নির্বাচন কমিশনের বিভাজন নিয়ে মন্তব্য করেছেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ। শনিবার (১ নভেম্বর) বরগুনা জেলায় এনসিপির দলীয় কার্যক্রমের গতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য আয়োজিত সমন্বয় সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, নির্বাচন কমিশনের ব্যক্তিস্বাধীন সিদ্ধান্তগুলো দেখেছি, যা স্বেচ্ছাচারী। নির্বাচন কমিশনের মার্কা সংযুক্তি বা না করার ব্যাপারটি গোঁয়ার্তুমি, গোঁরামি ও মধ্যযুগীয় নিয়ন্ত্রণের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। এ সময় তিনি নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন এবং আসন্ন সংসদ নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ হওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশন তার অবস্থান পরিবর্তন করেছে স্বেচ্ছাচারীভাবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তালবাহানা করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ ছাড়া, তিনি বলেন, এনসিপিকে শপথ প্রতীক না দিলে নির্বাচন কমিশনকে ব্যাখ্যা দিতে হবে। হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কারের পক্ষে-বিপক্ষে দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। যারা বিপক্ষে রয়েছেন, তারা সংস্কার থেকে দূরে চলে গেছেন, আর যারা পক্ষে রয়েছেন, তারা কাছাকাছি অবস্থানে। তাই যারা সংস্কারের পক্ষে থাকবেন, তাদের সঙ্গে আমরা জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে চাই। বিএনপিকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদ না দেখেই বিএনপি স্বাক্ষর করেছিল। আমরা তখন স্বাক্ষর করিনি, এ জন্য আমাদের দায়ী করা হয়েছিল। এখন তারাই আমাদের স্থানে এসে দাঁড়িয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা দেখার জন্য আমরা আগেই দাবি করেছিলাম, তবে সেখানে বিএনপি বিরোধিতা করেছে।’ হাসনাত বলেন, ‘শেখ হাসিনার শাসনামলে নির্বাচন কমিশন জবাবদিহি ছাড়াই চলে আসছে। ৫ আগস্টের পরে জবাবদিহি বাধ্যতামূলক হবে।’ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, জামায়াত ইসলামী দল এটি আমার জানা নেই। নিজ দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হলো কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী দলীয় কার্যক্রম আরও ত্বরান্বিত করা। সংগঠনকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী করতে আমরা কাজ করছি। বরগুনা জেলা এনসিপি বর্তমানে একযোগে কাজ করছে। আহ্বায়ক কমিটির জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিতে সারাদেশে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বরগুনায় সমন্বয় সভার আয়োজন করা হয়েছে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এনসিপির বরগুনা জেলা কমিটি ঘোষণা হতে পারে বলে তিনি জানান। সভায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা অংশ নিয়ে দলীয় পরিকল্পনা, অগ্রগতি, সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালীকরণ, ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কর্মসূচি ও কেন্দ্রীয় নির্দেশনা বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনা করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির বরিশাল বিভাগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাংগঠনিক সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন, এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব ও শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক ফয়সল মাহমুদ শান্ত প্রমুখ।