, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

আধুনিক ও গণমুখী বাংলাদেশ গড়ে তোলা বিএনপির লক্ষ্য: তারেক রহমান

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১৬ বার পড়া হয়েছে

বিএনপি একটি আধুনিক ও গণমনোভাবাপন্ন বাংলাদেশ গঠনের উদ্দেশ্যে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে তিনি এক ফেসবুক পোস্টে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। পোস্টটি পাঠকদের জন্য উল্লেখযোগ্য হলো- ‘যখন কোনো তরুণী মা পর্যাপ্ত শিশু সেবার সুবিধা না পেয়ে চাকরি থেকে অবসর নেন, কিংবা কোনো ছাত্রী পড়াশোনায় মনোযোগ হারান, তখন কী ঘটে? বাংলাদেশ সম্ভাবনা, উৎপাদনশীলতা ও অগ্রগতি থেকে পিছিয়ে পড়ে। বিএনপির মূল লক্ষ্য সহজ: এমন একটি আধুনিক, গণমুখী বাংলাদেশ গড়া— যেখানে নারীদের তাদের পরিবার ও ভবিষ্যতের মধ্যে কোনও একটিকে বেছে নিতে হয় না। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২৪ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, পুরুষের তুলনায় নারীদের শ্রমবাজারে অংশগ্রহণের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কম: মোট পুরুষের ৮০ শতাংশের বিপরীতে মাত্র ৪৩ শতাংশ নারী কাজের সাথে যুক্ত। এই পার্থক্য আমাদের সতর্ক করছে যে, আমরা আমাদের জাতির অর্ধেকেরও বেশি মেধা ও দক্ষতাকে পিছনে ফেলছি। এই কারণেই বিএনপি সারাদেশে এমন উদ্যোগ নেওয়ার কথা ভাবছে, যাতে শিশুর যত্ন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অংশ হয়। আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে:- • সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডে-কেয়ার সেন্টার খোলা; • সরকারি দপ্তরগুলোতে ধাপে ধাপে ডে-কেয়ার কেন্দ্রের জন্য জাতীয় পরিকল্পনা সৃষ্টি; • বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও কারখানায় বাধ্যতামূলক ডে-কেয়ার ব্যবস্থা চালু; • যারা শিশুদের যত্নের জন্য নিয়োগদান করবেন তাদের জন্য কর ছাড় ও সিএসআর (সিএসআর) ক্রেডিটের সুবিধা; এবং • নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মান অনুযায়ী কেয়ারগিভারদের প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেশন প্রদান। এই পরিবর্তন নারীদের কাজের সুযোগ বাড়াতে, পরিবারের আয় বৃদ্ধি করতে, মধ্যবিত্ত শ্রেণির আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এবং আমাদের জিডিপিতে ১ শতাংশ পর্যন্ত যোগ দিতে পারে। যেহেতু তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকের দুই-তৃতীয়াংশ নারী, তাই কর্মজীবী নারীর অবদানকে অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়। ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গবেষণায় দেখা গেছে— যেখানে শিশু দেখানোর সুবিধা রয়েছে, সেখানে শ্রমিক ধরে রাখার হার বেশি, অনুপস্থিতি কম, এবং প্রতিষ্ঠানগুলো এক বছরের মধ্যে খরচের পরিমাণ উঠে আসে। শিশু সেবা দেওয়া কোনো দয়া বা অনুকম্পা নয়, এটি সামাজিক-অর্থনৈতিক অবকাঠামোর অপরিহার্য অংশ। যেমন সড়ক বাজারের সংযোগ তৈরি করে, তেমনি ডে-কেয়ার সেন্টার নারীদের কর্মজীবনে সফলভাবে যুক্ত করে। আমাদের লক্ষ্য স্পষ্ট: ২০৩৪ সালের মধ্যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ট্রিলিয়ন-ডলারের অর্থনীতি গড়ে তোলা, যা লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে— যেখানে প্রতিটি নাগরিক, বিশেষ করে নারী, গর্বের সঙ্গে দেশের প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে। আমরা এমন কোন পশ্চাৎমুখী ভাবনা প্রত্যাখ্যান করি যা নারীর সম্ভাবনাকে সীমিত করে। শিশু দেখভাল, সমান মজুরি ও কর্মস্থলে নিরাপত্তার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন শুধু ন্যায়সঙ্গত নয়, এটি বুদ্ধিবৃত্তিক অর্থনীতির শেকড়। আসুন, আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ি— যেখানে প্রতিটি কর্মজীবী মা ও প্রতিটি ছাত্রী নিজের সফলতার স্বাধীনতা পায়, এবং যেখানে সমাজের যত্ন ও সহযোগিতা উন্নতির মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।


প্রিন্ট
ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

আধুনিক ও গণমুখী বাংলাদেশ গড়ে তোলা বিএনপির লক্ষ্য: তারেক রহমান

আপডেট সময় ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫

বিএনপি একটি আধুনিক ও গণমনোভাবাপন্ন বাংলাদেশ গঠনের উদ্দেশ্যে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে তিনি এক ফেসবুক পোস্টে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। পোস্টটি পাঠকদের জন্য উল্লেখযোগ্য হলো- ‘যখন কোনো তরুণী মা পর্যাপ্ত শিশু সেবার সুবিধা না পেয়ে চাকরি থেকে অবসর নেন, কিংবা কোনো ছাত্রী পড়াশোনায় মনোযোগ হারান, তখন কী ঘটে? বাংলাদেশ সম্ভাবনা, উৎপাদনশীলতা ও অগ্রগতি থেকে পিছিয়ে পড়ে। বিএনপির মূল লক্ষ্য সহজ: এমন একটি আধুনিক, গণমুখী বাংলাদেশ গড়া— যেখানে নারীদের তাদের পরিবার ও ভবিষ্যতের মধ্যে কোনও একটিকে বেছে নিতে হয় না। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২৪ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, পুরুষের তুলনায় নারীদের শ্রমবাজারে অংশগ্রহণের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কম: মোট পুরুষের ৮০ শতাংশের বিপরীতে মাত্র ৪৩ শতাংশ নারী কাজের সাথে যুক্ত। এই পার্থক্য আমাদের সতর্ক করছে যে, আমরা আমাদের জাতির অর্ধেকেরও বেশি মেধা ও দক্ষতাকে পিছনে ফেলছি। এই কারণেই বিএনপি সারাদেশে এমন উদ্যোগ নেওয়ার কথা ভাবছে, যাতে শিশুর যত্ন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অংশ হয়। আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে:- • সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডে-কেয়ার সেন্টার খোলা; • সরকারি দপ্তরগুলোতে ধাপে ধাপে ডে-কেয়ার কেন্দ্রের জন্য জাতীয় পরিকল্পনা সৃষ্টি; • বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও কারখানায় বাধ্যতামূলক ডে-কেয়ার ব্যবস্থা চালু; • যারা শিশুদের যত্নের জন্য নিয়োগদান করবেন তাদের জন্য কর ছাড় ও সিএসআর (সিএসআর) ক্রেডিটের সুবিধা; এবং • নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মান অনুযায়ী কেয়ারগিভারদের প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেশন প্রদান। এই পরিবর্তন নারীদের কাজের সুযোগ বাড়াতে, পরিবারের আয় বৃদ্ধি করতে, মধ্যবিত্ত শ্রেণির আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এবং আমাদের জিডিপিতে ১ শতাংশ পর্যন্ত যোগ দিতে পারে। যেহেতু তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকের দুই-তৃতীয়াংশ নারী, তাই কর্মজীবী নারীর অবদানকে অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়। ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গবেষণায় দেখা গেছে— যেখানে শিশু দেখানোর সুবিধা রয়েছে, সেখানে শ্রমিক ধরে রাখার হার বেশি, অনুপস্থিতি কম, এবং প্রতিষ্ঠানগুলো এক বছরের মধ্যে খরচের পরিমাণ উঠে আসে। শিশু সেবা দেওয়া কোনো দয়া বা অনুকম্পা নয়, এটি সামাজিক-অর্থনৈতিক অবকাঠামোর অপরিহার্য অংশ। যেমন সড়ক বাজারের সংযোগ তৈরি করে, তেমনি ডে-কেয়ার সেন্টার নারীদের কর্মজীবনে সফলভাবে যুক্ত করে। আমাদের লক্ষ্য স্পষ্ট: ২০৩৪ সালের মধ্যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ট্রিলিয়ন-ডলারের অর্থনীতি গড়ে তোলা, যা লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে— যেখানে প্রতিটি নাগরিক, বিশেষ করে নারী, গর্বের সঙ্গে দেশের প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে। আমরা এমন কোন পশ্চাৎমুখী ভাবনা প্রত্যাখ্যান করি যা নারীর সম্ভাবনাকে সীমিত করে। শিশু দেখভাল, সমান মজুরি ও কর্মস্থলে নিরাপত্তার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন শুধু ন্যায়সঙ্গত নয়, এটি বুদ্ধিবৃত্তিক অর্থনীতির শেকড়। আসুন, আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ি— যেখানে প্রতিটি কর্মজীবী মা ও প্রতিটি ছাত্রী নিজের সফলতার স্বাধীনতা পায়, এবং যেখানে সমাজের যত্ন ও সহযোগিতা উন্নতির মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।


প্রিন্ট