অন্তর্বর্তী সরকারের সফলতা বা ব্যর্থতা সম্পর্কে মন্তব্য করতে রাজি নন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সাংবাদিকদের সাথে কথোপকথনে তিনি এ কথা বলেন। উপদেষ্টা বলেন, “আমি দেখতে পাচ্ছি একটি প্রবণতা যে, আপনি কি ব্যর্থ কি না, আপনি কি সফল কি না—এই বিষয়গুলোতে বিচার করতে হবে অন্যভাবে। কারণ, যখন আমরা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন পুরোপুরি ভেঙে পড়া অবস্থায় ছিলাম। সেই ভেঙে পড়া অবস্থা থেকে আবার জোড়া লাগিয়ে রাষ্ট্রকে নতুনভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য। আমরা সেটাই সফলভাবে সম্পন্ন করেছি।” তিনি বলেন, “অতএব, এই সরকারকে ব্যর্থ বা সফল বলে তৎক্ষণাৎ মন্তব্য করা ঠিক হবে না। সরকার তখনই সফল হবে যখন আমরা লক্ষ্য করব যে, এই সরকারের যাত্রার মূল উদ্দেশ্য—সুষ্ঠু নির্বাচন, বিচার-বৃদ্ধি এবং সংস্কার—সেগুলো শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়েছে।” উপদেষ্টা আরও বলেন, “বাংলাদেশের রাজনীতিতে এটিই খুবই দুঃখজনক যে, প্রতিপক্ষকে নিস্তেজ করার জন্য অনেক সময় আমরা যুক্তি বা তর্কের পরিবর্তে হত্যাচেষ্টাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করি। এটি অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং কাপুরুষোচিত। এতে কোনো বীরত্বের পরিচয় নেই।” জনগণের মুখোমুখি হওয়ার সাহস থাকলে তিনি বলেন, “জনগণের সামনে কিভাবে দাঁড়াতে হয়, এটা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য স্পষ্ট। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার এই সংস্কৃতি এখনো আমাদের দেশে চালু রয়েছে, যা আমি নতুন বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য মনে করি না।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা যখন স্বাধীন হয়েছিলাম, তখন থেকেই আমাদের প্রত্যাশা ছিল একটি গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার। প্রত্যাশা ছিল বৈষম্যহীন সমাজের। অনেক বছর পর এখন আবার মনে হচ্ছে, আমরা সেই স্বপ্নগুলো সম্পন্ন করতে পারিনি। পারিনি বলেই তো গণঅভ্যুত্থান এবং বিপ্লবের উদ্ভব ঘটেছে।” উপদেষ্টা বলেন, “ফেব্রুয়ারি মাসে আমাদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, আমরা আশা করছি এই নির্বাচনের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক যাত্রা শুরু হবে। এই সময়ে কেবল নির্বাচনই নয়, একটি গণভোটও অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে জনগণ তাদের মতামত জানাতে পারবে সংস্কার সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে। এখন সেই নির্ভর করে গণতন্ত্রের নতুন পথের সূচনা কবে হবে।”