, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

বাড়লো ট্রেনের ভাড়া

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১৩ ঘন্টা আগে
  • / ৩ বার পড়া হয়েছে

trane

ঢাকা-কক্সবাজারসহ দেশের ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ রুটে ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) থেকে নতুন ভাড়া কার্যকর হয়েছে। গত ১৩ বছরে ট্রেনের ভাড়া সরাসরি বা কৌশলে অন্তত পাঁচবার বৃদ্ধি পেয়েছে। এইবার সরাসরি টিকিটের দাম না বাড়িয়ে ‘পন্টেজ চার্জ’ বা অতিরিক্ত মাশুল ধার্য করে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে আসন ও রুট অনুযায়ী সর্বনিম্ন ৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২২৬ টাকা পর্যন্ত ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে। রেলওয়ের ব্যাখ্যায়, রেলপথে কোনো সেতু বা সমজাতীয় স্থাপনা থাকলে তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে অতিরিক্ত ব্যয় হয়, সেটিই পন্টেজ চার্জ হিসেবে ধার্য করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী, ১০০ মিটার দীর্ঘ সেতুকে দুই কিলোমিটার পথ হিসেবে গণনা করা হয়, ফলে এক কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর দূরত্ব ধরা হয় ২৫ কিলোমিটার। এর ফলে কাগজে-কলমে রুটের দৈর্ঘ্য বেড়ে যায় এবং সেই অনুপাতে ভাড়া বৃদ্ধি পায়। রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-কক্সবাজার, ঢাকা-সিলেট, চট্টগ্রাম-সিলেট, চট্টগ্রাম-জামালপুর ও ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ—এই ছয় রুটের ১১টি সেতুতে পন্টেজ চার্জ আরোপ করা হয়েছে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, রেলরোডের আয় বৃদ্ধি ও ব্যয় কমানোর জন্য ২৫ মে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলামের সভাপতিত্বে এক বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে টিকিটের ভাড়া না বাড়িয়ে কিভাবে রাজস্ব বৃদ্ধি সম্ভব, সে বিষয়ে ১৩টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ১০০ মিটার বা তার বেশি দৈর্ঘ্যের সেতুগুলোর জন্য পন্টেজ চার্জ লাগানো। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, সব রুটে নয়, নির্দিষ্ট কিছু রুটে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। এটি সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবং পুরোনো সেতুগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় মেটানোর জন্য নেওয়া হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের স্নিগ্ধা আসনের ভাড়া ২০১২ সালে ছিল ৫৮৫ টাকা। ২০১৬ সালে তা বেড়ে হয় ৭২৫ টাকা। ২০২৪ সালে রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার হওয়ার পর ভাড়া দাঁড়ায় ৮৫৫ টাকা। নতুন পন্টেজ চার্জ যুক্ত হওয়ার পর এখন যাত্রীদের দিতে হচ্ছে ৯৪৩ টাকা। ঢাকা-কক্সবাজার রুটে চলাচলরত কক্সবাজার ও পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের স্নিগ্ধা আসনের ভাড়া এক হাজার ৩২২ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে এক হাজার ৪৪৯ টাকা। এসি বার্থের ভাড়া ২ হাজার ৪৩০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৫৬ টাকা। এই রুটে সর্বোচ্চ ২২৬ টাকা পর্যন্ত ভাড়া বৃদ্ধির ঘটনা ঘটেছে। ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে ভোক্তা সংগঠনের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি নাজের হোসাইন বলেন, রেল দেশের স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য সবচেয়ে সাশ্রয়ী পরিবহন। বারবার কৌশলে ভাড়া বাড়ানো সাধারণ মানুষের জন্য অতিরিক্ত বোঝা তৈরি করছে। সরকার চাইলে রেলের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা বন্ধ করে রাজস্ব বাড়াতে পারে। এর আগে, ২০১২ সালে এককালে ৫০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছিল। ২০১৬ সালে কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ বাড়ানো হয়। ২০২২ সালে নন-এসি প্রথম শ্রেণির টিকিটে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়। ২০২৪ সালে অতিরিক্ত বগির টিকিটে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির ঘটনা ঘটে। একই বছর মে মাসে দীর্ঘপথে যাত্রীদের জন্য রেয়াতি সুবিধাও বাতিল করা হয়।


প্রিন্ট

নিউজটি শেয়ার করুন

বাড়লো ট্রেনের ভাড়া

আপডেট সময় ১৩ ঘন্টা আগে

ঢাকা-কক্সবাজারসহ দেশের ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ রুটে ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) থেকে নতুন ভাড়া কার্যকর হয়েছে। গত ১৩ বছরে ট্রেনের ভাড়া সরাসরি বা কৌশলে অন্তত পাঁচবার বৃদ্ধি পেয়েছে। এইবার সরাসরি টিকিটের দাম না বাড়িয়ে ‘পন্টেজ চার্জ’ বা অতিরিক্ত মাশুল ধার্য করে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে আসন ও রুট অনুযায়ী সর্বনিম্ন ৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২২৬ টাকা পর্যন্ত ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে। রেলওয়ের ব্যাখ্যায়, রেলপথে কোনো সেতু বা সমজাতীয় স্থাপনা থাকলে তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে অতিরিক্ত ব্যয় হয়, সেটিই পন্টেজ চার্জ হিসেবে ধার্য করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী, ১০০ মিটার দীর্ঘ সেতুকে দুই কিলোমিটার পথ হিসেবে গণনা করা হয়, ফলে এক কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর দূরত্ব ধরা হয় ২৫ কিলোমিটার। এর ফলে কাগজে-কলমে রুটের দৈর্ঘ্য বেড়ে যায় এবং সেই অনুপাতে ভাড়া বৃদ্ধি পায়। রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-কক্সবাজার, ঢাকা-সিলেট, চট্টগ্রাম-সিলেট, চট্টগ্রাম-জামালপুর ও ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ—এই ছয় রুটের ১১টি সেতুতে পন্টেজ চার্জ আরোপ করা হয়েছে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, রেলরোডের আয় বৃদ্ধি ও ব্যয় কমানোর জন্য ২৫ মে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলামের সভাপতিত্বে এক বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে টিকিটের ভাড়া না বাড়িয়ে কিভাবে রাজস্ব বৃদ্ধি সম্ভব, সে বিষয়ে ১৩টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ১০০ মিটার বা তার বেশি দৈর্ঘ্যের সেতুগুলোর জন্য পন্টেজ চার্জ লাগানো। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, সব রুটে নয়, নির্দিষ্ট কিছু রুটে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। এটি সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবং পুরোনো সেতুগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় মেটানোর জন্য নেওয়া হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের স্নিগ্ধা আসনের ভাড়া ২০১২ সালে ছিল ৫৮৫ টাকা। ২০১৬ সালে তা বেড়ে হয় ৭২৫ টাকা। ২০২৪ সালে রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার হওয়ার পর ভাড়া দাঁড়ায় ৮৫৫ টাকা। নতুন পন্টেজ চার্জ যুক্ত হওয়ার পর এখন যাত্রীদের দিতে হচ্ছে ৯৪৩ টাকা। ঢাকা-কক্সবাজার রুটে চলাচলরত কক্সবাজার ও পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের স্নিগ্ধা আসনের ভাড়া এক হাজার ৩২২ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে এক হাজার ৪৪৯ টাকা। এসি বার্থের ভাড়া ২ হাজার ৪৩০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৫৬ টাকা। এই রুটে সর্বোচ্চ ২২৬ টাকা পর্যন্ত ভাড়া বৃদ্ধির ঘটনা ঘটেছে। ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে ভোক্তা সংগঠনের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি নাজের হোসাইন বলেন, রেল দেশের স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য সবচেয়ে সাশ্রয়ী পরিবহন। বারবার কৌশলে ভাড়া বাড়ানো সাধারণ মানুষের জন্য অতিরিক্ত বোঝা তৈরি করছে। সরকার চাইলে রেলের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা বন্ধ করে রাজস্ব বাড়াতে পারে। এর আগে, ২০১২ সালে এককালে ৫০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছিল। ২০১৬ সালে কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ বাড়ানো হয়। ২০২২ সালে নন-এসি প্রথম শ্রেণির টিকিটে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়। ২০২৪ সালে অতিরিক্ত বগির টিকিটে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির ঘটনা ঘটে। একই বছর মে মাসে দীর্ঘপথে যাত্রীদের জন্য রেয়াতি সুবিধাও বাতিল করা হয়।


প্রিন্ট