, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo ভরা মঞ্চে তরুণীর হিজাব টেনে খুলে বিতর্কে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী Logo ১৪ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৭০ কোটি ডলার Logo জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা Logo হাদিকে গুলি: মূল অভিযুক্ত ফয়সালের ঘনিষ্ঠ সহযোগী গ্রেপ্তার Logo সাংবাদিক আনিস আলমগীরের গ্রেপ্তারে সম্পাদক পরিষদের নিন্দা Logo পঞ্চগড়-১ আসনে মনোনয়নপত্র কিনলেন সারজিস আলম Logo সিইসির সেই বিতর্কিত বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলো ইসি Logo কালই বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ মোবাইল ফোন, নতুন সিদ্ধান্ত সরকারের Logo এমপি প্রার্থী ও রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্সে নতুন নীতিমালা Logo গরুর সঙ্গে অটোরিকশার ধাক্কা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই গ্রামের সংঘর্ষ
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

জানা গেলো সেই গৃহকর্মীর ভয়ংকর অতীত

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৯:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ১০ বার পড়া হয়েছে

রাজধানী মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়েকে হত্যা করার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করার পর বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। তদন্তের মাধ্যমে পুলিশ তার অতীতের অজানা দিকগুলোও জানতে পারেছে। মিন্টো রোডে মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) এসব তথ্য উপস্থাপন করেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) এস এন মো. নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আয়েশা মূলত চুরির জন্যই মোহাম্মদপুরের ঐ বাসায় কাজ নেয়। চুরি ধরা পড়ার পর প্রথমে মা-বাবাকে হত্যা করে। পরে মেয়েটি দেখতে পেয়ে তাকেও হত্যা করা হয়। হত্যার পরে বাসায় চুরি করে স্কুলের পোশাক পরে পালিয়ে যায় আয়েশা। মোহাম্মদপুর থানার সূত্রে জানা যায়, সন্দেহভাজন গৃহকর্মী আয়েশা তিন দিন আগে ওই বাসায় কাজ শুরু করে। কাজের আগে তার নাম, ঠিকানা বা যোগাযোগের কোনো নম্বর ছিল না। পুলিশ nearby এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তার শনাক্তের চেষ্টা করে, কিন্তু মুখ ঢেকে রাখার কারণে তাকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া তার বাসার ঠিকানা কেউ জানতো না।

এক পর্যায়ে, আয়েশার সম্পর্কিত কোনো তথ্য না পেয়ে, গত এক বছরে মোহাম্মদপুর থানায় গৃহকর্মীর চুরির ঘটনাগুলোর বিশ্লেষণে পোড়া দাগ ও জেনেভা ক্যাম্পের আয়েশা নামের এক গৃহকর্মীর সন্ধান পায় পুলিশ। তদন্তে জানা যায়, গত জুলাই মাসে হুমায়ুন রোডের একটি বাসায় চুরির ঘটনায় তার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপর পুলিশ তার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একটি মোবাইল নম্বর পায়। যোগাযোগ করলে জানা যায়, তার মোবাইলটি কার দ্বারা ব্যবহার করা হয়েছিল, সে সঠিকভাবে স্মরণ করতে পারছে না। তবে কিছুদিন আগে তার ফোনে ডিসপ্লে নষ্ট থাকায় রাব্বি নামে তার ছোট ভাইকে ফোন ঠিক করার জন্য দিয়ে রেখেছিল এবং সেই সময়ে সিমটি রাব্বির ফোনে চলছিল। এই সূত্র ধরে রাব্বিকে শনাক্ত করে পুলিশ। পরে জানা যায়, রাব্বির স্ত্রীর নামও আয়েশা, তিনি অন্যের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন।

অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা স্বীকার করেছে যে, ঘটনাটির সঙ্গে সে জড়িত। তার কাছ থেকে আরও জানা যায়, গৃহকর্মে থাকা অবস্থায় তার চুরির অভ্যাস আগেই ছিল। তদন্তে জানা গেছে, এই দুই হত্যাকাণ্ডের কারণ খুঁজতে গিয়ে আয়েশা জানিয়েছে, কাজে আসার দ্বিতীয় দিনই সে বাসা থেকে দুই হাজার টাকা চুরি করে। এ নিয়ে ঝগড়া হলে লায়লা আফরোজ তাকে পুলিশের কাছে দেওয়ার হুমকি দেন। চতুর্থ দিন কাজের সময়, বাসায় একটি সুইচ গিয়ার চাকু নিয়ে আসে আয়েশা। ঘটনার দিন টাকা চুরির জন্য তারা আবারও ঝগড়া করে। এরই মধ্যে, আয়েশা লায়লা আফরোজকে সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। তখন তার মেয়ে নাফিসা তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে তাকেও ছুরিকাঘাত করে। ছুরিকাঘাতের ফলে রক্তক্ষরণে মা ও মেয়ে দুজনেই মারা যায় বলে প্রাথমিক ধারণা।

সুরতহাল প্রতিবেদনে দেখা যায়, লায়লা আফরোজের শরীরে প্রায় ৩০টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে, আর তার মেয়ে নাফিসার শরীরে চারটি ছুরিকাঘাতের দাগ পাওয়া গেছে।


প্রিন্ট

নিউজটি শেয়ার করুন

জানা গেলো সেই গৃহকর্মীর ভয়ংকর অতীত

আপডেট সময় ০৯:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

রাজধানী মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়েকে হত্যা করার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করার পর বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। তদন্তের মাধ্যমে পুলিশ তার অতীতের অজানা দিকগুলোও জানতে পারেছে। মিন্টো রোডে মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) এসব তথ্য উপস্থাপন করেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) এস এন মো. নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আয়েশা মূলত চুরির জন্যই মোহাম্মদপুরের ঐ বাসায় কাজ নেয়। চুরি ধরা পড়ার পর প্রথমে মা-বাবাকে হত্যা করে। পরে মেয়েটি দেখতে পেয়ে তাকেও হত্যা করা হয়। হত্যার পরে বাসায় চুরি করে স্কুলের পোশাক পরে পালিয়ে যায় আয়েশা। মোহাম্মদপুর থানার সূত্রে জানা যায়, সন্দেহভাজন গৃহকর্মী আয়েশা তিন দিন আগে ওই বাসায় কাজ শুরু করে। কাজের আগে তার নাম, ঠিকানা বা যোগাযোগের কোনো নম্বর ছিল না। পুলিশ nearby এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তার শনাক্তের চেষ্টা করে, কিন্তু মুখ ঢেকে রাখার কারণে তাকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া তার বাসার ঠিকানা কেউ জানতো না।

এক পর্যায়ে, আয়েশার সম্পর্কিত কোনো তথ্য না পেয়ে, গত এক বছরে মোহাম্মদপুর থানায় গৃহকর্মীর চুরির ঘটনাগুলোর বিশ্লেষণে পোড়া দাগ ও জেনেভা ক্যাম্পের আয়েশা নামের এক গৃহকর্মীর সন্ধান পায় পুলিশ। তদন্তে জানা যায়, গত জুলাই মাসে হুমায়ুন রোডের একটি বাসায় চুরির ঘটনায় তার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপর পুলিশ তার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একটি মোবাইল নম্বর পায়। যোগাযোগ করলে জানা যায়, তার মোবাইলটি কার দ্বারা ব্যবহার করা হয়েছিল, সে সঠিকভাবে স্মরণ করতে পারছে না। তবে কিছুদিন আগে তার ফোনে ডিসপ্লে নষ্ট থাকায় রাব্বি নামে তার ছোট ভাইকে ফোন ঠিক করার জন্য দিয়ে রেখেছিল এবং সেই সময়ে সিমটি রাব্বির ফোনে চলছিল। এই সূত্র ধরে রাব্বিকে শনাক্ত করে পুলিশ। পরে জানা যায়, রাব্বির স্ত্রীর নামও আয়েশা, তিনি অন্যের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন।

অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা স্বীকার করেছে যে, ঘটনাটির সঙ্গে সে জড়িত। তার কাছ থেকে আরও জানা যায়, গৃহকর্মে থাকা অবস্থায় তার চুরির অভ্যাস আগেই ছিল। তদন্তে জানা গেছে, এই দুই হত্যাকাণ্ডের কারণ খুঁজতে গিয়ে আয়েশা জানিয়েছে, কাজে আসার দ্বিতীয় দিনই সে বাসা থেকে দুই হাজার টাকা চুরি করে। এ নিয়ে ঝগড়া হলে লায়লা আফরোজ তাকে পুলিশের কাছে দেওয়ার হুমকি দেন। চতুর্থ দিন কাজের সময়, বাসায় একটি সুইচ গিয়ার চাকু নিয়ে আসে আয়েশা। ঘটনার দিন টাকা চুরির জন্য তারা আবারও ঝগড়া করে। এরই মধ্যে, আয়েশা লায়লা আফরোজকে সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। তখন তার মেয়ে নাফিসা তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে তাকেও ছুরিকাঘাত করে। ছুরিকাঘাতের ফলে রক্তক্ষরণে মা ও মেয়ে দুজনেই মারা যায় বলে প্রাথমিক ধারণা।

সুরতহাল প্রতিবেদনে দেখা যায়, লায়লা আফরোজের শরীরে প্রায় ৩০টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে, আর তার মেয়ে নাফিসার শরীরে চারটি ছুরিকাঘাতের দাগ পাওয়া গেছে।


প্রিন্ট