলা হয় নীরব অন্ধকারে। পরের দিন সকালে মিরপুরের ডোবা-নালা ও রায়েরবাজারের ইটখোলায় অনেক নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। কারো শরীর বুলেটবিদ্ধ, কারো অমানুষিক নির্যাতনের চিহ্ন। হাত পেছনে বাঁধা বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয় অনেককে। স্বাধীনতার সূচনাকালে এই বিভীষিকাময় রাতের কথা শুনে পুরো জাতি শিউরে উঠেছিল। হত্যার আগে তাদের ওপর চালানো নির্যাতনের ভয়াবহতা প্রকাশ পায়। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সংকলনে, সংবাদপত্রে ও আন্তর্জাতিক সাময়িকীতে নিউজ উইকের প্রতিবেদনে জানা যায়, নিহত বুদ্ধিজীবীদের সংখ্যা মোট ১০৭০ জন। এই বুদ্ধিজীবীরা দীর্ঘ মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামে মনন, মেধা ও লেখনীর মাধ্যমে স্বাধীনতার প্রেরণা জুগিয়েছেন। তাঁরা মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। পুরো জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছেন অধিকারের জন্য সংগ্রামে। স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম যেন কিছুতেই মানতে চাননি স্বাধীনতা বিরোধীরা। ১৪ ডিসেম্বরের এই হত্যাযজ্ঞের সূচনা হয় মূলত ১০ ডিসেম্বর থেকে। ওই সময় থেকেই রাতের অন্ধকারে তালিকা অনুযায়ী বুদ্ধিজীবীদের বাসা থেকে ধরে এনে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে প্রথম মিরপুরে নির্মিত হয় শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ। পরে, ১৯৯১ সালে রায়েরবাজারে নতুন একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়, যা ১৯৯৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হয়। প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর শোকের আবহে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়। দেশের সব জায়গায় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। শোকের প্রতীক কালো পতাকা ওড়ে।


প্রিন্ট

নিউজটি শেয়ার করুন

শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট সময় ০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ভোর ৭টার পরে তিনি পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি সম্মান জানান। এরপর কিছুক্ষণ নিরবভাবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এই দিনটি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক গভীর শোকের দিন। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর, বিজয়ের প্রথম সূর্যোদয়কালে, দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হারানোর কষ্টের দিন এটি। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে যখন পুরো দেশ বিজয়ের পথে, ঠিক তখনই দেশের নরঘাতকরা—রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা—উদ্যোগ নেয় বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞের। বিজয়ের শেষ মুহূর্তে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড পুরো জাতিকে আর বিশ্বকে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণের দু’দিন আগে, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতে, ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে প্রায় দেড়শ জন বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীকে চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেদিনের অন্ধকারে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক, সংস্কৃতি কর্মী ও সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের বাড়ি থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে হত্যা করা হয়। পরে তাদের দেহ ছুঁড়ে ফেলা হয় নীরব অন্ধকারে। পরের দিন সকালে মিরপুরের ডোবা-নালা ও রায়েরবাজারের ইটখোলায় অনেক নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। কারো শরীর বুলেটবিদ্ধ, কারো অমানুষিক নির্যাতনের চিহ্ন। হাত পেছনে বাঁধা বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয় অনেককে। স্বাধীনতার সূচনাকালে এই বিভীষিকাময় রাতের কথা শুনে পুরো জাতি শিউরে উঠেছিল। হত্যার আগে তাদের ওপর চালানো নির্যাতনের ভয়াবহতা প্রকাশ পায়। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সংকলনে, সংবাদপত্রে ও আন্তর্জাতিক সাময়িকীতে নিউজ উইকের প্রতিবেদনে জানা যায়, নিহত বুদ্ধিজীবীদের সংখ্যা মোট ১০৭০ জন। এই বুদ্ধিজীবীরা দীর্ঘ মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামে মনন, মেধা ও লেখনীর মাধ্যমে স্বাধীনতার প্রেরণা জুগিয়েছেন। তাঁরা মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। পুরো জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছেন অধিকারের জন্য সংগ্রামে। স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম যেন কিছুতেই মানতে চাননি স্বাধীনতা বিরোধীরা। ১৪ ডিসেম্বরের এই হত্যাযজ্ঞের সূচনা হয় মূলত ১০ ডিসেম্বর থেকে। ওই সময় থেকেই রাতের অন্ধকারে তালিকা অনুযায়ী বুদ্ধিজীবীদের বাসা থেকে ধরে এনে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে প্রথম মিরপুরে নির্মিত হয় শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ। পরে, ১৯৯১ সালে রায়েরবাজারে নতুন একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়, যা ১৯৯৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হয়। প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর শোকের আবহে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়। দেশের সব জায়গায় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। শোকের প্রতীক কালো পতাকা ওড়ে।


প্রিন্ট